Advertisement
০৬ মে ২০২৪
15th Pay Commission

ফেব্রুয়ারির মধ্যে টাকা খরচ নিয়ে তৈরি সংশয়

পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের হাতে থাকা বরাদ্দের প্রায় অর্ধেকই খরচ হয়নি। এ দিকে, রাজ্য অর্থ কমিশন নতুন করে দু’হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। গ্রাম বাংলার বিভিন্ন পরিকাঠামো তৈরির জন্য ফেব্রুয়ারির মধ্যে পরিকল্পনা তৈরি করে বরাত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কোন খাতে কী ভাবে দ্রুত এই টাকা খরচের কথা ভাবছে দুই জেলা, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখল আনন্দবাজার।  

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

সীমান্ত মৈত্র   , প্রসেনজিৎ সাহা
শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:১৪
Share: Save:

কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ ও রাজ্য অর্থ কমিশনের প্রাথমিক বরাদ্দ হিসেবে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা রয়েছে রাজ্যের হাতে। রাজ্য সরকারের নির্দেশ, সেই বরাদ্দে যাবতীয় কাজের পরিকল্পনা, দরপত্র ডেকে ঠিকাদার নির্বাচন করে কাজের বরাত দেওয়ার কাজ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই শেষ করে ফেলতে হবে জেলা প্রশাসনগুলিকে।

প্রশ্ন উঠছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের হাতে থাকা বরাদ্দের যে অর্ধেক টাকা এখনও অবব্যহৃত তার সঙ্গে নতুন বরাদ্দের টাকা মিলে আগামী এক মাসে কী ভাবে খরচ করা সম্ভব। যে কোনও সময়ে লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে পারে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তার আগে বিভিন্ন খাতে এই অর্থ ব্যয় না হলে নতুন করে কোনও কাজের ঘোষণা করা যাবে না। তবে রাজ্যের দাবি, বকেয়া-সহ নতুন কাজ সেরে ফেলা যাবে ওই অর্থে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “ফেব্রুয়ারির মধ্যে দরপত্র ডেকে আমরা কাজ শুরু করে দিতে পারব। কিন্তু কাজ শেষ করা যাবে না।”

এই পরিস্থিতিতে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ কিছু লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, “রাজ্য অর্থ কমিশনের ১১ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে মাসখানেক আগে। আরও ১০ কোটি টাকা শীঘ্রই মিলবে। এ মাসের মধ্যেই আমরা ওই টাকায় বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেব।” জেলা পরিষদ সূত্রে জানানো হয়েছে, এই টাকায় জেলার গ্রামীণ এলাকায় বিয়েবাড়ি, কমিউনিটি হল, পার্ক, শপিং মল, জেটিঘাট, বাজারগুলির কংক্রিটের ছাউনির মতো অনেক কাজের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলার চাষিরা শ্যালো পাম্পের সাহায্যে কৃষিকাজ করেন। এর ফলে বিদ্যুতের খরচ বেশি হয়। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সোলারের মাধ্যমে শ্যালো চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

বিপুল পরিমাণ এই টাকা খরচের বিষয়ে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তথা দলের উত্তর ২৪ পরগনার নেতা তাপস মিত্র বলেন, “লোকসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। রাজ্য সরকারের দেনা ৬ লক্ষ কোটি টাকা। সেখানে তারা কী ভাবে এত টাকার কাজ করবে? সম্পূর্ণ ভাঁওতা দিচ্ছে।” জেলা প্রশাসনের কিছু আধিকারিক মানছেন, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা যেখানে এখনও সম্পূর্ণ খরচ করা যায়নি, সেখানে নতুন করে টাকা এলে দ্রুত তা কাজে লাগানো একটা বড় চ্যালেঞ্জ।

উনত্রিশ দিনের এই মাসের মধ্যে ৪০ কোটি টাকার কাজের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে। ইতিমধ্যেই রাস্তা, নিকাশি, টিউবওয়েল, সাব মার্সিবল পাম্প-সহ নানা খাতে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দরপত্র ডাকা হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের থেকে প্রাপ্ত টাকা যা এখনও খরচ হয়নি, তা এই সমস্ত খাতে খরচ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে তালিকা তৈরির কাজ।

জেলা সভাধিপতি নীলিমা মিস্ত্রি বিশাল বলেন, “প্রাথমিক ভাবে ৪০ কোটি টাকার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাস্তা, পানীয় জলের টিউবওয়েল, নিকাশি নালা সবই রয়েছে।” দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনে পঞ্চায়েতের হাত দিয়েই এই কাজগুলি করা হবে। ইতিমধ্যেই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। দ্রুত কাজও শুরু করা হবে।”

সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘টাকা তো অনেক দিন ধরেই পড়ে রয়েছে। কাজ করেনি কেন এত দিন? ভোটের আগে কাজ দেখাতে এখন এ সব করছে। সরকারি টাকা ভোটের ফায়দা তুলতে ব্যবহার করছে তৃণমূল। এরপরেও এই টাকা থেকে তৃণমূলের নেতারা কাটমানি খাবেন। ফলে যে কাজ হওয়ার কথা, তা বাস্তবে হবে না।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

15th Pay Commission Nabanna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE