হুগলির একটি আলুর আড়ত।
গত ছ’মাস ধরে কমবেশি ৪০ টাকা কিলো আলুই যাচ্ছে গৃহস্থের ঘরে। উৎসবের মরসুমে কেজিতে দাম বেড়েছে কমবেশি আরও চার-পাঁচ টাকা। কিন্তু আলুর আড়তদার এবং পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, অক্টোবরের শেষ থেকেই বাজারে আলুর দাম কমা উচিত ছিল। কারণ, তাঁরা আগের থেকে অনেক কম টাকায় হিমঘর থেকে খোলা বাজারে আলু ছেড়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, সব লাভের গুড় খাচ্ছে ফড়েরা। আর বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা।
রাজ্য আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, ‘‘অক্টোবরের মাঝ থেকেই আড়তে জ্যোতি ১০০০ ও চন্দ্রমুখী ১২০০ টাকায় (৫০ কিলো বস্তা) বিকিয়েছে। পরিবহণ খরচ জুড়ে আলুর দাম কিছুটা বেড়ে ২৫ থেকে ৩০ টাকা হতে পারে। কিন্তু ৪০ টাকা কিলো নেওয়াটা বাড়াবাড়ি। জেলা ও রাজ্যস্তরে বিষয়টা জানানো হয়েছে।’’
এ বিষয়ে হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা আলুর বাজারদরের উপর খেয়াল রাখছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হবে।’’
গত বছর পরপর তিনটি নিম্নচাপের জেরে ক্ষতি হয়েছিল আলু চাষে। এই চাষের জন্য কড়া রোদ, ঠান্ডা এবং বাতাসে কম আর্দ্রতা ছাড়াও ঝুরঝুরে শুকনো মাটির প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চাষিরা। বৃষ্টিতে মাটি ভিজে থাকায় আলু চাষ পিছিয়ে যায় বারবার। ফলন কম হওয়ায় রাজ্যের হিমঘরগুলির একাংশ খালি পড়েছিল। পরে সেগুলি ভরে উত্তরপ্রদেশ-সহ ভিন রাজ্যের আমদানি করা আলুতে। যোগান কম হওয়ায় স্বাভাবিক নিয়মেই আলুর দাম চড়া হয়। সেই সময় থেকেই জ্যোতি আলু ৩৫ টাকা এবং চন্দ্রমুখী আলু ৪০ টাকা বাজার দরে বিকোচ্ছিল।
রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি বছর নভেম্বরে খালি করে দিতে রাজ্যের হিমঘরগুলি। তাই অক্টোবরের মাঝ থেকে আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে কম দামেই হিমঘর থেকে বাজারে আলু ছাড়তে শুরু করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, ফড়েরা কম টাকা আলু কিনলেও বিক্রি করছেন আগের দামেই। সে কারণেই বাজারে আলুর দাম কমেনি।
এক পাইকারি ব্যবসায়ীর অভিযোগ, ‘‘ক্রেতাদের কম দামে জিনিস কেনা থেকে বঞ্চিত করছে ফড়েরা। বাজারে বদনাম হচ্ছে আমাদের।’’ উত্তরপাড়ার বাজারের এক খুচরে আলু ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘আমাদের কিছু করণীয় নেই। আগে যে দামে আলু কিনেছিলাম, গত সপ্তাহেও সেই দামেই কিনেছি। তাহলে আমরা দাম কমাব কী করে? সরকারের উচিত বিষয়টিতে নজর দেওয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy