E-Paper

চিনে বিশ্ব স্কুল ভলিবলে বাংলার চার কন্যা

গত বছর জাতীয় স্কুল গেমসে অনূর্ধ্ব ১৪ ছাত্রীদের ভলিবলে বাংলা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:২২
(বাঁ দিক থেকে) অভিষিক্তা, সারন্যা, রূপকথা, সহেলী।

(বাঁ দিক থেকে) অভিষিক্তা, সারন্যা, রূপকথা, সহেলী। নিজস্ব চিত্র।

আন্তর্জাতিক স্কুল স্পোর্টস ফেডারেশনের (আইএসএসএফ) পরিচালনায় অনূর্ধ্ব ১৫ মেয়েদের বিশ্ব স্কুল ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ কাল, বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে চিনের শাংলুওতে। তাতে যোগ দিচ্ছে ভারত। ১৪ জনের জাতীয় দলে রয়েছে বাংলার চার ‘কন্যাশ্রী’— হুগলির রূপকথা ঘোষ ও সহেলী সামন্ত, উত্তর ২৪ পরগনার অভিষিক্তা পাল এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার সারন্যা ঘোষ।

রূপকথা চুঁচুড়ার ঘুটিয়াবাজার বিনোদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। সারন্যার ক্লাসও একই। সে ডায়মন্ড হারবার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পড়ে। অষ্টম শ্রেণির সহেলী তারকেশ্বরের ভঞ্জিপুর দেশবন্ধু বিদ্যানিকেতনের (উচ্চ) পড়ুয়া। কলকাতার হোলি চাইল্ড ইনস্টিটিউটের ছাত্রী অভিষিক্তা পড়ে নবম শ্রেণিতে।

গত বছর জাতীয় স্কুল গেমসে অনূর্ধ্ব ১৪ ছাত্রীদের ভলিবলে বাংলা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ওই দলের ছ’জন (সহেলিরা ছাড়া বাকি দু’জন উত্তর ২৪ পরগনার আদ্রিকা দাস এহং হুগলির পূজা রাজবংশী) বিশ্ব স্কুল ভলিবলের প্রাথমিক দলে সুযোগ পেয়েছিল। ২৪ অক্টোবর থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত রাঁচীতে আবাসিক শিবিরে চূড়ান্ত ১৪ জনের দল বাছাই হয়। রাজ্যের ভিত্তিতে বাংলার খেলোয়াড়ই সংখ্যাগরিষ্ঠ। আজ, বুধবার রাঁচী থেকে ভারতীয় দল বিমানে দিল্লি উড়ে যাবে। সেখান থেকে সন্ধ্যায় সাংহাইগামী বিমান ধরবে।

তারকেশ্বরের ভঞ্জিপুরের সহেলীর বাবা সঞ্জয় সামন্ত চাষাবাদ করেন। বরাহনগরের বাসিন্দা অভিষিক্তার বাবা অভিষেক পালের কাঁসা-পিতলের দোকান রয়েছে। রূপকথার বাবা ভাস্কর ঘোষ ছোট বেসরকারি সংস্থার কর্মী। সারন্যার বাবা লক্ষ্মণ ঘোষ বিমা সংস্থার এজেন্ট। অভিভাবকেরা চান, মেয়েদের পড়াও যাতে সমান তালে এগোতে পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় সরকারি সহায়তা। দিনে বেশ কয়েক ঘণ্টা অনুশীলন করতে হয়। জাতীয় শিবিরের সময় পড়ার সুযোগ কার্যত মেলেনি বলে তাঁরা জানান।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকের অভিমত, বর্তমান আন্তর্জাতিক শিক্ষাধারায় সামগ্রিক বিকাশের দৃষ্টিভঙ্গিতে উদীয়মান ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণে রাজ্যে স্কুল ক্রীড়া নীতি কার্যকর করা দরকার। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় যোগদানের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিকল্প পরীক্ষার সংস্থান রাখা উচিত সিবিএসই-র মতো। এ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় এই সুবিধা না থাকায় অস্ট্রেলিয়া সফর ও মহিলা বিশ্বকাপের জন্য ক্রিকেটার রিচা ঘোষ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারেননি।

স্কুল ক্রীড়া প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত এক শিক্ষক মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০১৭ সালে ‘খেল সম্মাননা’ অনুষ্ঠানে স্কুল ক্রীড়ার সার্বিক পরিকাঠামোর উন্নয়নের কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে বিদ্যালয় স্তরে নানা খেলায় বাংলা এগিয়েছে। নানা খেলায় সুযোগ-সুবিধাও বেড়েছে। জাতীয় স্কুল গেমসের র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলা সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। ভলিবল, টেবিল টেনিস, ভারোত্তোলন, যোগাসন ইত্যাদিতে ভাল ফল হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘স্কুলের ক্রীড়ানীতি বাস্তবায়িত হলে বাংলার ছাত্রছাত্রীরা সুফল পাবে। ধারাবাহিক সাফল্য আসবে।’’

রাজ্যের স্কুল ক্রীড়া মহলের চোখ এখন চিনে। তারা চায়, চ্যাম্পিয়ন হোক ভারত। বিদেশের মাটিতে কৃতিত্বের ছাপ রেখে আসুক বঙ্গের চার কন্যা।

(বাঁ দিক থেকে) অভিষিক্তা, সারন্যা, রূপকথা, সহেলী। নিজস্ব চিত্র

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Chinsurah

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy