—প্রতীকী চিত্র।
মাঝে কিছু দিন ‘চুপ’ থাকার পরে ফের সক্রিয় হাওড়া ও হুগলির ত্রাস রমেশ মাহাতো এবং তার দলবল!
দিন কয়েক আগে রিষড়ার এক প্রোমোটারকে তুলে নিয়ে গিয়ে তাঁর ব্যবসার অংশীদার করার জন্য চাপ সৃষ্টির অভিযোগে দুই দুষ্কৃতীকে বুধবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃত বিজয় রাউত ও রাকেশ শ্রীবাস্তব রমেশের শাগরেদ। জেরায় তারা দোষ কবুল করেছে।
চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি বলেন, ‘‘ওই প্রোমোটারের নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। রমেশ যাতে এই জেলায় কোনও অপরাধ না করতে পারে, সে ব্যাপারে পুলিশ সজাগ আছে।’’
পুলিশ জানায়, রিষড়ার মোড়পুকুর ১ নম্বর গভর্নমেন্ট কলোনি এলাকায় বিনোদ সিংহ নামে ওই প্রোমোটার একটি আবাসন নির্মাণ করছেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, রমেশের দলবল তাঁকে নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ করছিল। সেই বাবদ প্রায় এক কোটি টাকা জমে গিয়েছিল। ওই টাকা তিনি বার বার দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু ‘টাকা দিতে হবে না’ বলে সরবরাহকারীরা জানায়। তার বদলে শুরু হয় অন্য ‘চাপ’।
পুলিশের কাছে ওই প্রোমোটারের অভিযোগ, তাঁর ব্যবসায় তাদের অংশীদার করার দাবি জানায় ইমারতি দ্রব্য সরবরাহকারীরা। তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে বালিতে রমেশের ঠেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর, ভয় দেখানো চলে। রিষড়ায় ওই জমির মালিককে দিয়ে আগের চুক্তিপত্র বাতিল করে জোর করে সই করিয়ে নতুন চুক্তি করানো হয় বলেও অভিযোগ। বিজয়কে ওই কাজের অংশীদার করা হয়। নতুন চুক্তিতে বিজয়ের শতকরা ৬০ এবং প্রোমোটারের ৪০ ভাগ অংশীদারিত্বের কথা বলা হয়।
এর পরেই গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত প্রোমোটার রিষড়া থানায় এফআইআর করেন। তদন্তে নেমে পুলিশের দাবি, বিজয়ের বকলমে পরিকল্পনার পিছনে রমেশই রয়েছে। ঘটনায় রমেশের ছেলে অমিত মাহাতোর নামও উঠছে। তদন্তকারী এর আধিকারিক জানান, চুক্তির কাগজ হাতে পাওয়ার পরেই পুলিশ নিশ্চিত হয়, ঘটনার নেপথ্যে রমেশ এবং তার দলবল সক্রিয়। পরিচিত দুষ্কৃতীদের বদলে নতুন লোককে দিয়ে এই কাজ করায় রমেশ। বিজয় আট হাজার টাকা মাসিক বেতনে রমেশের কাছে কাজ করে।
এক সময় হুগলির ত্রাস হুব্বা শ্যামলের ডান হাত ছিল রমেশ। হুব্বা খুন হওয়ার পরে হুগলি ও হাওড়া জুড়ে প্রভাব বাড়ে রমেশের। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই সে প্রোমোটারদের উপর নানা ভাবে জুলুম চালিয়ে আসছে। আবাসন তৈরির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ ‘তোলা’ তাকে এবং তার দলবলকে দিতে হয়। জেল থেকেও সে ফোনে হুমকি দিয়ে তোলাবাজি চালাত। তবে জোর-জবরদস্তি নির্মাণ ব্যবসায় অংশীদার হতে চেয়ে তোলাবাজির পরিকল্পনা একেবারে নতুন ছক বলে পুলিশ জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy