E-Paper

রেলগেটে নাভিশ্বাস, ফের উড়ালপুলের দাবি  

রেলগেট পড়লে স্কুল-পড়ুয়া থেকে অফিসযাত্রী, অ্যাম্বুল্যান্সের রোগী— সকলেই পরিস্থিতির শিকার হন। আবার, গাড়ির চাপে অনেক ক্ষেত্রে সময়ে রেলগেট ফেলা যায় না।

প্রকাশ পাল , কেদারনাথ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৪ ০৯:১৩
এভাবেই নিত্যদিন দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে বৈদ্যবাটীর জিটি রোডের উপর থাকা ১১ নম্বর রেলগেট পারাপার করতে হয় যাতায়াত কারীদের।

এভাবেই নিত্যদিন দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে বৈদ্যবাটীর জিটি রোডের উপর থাকা ১১ নম্বর রেলগেট পারাপার করতে হয় যাতায়াত কারীদের। নিজস্ব চিত্র।

সকাল-সন্ধের ব্যস্ত সময়ে রেলগেট পড়লে আর রক্ষে নেই! কখনও দু’প্রান্তেই প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে গাড়ির লাইন। গেট খুললে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। পথচারীর গায়ে সাইকেল-বাইকের আলতো ধাক্কা গা-সওয়া। কোনও সময় গাড়ির ভিড় ঠেলে এগোতে এগোতে ফের পড়ে যায় গেট। দীর্ঘায়িত হয় অপেক্ষা। বৈদ্যবাটীতে জিটি রোডে পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান মেল লাইনের উপরে ১১ নম্বর রেলগেট গাড়িচালক এবং পথচারীদের কাছে বিভীষিকা! এই পরিস্থিতিতে এখানে উড়ালপুলের দাবি জোরালো হচ্ছে।

রেলগেট পড়লে স্কুল-পড়ুয়া থেকে অফিসযাত্রী, অ্যাম্বুল্যান্সের রোগী— সকলেই পরিস্থিতির শিকার হন। আবার, গাড়ির চাপে অনেক ক্ষেত্রে সময়ে রেলগেট ফেলা যায় না। ফলে, সিগন্যাল না পেয়ে থমকে দাঁড়ায় ট্রেন। হয়রান হন ট্রেনযাত্রীরা। অথচ, বছরের পর বছর নাগরিক দাবি এবং তা নিয়ে নাড়াচাড়া সত্ত্বেও উড়ালপুল হয়নি। এই জেলারই ডানকুনি এবং কামারকুন্ডুতে এমন সমস্যা উবে গিয়েছে রেল-রাজ্য সমন্বয়ে উড়ালপুল হওয়ায়।

দিন কয়েক আগে লোকসভায় রেল বাজেট নিয়ে আলোচনার সময় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে বিভিন্ন প্রস্তাব দেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বৈদ্যবাটীতে উড়ালপুলের প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন। একই দাবিতে গত ২ অগস্ট হাওড়ার ডিআরএম (ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার)-কে স্মারকলিপি দেয় নাগরিক সংগঠন অল বেঙ্গল সিটিজেন্স ফোরাম।

ওই সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শৈলেন পর্বতের দাবি, রেলকর্তারা তাঁদের জানান, রেল নিজেদের টাকাতেই উড়ালপুল তৈরি করতে প্রস্তুত। তবে, যে হেতু উড়ালপুল জিটি রোডের অংশেও করতে হবে, তাই রাজ্য সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে তৎপর হওয়ার আর্জি জানিয়ে শনিবার রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে ই-মেল পাঠানো হয়েছে ফোরামের তরফে।

হুগলি জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রেল এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট প্রস্তাব দিলে রাজ্য সরকার নিশ্চয়ই দেখবে।’’ স্থানীয় বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন জানান, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আগেও এখানে উড়ালপুল তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। কিছু নির্মাণ জিটি রোড বরাবর থাকায় সমস্যা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘এ বারেও সাংসদ চেষ্টা করছেন। আমাদের তরফে যা করণীয়, করব।’’

কল্যাণের প্রতিক্রিয়া, ‘‘(রেল) মুখে বললে তো হবে না! রাজ্যকে চিঠি দিক। আমাকে প্রতিলিপি দিক। প্রয়োজনে মধ্যস্থতা করব।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই সব কাজে কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ করে কাজ শুরু করে। তারা ৫০ শতাংশ টাকা দেয়। বাকিটা রাজ্য সরকার দেয়। কাজটা করে রেল। আর জিটি রোড তো কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পত্তি। অনুমতির প্রয়োজন কী! সে ক্ষেত্রে কাজ চলাকালীন আইন-শৃঙ্খলা, যান শাসন ইত্যাদি নিয়ে রাজ্যকে চিঠি দিলেই হয়।’’

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, একাধিক বার উড়ালপুলের নকশা হাতে মাপজোক হয়েছে সরকারি স্তরে। কাজের কাজ হয়নি। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, টোটোর আধিক্যে পরিস্থিতি আরও বিগড়েছে। অন্তত ‘অফিস টাইমে’ টোটো নিয়ন্ত্রণের দাবিও উঠছে। শৈলেন বলেন, ‘‘ওই রেলগেটে মানুষের ভোগান্তি কর্তব্যরত পুলিশকর্মী, আরপিএফ দেখেন। রেলের কর্তারা চাক্ষুষ করে যান। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে উড়ালপুল তৈরি করা দরকার।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Baidyabati Railgate

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy