E-Paper

গালার লোভে বন্ধুকে খুন, দাবি পুলিশের

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, লক্ষ্মীকান্তের গাড়িতে জিপিএস ছিল। সেই প্রযুক্তির সূত্রে পরিজনেরা জানতে পারেন, গাড়িটি বাঁকুড়ার কোতুলপুর থানায় রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৬
নিহত লক্ষ্মীকান্ত লোহার। নিজস্ব চিত্র

নিহত লক্ষ্মীকান্ত লোহার। নিজস্ব চিত্র

ট্রাকে থাকা লক্ষাধিক টাকার গালা চুরি করতেই পরিকল্পনা করে পুরুলিয়ার চালক লক্ষ্মীকান্ত লোহারকে (২৮) খুন করা হয়েছে। খুন ও চোরাই গালা কেনার অভিযোগে পুরুলিয়ার পাঁচ জনকে গ্রেফতারের পরে তদন্তে এমনই জানা গিয়েছে বলে দাবি করল হুগলির গোঘাট থানার পুলিশ। গত সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে গোঘাট থানার ভাদুর পঞ্চায়েতের বেলি এলাকায়, আরামবাগ-বিষ্ণুপুর রাজ্য সড়কের পাশে।

পুলিশ জানিয়েছে, নিহত লক্ষ্মীকান্তের বাড়ি পুরুলিয়ার বলরামপুর থানার চুটকিডি গ্রামে। শনিবার সন্ধ্যায় তিনি প্রায় ১০০ বস্তা গালা নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে পৌঁছতে যাচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুই বন্ধু প্রকাশ জয়সওয়াল ও শ্রবণ কালিন্দী। পরে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। তদন্তে নেমে গোঘাট থানার পুলিশ বৃহস্পতিবার বলরামপুর থানার পুলিশের সহযোগিতায় পুরুলিয়া থেকে শ্রবণ কালিন্দী এবং বলরামপুর থেকে প্রকাশ জয়সওয়াল, মাধব কুমার, মতিলাল কুমার ও আরিফ হাসমিন নামে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের সকলের বাড়ি বলরামপুরে। শুক্রবার ধৃতদের আরামবাগ আদালতে তোলা হলে প্রকাশ ও শ্রবণের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত এবং বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হয়।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, লক্ষ্মীকান্তের গাড়িতে জিপিএস ছিল। সেই প্রযুক্তির সূত্রে পরিজনেরা জানতে পারেন, গাড়িটি বাঁকুড়ার কোতুলপুর থানায় রয়েছে। রবিবার সেখানে পরিজনেরা গিয়ে জানতে পারেন, কোতুলপুরের মির্জাপুর থেকে পুলিশ গাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে। গাড়িতে ৪২ বস্তা গালা ছিল না। গাড়ির ভিতরে রক্তের দাগ দেখে সন্দেহ হয়। জিপিএসে জানা যায়, গাড়িটি গোঘাট থানা এলাকায় গিয়েছিল। গোঘাট থানার পুলিশ ও কোতুলপুর থানার পুলিশ চালকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। পরে দেহ উদ্ধার হয়। মঙ্গলবার দেহ শনাক্ত করেন লক্ষ্মীকান্তের পরিজনেরা। সে দিনই গোঘাট থানায় লক্ষ্মীকান্তকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন পরিজনেরা।

তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, প্রকাশ, শ্রবণ ও মাধব লক্ষ্মীকান্তের বন্ধু। ওই তিন জনে লক্ষ্মীকান্তকে খুন করে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা মূল্যের গালা বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছিল। সেই মতো গাড়িতে থাকা প্রকাশ ও শ্রবণ পিছন থেকে লক্ষ্মীকান্তের গলায় তারের ফাঁস লাগিয়ে খুন করে। মৃত্যু সুনিশ্চিত করতে তাঁর মাথায় রডের বাড়ি মারা হয়। দেহ গাড়ির আসনের তলায় লুকিয়ে গোঘাটে নিরিবিলি জায়গা দেখে ঝোপের মধ্যে ফেলে দিয়ে কোতুলপুরে ফিরে যায় তারা। সেখানে অন্য একটি গাড়ি নিয়ে আসে মাধব। সেই গাড়িতেই ৪২ বস্তা গালা তুলে তারা পুরুলিয়ায় পালায়। সেগুলি বিক্রি করে মতিলাল কুমার ও আরিফ হাসমিনকে। সেখান থেকে ২১ বস্তা গালা পুলিশ উদ্ধার করেছে।

নিহতের মা জ্যোৎস্না লোহার বলেন, ‘‘ছেলের সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল না। ওই ছিল পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। সদ্য ছেলের বিয়ে হয়েছে। সব শেষ হয়ে গেল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Goghat purulia

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy