E-Paper

‘পুরনো’ জেলায় ফেরানো হয়নি, ক্ষোভ পুলিশে

বাকিদের কথা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়নি। ফলে তাঁদের অনেকে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন বলে পুলিশ কর্মীদের অনেকের দাবি।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় , সুব্রত জানা

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৭
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নির্বাচন কমিশনের নিয়মে টানা তিন বছর এক জেলায় থাকা সাব ইনস্পেক্টর থেকে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মীদের অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছিল লোকসভা ভোটের আগে। ভোট-পর্ব মেটার পরে প্রায় তিন মাস কেটে গেলেও বহু পুলিশ আধিকারিককে এখনও পুরনো জেলায় ফেরানো হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে।

প্রশাসনের খবর, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় হাজারেরও বেশি এমন পুলিশ আধিকারিক রয়েছেন। কমিশনের বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। আর জি কর নিয়ে আন্দোলন সামলাতে এমনিতেই প্রশাসন ব্যতিব্যস্ত। এই পরিস্থিতিতে আগামিকাল, শুক্রবার কলকাতার ভবানী ভবন অভিযান কর্মসূচি নিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মীদের পরিবারের সদস্যেরা।

ভুক্তভোগী এক অফিসার বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। তাই রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের হয়ে আর্জি জানাতে পরিবার-পরিজনেরা ভবানী ভবন অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’

রাজ্য পুলিশ এক শীর্ষ কর্তার অবশ্য দাবি, ‘‘ধাপে ধাপে ওই অফিসারদের ফেরানো হচ্ছে।’’ গত ১৯ অগস্ট রাজ্য পুলিশ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ২০২৬ সালের মধ্যে যাঁরা অবসর নেবেন, তাঁরা পুরনো জায়গায় ফিরবেন। সেই মতো তাঁরা নিজেদের পুরনো জেলায় ফিরেছেন। বাকিদের কথা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়নি। ফলে তাঁদের অনেকে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন বলে পুলিশ কর্মীদের অনেকের দাবি।

পুরনো জেলায় ফেরার অপেক্ষায় থাকা এক সাব ইনস্পেক্টরের কথায়, ‘‘আমাদের পরিবার-পরিজন অসহায়তার শিকার। বাড়িতে অসুস্থ বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান রয়েছেন। পরিবারের প্রতি কোনও দায়িত্ব আমরা পালন করতে পারছি না।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, হাওড়া গ্রামীণের জনা বাইশ সাব ইনস্পেক্টর বদলি হন ভোটের আগে। অন্য জেলা থেকেও এখানে বেশ কিছু জন আসেন। প্রত্যেকের সমস্যা একই। তাঁদের অনেকের বক্তব্য, আগে ভোট মেটার কিছু দিনের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের পুরনো জায়গায় ফেরানো হয়েছে। এ বার তা দেখা যাচ্ছে না। এক সাব ইনস্পেক্টরের খেদ, ‘‘ভোট ঘোষণার আগে থেকেই অন্য জেলায় আছি। বাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো কিলোমিটার দূরে পোস্টিং। বাড়িতে বাবা অসুস্থ। ছেলেমেয়ের দিকেও নজর দিতে পারছি না।’’ এক সাব ইনস্পেক্টরের স্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘পরিবারের কর্তা টানা বাইরে থাকায় সংসারে সমস্যা হচ্ছে। অন্য জেলায় কত দিন থাকতে হবে, জানতে না পারায় পরিবারকে নিয়েও যেতে পারছেন না। ভাবছি, ভবানী ভবনের সামনে ধর্নায় বসব।’’

সমস্যা অনুধাবন করে হাওড়া গ্রামীণের এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা গাড়ি সহ নানা সুবিধা পান। সাব ইনস্পেক্টরদের সেই সুবিধা থাকে না। ফলে নানা সমস্যা হয়।’’ থানায় সাব ইনস্পেক্টরদের অনেক রকম কাজ থাকে। এ ক্ষেত্রে তাতেও সমস্যা হচ্ছে বলে পুলিশের একাংশের বক্তব্য। পুলিশ কর্তাদের একাংশের ক্ষোভ, এখন নাগরিক এবং বিরোধীদের আন্দোলন সামলাতেই সরকার ব্যস্ত। পুলিশ কর্মীদের সমস্যা নিয়ে ভাবার সময় নেই!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Uluberia

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy