তিন দিনের মাথায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন হাওড়ায় আততায়ীদের গুলিতে গুরুতর জখম হওয়া অনুপম রানা। বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান দেবব্রত মণ্ডলের সঙ্গে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন অনুপম। তখনই তাঁকে ও দেবব্রতকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে আততায়ীরা। তবে দু’দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও খোঁজ মেলেনি মূল অভিযুক্ত সুমন চৌধুরী ওরফে বাসু চৌধুরীর। এ নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন অনুপম ও তাঁর পরিজনেরা।
হাওড়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল অনুপমের। রবিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। অনুপমের কথায়, কী কারণে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হল, তা তিনি জানেন না। তবে এখনও মূল অভিযুক্তের খোঁজ পায়নি পুলিশ। যত ক্ষণ না বাসু ধরা পড়ছেন, আতঙ্ক কাটছে না অনুপমের পরিবারের। তবে দেবব্রত এখনও এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। শনিবার অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দেবব্রতের শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
আরও পড়ুন:
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ হাওড়ার নিশ্চিন্দা থানা এলাকা দিয়ে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন সাঁপুইপাড়া-বসুকাটী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবব্রত। সঙ্গে ছিলেন অনুপম। সে সময় আচমকা তাঁদের উপর হামলা হয়। বুড়ো শিবতলার কাছে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালান বাসু ও আর এক দুষ্কৃতী। স্থানীয় সূত্রে খবর, বাসু নিশ্চিন্দারই রবীন্দ্রপল্লি এলাকার বাসিন্দা। বাম জমানা থেকেই নাকি একাধিক অপরাধমূলক কাজকর্মে নাম জড়িয়েছিল তাঁর। রাজ্য রাজনীতিতে পালাবদলের পর তৃণমূলের সঙ্গেও বাসুর ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় বলে দাবি। বিজেপির দাবি, গুলিবিদ্ধ পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গেও একদা ওঠাবসা ছিল বাসুর। এমনকি, ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষের সঙ্গে একটি ছবিতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে (ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
তদন্তের স্বার্থে রবিবার ঘটনাস্থল ফের একবার টহল দেয় পুলিশ। হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠির নেতৃত্বে গোটা এলাকা পরিদর্শন করে পুলিশ বাহিনী। গুলি চালানোর পর অভিযুক্ত বাসু যে সব রাস্তা ধরে পালিয়ে থাকতে পারেন, সেই সব সম্ভাব্য রাস্তায় নজরদারি চালায় পুলিশ। তবে এখনও কেন অভিযুক্তকে ধরা গেল না, তা নিয়ে কিছু মন্তব্য করেননি কমিশনার। অন্য দিকে, বিধায়কের সঙ্গে ছবি প্রসঙ্গে কল্যাণের যুক্তি, তিনি জনপ্রতিনিধি, তাই অনেকের সঙ্গে তাঁর ছবি থাকতেই পারে। তবে বাসুকে তিনি চেনেন না। সিন্ডিকেট নিয়ে বিবাদ প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন, ‘‘আমার এলাকায় কোনও সিন্ডিকেট রাজ নেই। খুব শীঘ্রই অপরাধী ধরা পড়বে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। আমরা মানুষের পাশে আছি।’’