Advertisement
২৮ মার্চ ২০২৩
Violinist

Covid-19: করোনায় থমকে গিয়েছে জীবনের সুর, ফল বিক্রিই এখন পেশা বেহালাবাদক শ্যামলের

হুগলির বাসিন্দা শ্যামল কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা এমনকি, অসম, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে নানা অনুষ্ঠানে বেহালা বাজিয়েছেন।

একা ঘরে বেহালায় মগ্ন শ্যামল।

একা ঘরে বেহালায় মগ্ন শ্যামল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হুগলি শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২১ ২১:৩১
Share: Save:

কোনও বিপর্যয়েই না কি থেমে থাকে না শিল্প। কিন্তু সঙ্কট যদি ঘনিয়ে আসে শিল্পীর ঘরেই? অতিমারির আবহে এমনই সঙ্কটে বেহালা বাদক শ্যামল অধিকারীর জীবন ও জীবিকা।

Advertisement

হুগলির বাসিন্দা শ্যামল কলকাতা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, মেদিনীপুর-সহ বিভিন্ন জেলা এমনকি, অসম, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে নানা অনুষ্ঠানে বেহালা বাজিয়েছেন। দু’বছর আগেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাজিয়ে এসেছেন চুটিয়ে। কিন্তু কোভিড অতিমারি তাকে কঠিন বাস্তবের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। অনুষ্ঠানের বায়না বন্ধ। এ দিকে বাড়িতে স্ত্রী গৌরী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে চার জনের সংসার। ছেলে শুভ্র ক্লাস এইটে পড়ে। মেয়ে প্রিয়াঙ্কা মগরা বাগাটি কলেজে স্নাতক স্তরের ছাত্রী। সংসার খরচ, ছেলে-মেয়ের পড়াশুনোর খরচ, আর পেরে উঠছেন না শ্যামল।

জমানো টাকা যা ছিল তা দিয়ে বাড়ি তৈরি শুরু করেছিলেন। সেই বাড়ি এখনো শেষ করতে পারেননি। বাড়ি করতে গিয়ে কিছুটা ঋণও হয়ে গেছে। ইটের গাঁথনি আর ছাদটাই হয়েছে। এমন অবস্থায় লকডাউন আর তার পরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এলোমেলো করে দিয়েছে জীবনের সুর।

ছেলেবেলা থেকেই গানবাজনার শখ ছিলো বড় হয়ে সেই শখকেই পেশা করে নিয়েছিলেন শ্যামল। প্রথমে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান করতেন। পরে একতারা এবং সব শেষে বেহালা বাজানো শেখেন। বেহালা বাজানোকেই পেশা হিসাবে বেছে নেন। শ্যামলের কথায়, ‘‘যে কোনও কাজের মধ্যেই সন্তুষ্টির একটা ব্যাপার থাকে, যা বেহালা বাজিয়ে পেয়েছিলাম।’’ যেটা পছন্দের জিনিস, সেটা থেকেই সংসার চলেছে।

Advertisement

হঠাৎ যেন বেহালার তার ছিঁড়ে গেল করোনাভাইরাসের আঘাতে। রোজগারের সব পথ বন্ধ হয়ে গেল। কিন্তু স্বভাব-শিল্পী শ্যামলের আত্মসম্মান প্রবল। কারও কাছে হাত পাতলে চলবে না। তাই কলা বিক্রি করা শুরু করলেন। সপ্তগ্রাম রেলগেট থেকে কাঁচা কাঁঠালি কলা কিনে নিয়ে এসে পাকিয়ে হুগলি স্টেশন রোড কৃষ্ণপুর বাজারে রাস্তার ধারে শুরু হল ব্যবসা। এখনও তা-ই চলছে। কখনও সঙ্গে থাকছে অন্য ফলও। করোনা অতিমারি তাঁকে নতুন লড়াই করতে শেখাল। শ্যামল শিল্পী ভাতা তিনি পাননি কোনোদিন। এই সময় যেন খুব বেশি করে প্রয়োজন হয়ে পড়েছে সরকারি সেই সাহায্য।

কিন্তু নিয়ম করে বেহালা অনুশীলন করে চলেছেন শ্যামল। তাঁর আশা, করোনার ‘চোখরাঙানি’ থেমে যাবে এক দিন। সে দিন আবার ভরা জলসায় সুর তুলবে তাঁর হাতের বেহালা আর ছড়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.