Advertisement
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বাঁধ না ভাঙলেও জলমগ্ন খেত, ভাঙল সাঁকো
Damodar RIver Danger Level

বিপদসীমার উপরে জল

সোমবার সকালে খানাকুল ২ ব্লকের শাবলসিংহপুরের আজগুবিতলায় মুণ্ডেশ্বরীতে কাঠের সাঁকো ভেঙে যায়। ফলে হাওড়ার সঙ্গে খানাকুল সহ আরামবাগ মহকুমার একাংশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

মায়াপুর-গড়েরঘাট পিচ রাস্তা টপকে জল বইছে। সোমবার বিকেলে খানাকুলের জগদীশতলায়।

মায়াপুর-গড়েরঘাট পিচ রাস্তা টপকে জল বইছে। সোমবার বিকেলে খানাকুলের জগদীশতলায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৪ ১০:১৪
Share: Save:

ডিভিসির ছাড়া জলের কারণে সোমবার বিকেলেই হুগলির আরামবাগ মহকুমায় দামোদর নদ এবং তার শাখা মুণ্ডেশ্বরী নদী চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে। বিকেল পর্যন্ত কোথাও বাঁধ ভাঙেনি। তবে, দুই নদ-নদীর বাঁধ এবং নিচু পার উপচে মাঠঘাট
জলমগ্ন হয়েছে।

সন্ধ্যায় মহকুমাশাসক সুভাষিণী ই বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত খানাকুল ১ ও ২ এবং পুরশুড়া ব্লক মিলিয়ে সাড়ে ৮শো জনকে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। ১০টি ত্রাণকেন্দ্র চলছে।’’ এ দিন ত্রাণকেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য। সেখানে আশ্রয় নেওয়া মানুষজনকে পোশাক সহ নানা ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হয়। জেলাশাসকের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সাংসদ মিতালি বাগ, জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়।

মহকুমা সেচ দফতরের চাঁপাডাঙা বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁপাডাঙায় দামোদরের চরম বিপদসীমা ১৩.৫০ মিটার। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ সেখানে জল বইছে ১৩.৮০ মিটার উচ্চতায়। হরিণখোলায় মুণ্ডেশ্বরীর চরম বিপদসীমা ১৩.৪১ মিটার। সেখানে জল বইছে ১৩.৪৫ মিটার উচ্চতায়। দফতরের মহকুমা আধিকারিক কার্তিক দাস বলেন, ‘‘ডিভিসি গতকাল (রবিবার) যে ১ লক্ষ ২৯ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছিল, সেই জলই এখন বইছে। আজ (সোমবার) সকালে জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে ১ লক্ষ কিউসেক করা হয়েছে। এর ফলে নদীতে জল ক্রমশ কমবে।’’

সোমবার সকালে খানাকুল ২ ব্লকের শাবলসিংহপুরের আজগুবিতলায় মুণ্ডেশ্বরীতে কাঠের সাঁকো ভেঙে যায়। ফলে হাওড়ার সঙ্গে খানাকুল সহ আরামবাগ মহকুমার একাংশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এ দিন থেকে ফেরিঘাটগুলি বন্ধ করে দেওয়ায় সাঁকোটি ভাঙার আগে যাঁরা নদী পেরিয়েছিলেন, তাঁরা সমস্যায় পড়েন। পরে খানাকুল ২ ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশ-প্রশাসনের তদারকিতে তাঁদের নৌকোয় ফেরানোর ব্যবস্থা
করা হয়।

সেচ দফতরের কর্তারা মনে করছেন, প্লাবনের নিরিখে এ বার আরামবাগ মহকুমা অনেকটাই নিরাপদে থাকবে। কারণ হিসাবে তাঁরা বলছেন, পলি তোলায় মুণ্ডেশ্বরীর নাব্যতা প্রায় ৮ ফুট বেড়েছে। ফলে ডিভিসির ছাড়া জলের প্রায় ৬০ শতাংশ চলে যাবে বর্ধমানের বেগুয়ার কাছে দামোদর থেকে ভাগ হওয়া মুণ্ডেশ্বরী দিয়ে। বাকি ৪০ শতাংশ দামোদর দিয়ে বয়ে নীচে রূপনারায়ণ নদে পড়বে।

তবে বন্যার আশঙ্কা থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে পারেননি সাধারণ মানুষ। গ্রাম জলবন্দি না হলেও ইতিমধ্যেই দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরীর বাঁধ এবং পার ছাপিয়ে চাষের খেত জলমগ্ন হয়েছে পুরশুড়ার ডিহিবাতপুর, শ্রীরামপুর, এবং পুরশুড়া ১ পঞ্চায়েত এলাকায়। আরামবাগ ব্লকের মলয়পুর ১ ও ২ এবং হরিণখোলা ১ ও ২ পঞ্চায়েতেও এক অবস্থা। খানাকুলের দু’টি ব্লকের ২৪টি পঞ্চায়েতেই মাঠঘাট ডুবে রয়েছে। জলের স্তর ক্রমে বাড়ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের উপ অধিকর্তা রূপম বড়ুয়া জানান, এ দিন খানাকুলের দু’টি ব্লকে ৫ মেট্রিক টন গবাদি পশুর খাবার পাঠনো হচ্ছে। আনাজ সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে কিনা, তা যাচাই করতে বাজারে ঘুরেছেন পুলিশ এবং কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arambagh dvc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE