Advertisement
০২ মে ২০২৪
Mother and son

স্বামী নিখোঁজ! সদ্যোজাত সন্তানকে লালনপালনের ক্ষমতা নেই, সই করে ‘দান’ করে দিলেন চুঁচুড়ার মা

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২২ সেপ্টেম্বর চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালে একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন ইটভাটার এক মহিলা শ্রমিক। গত ২৭ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে ওই মহিলা ছাড়া পান। সঙ্গে ছিল তাঁর সন্তান।

‘দত্তক’ নেওয়া সন্তানকে নিয়ে বুলু।

‘দত্তক’ নেওয়া সন্তানকে নিয়ে বুলু। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৪৯
Share: Save:

হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়েছেন। তার পরেই সদ্যোজাতকে অন্যের হাতে তুলে দিলেন এক মা। রীতিমতো কোর্ট পেপারে সই করে সন্তানকে এক নিঃসন্তান দম্পতিকে দিয়ে দিয়েছেন ওই মহিলা। তবে এখানে কোনও আর্থিক লেনদেন হয়নি বলে দাবি করেছেন শিশুটিকে ‘দত্তক’ নেওয়া দম্পতি। হুগলির চুঁচুড়া থানার চ্যাটার্জি বাগান এলাকার ঘটনা।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২২ সেপ্টেম্বর চুঁচুড়া জেলা হাসপাতালে একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন ইটভাটার এক মহিলা শ্রমিক। সুগন্ধা অঞ্চলে রয়েছে এই ইটভাটাটি। যাই হোক, তার পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে ওই মহিলা ছাড়া পান। সঙ্গে ছিল তাঁর সন্তান। কিন্তু হাসপাতাল থেকে বেরিয়েই দুধের শিশুকে দান করে দেন তিনি। সদ্যোজাতটিকে নিয়ে নেন চুঁচুড়ার চ্যাটার্জিবাগান এলাকার বাসিন্দা যাদব এবং বুলু মণ্ডল নামে এক দম্পতি।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই মহিলার সই করা একটি ১০০ টাকার কোর্ট পেপারে লেখা রয়েছে, ‘‘শিশু মানুষ করার মতো আর্থিক সামর্থ নেই। শিশুর ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে অপারগ। তাই লিখিত ভাবে সন্তানকে হস্তান্তর করছি।’’ শিশুটির বয়স মাত্র ৮ দিন। গত তিন দিন ধরে সে রয়েছে চ্যাটার্জি বাগান এলাকার বাসিন্দা যাদবের বাড়িতে। দুধের শিশুর যখন মায়ের দুধের প্রয়োজন তখন তাকে বাইরের দুধ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান বুলু। মণ্ডল দম্পতি দাবি করেছেন, আইন মেনেই তাঁরা শিশুকে দত্তক নিয়েছেন। যাদবের কথায়, ‘‘কোর্ট পেপারে সই করা রয়েছে। লিখিত ভাবেই আমরা ওই শিশুকে গ্রহণ করেছি। তাই এই হস্তান্তর বৈধ।’’ তবে এই হস্তান্তরে কোনও টাকাপয়সার লেনদেন হয়নি বলে দাবি করেছেন যাদব।

শনিবার এই খবর পেয়েই মণ্ডল বাড়িতে যান কোদালিয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবাশিস চক্রবর্তী। তিনি বোঝাতে শুরু করেন শিশু গ্রহণের এই পদ্ধতি অবৈধ। শিশু দত্তক নেওয়ার বেশ কিছু সরকারি নিয়মকানুন রয়েছে। যাদবকে মহকুমাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন তিনি। অন্য দিকে, আট দিনের শিশুকে পেয়ে হাসি ফিরেছে স্ত্রীর মুখে। তাই দেখে কিছুতেই সন্তানকে হাতছাড়া করতে চান না যাদব। অন্য দিকে, জন্মদাত্রীর সঙ্গে কোনও ভাবে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mother and son Hooghly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE