Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Teacher Crisis

শিক্ষকের অভাবে হাওড়ায় বন্ধ হয়ে গেল মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র

ডোমজুড় ব্লকের অন্তর্ভুক্ত মাকড়দহ ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় পায়রাটুঙ্গি গ্রামের নামেই পায়রাটুঙ্গি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র তৈরি হয়েছিল ২০০৩ সালে। গ্রামের কয়েক জন সহৃদয় ব্যক্তি জমি দিয়েছিলেন স্কুল তৈরির জন্য।

An image of Lock

শিক্ষকের অভাবে স্কুলে পড়ল তালা। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ডোমজুড় শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:০৪
Share: Save:

রাজ্যে যখন শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চলছে, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি, সেই আবহে শিক্ষকের অভাবে স্কুলে পড়ল তালা। হাওড়ার ডোমজুরের পায়রাটুঙ্গি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে বন্ধ হয়ে গেল পঠনপাঠন।

ডোমজুড় ব্লকের অন্তর্ভুক্ত মাকড়দহ ২ নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় পায়রাটুঙ্গি গ্রামের নামেই পায়রাটুঙ্গি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র তৈরি হয়েছিল ২০০৩ সালে। গ্রামের কয়েক জন সহৃদয় ব্যক্তি জমি দিয়েছিলেন স্কুল তৈরির জন্য। এখানে কচিকাঁচার দল ভিড় জমিয়েছিল পড়াশোনা শিখতে। কিন্তু বর্তমানে স্কুলের গেটে পড়েছে তালা। বন্ধ পঠনপাঠন। গ্রামবাসীরা জানান, শিক্ষকের অভাবে বন্ধ হয়েছে এই স্কুল। ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হয়েছে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট। স্কুলটি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছিল। চেষ্টা চলছিলো মাধ্যমিক পর্যন্ত করার। কিন্তু এরই মাঝে বন্ধ হয়ে গেল! এক অভিভাবক শেখ জাহির বলেন, ‘‘স্কুল ভালই চলত। গ্রামের প্রায় তিনশো জন ছেলেমেয়ে পড়ত। স্কুলে অনেক নেতা মন্ত্রী এসেছিলেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন অনেকে। কিন্তু সব এখন বৃথা। প্রথমে ছ’জন শিক্ষক শিক্ষিকা ছিলেন। ২০১৮ সালের পর থেকে শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা কমতে কমতে শেষে এক জনে ঠেকেছে। নতুন করে আর নিয়োগ হয়নি। তাই বন্ধ করে দেওয়া হল স্কুল।’’

এই স্কুলের এক প্রাক্তন ছাত্র তাজ মহম্মদ জানায়, ‘‘খুবই খারাপ লাগছে। এখন অন্য স্কুলে যেতে হবে।’’ তবে স্কুল বন্ধের জন্য সরকারি উদাসীনতাকে দায়ী করছেন গ্রামবাসীরা। চাইছেন স্কুলে আবার চালু হোক পড়াশোনা। মাকড়দহ ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তনুশ্রী কর্মকার বলেন, ‘‘স্কুলটি খোলার জন্য বিধায়ক ও প্রশাসনকে জানাব।’’ ডোমজুড় কেন্দ্রের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ বলেন, ‘‘স্কুলটি সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের আওতাভুক্ত ছিল। এখন আর নেই। তবে শিক্ষামন্ত্রীকে স্কুলটি খোলার জন্য আবেদন জানিয়েছি।’’

‘সকলের জন্য শিক্ষা’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে গ্রামে গ্রামে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে রাজ্যের পঞ্চায়েত এলাকায় সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় শিশু শিক্ষাকেন্দ্র (প্রাথমিক পর্যন্ত) এবং মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র (অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত)। হাওড়ার সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় শিশু শিক্ষা কেন্দ্র ছিল ৩০৭টি। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে আছে ২৪১টিতে। এ ছাড়া মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র ২টি। এই সমস্ত স্কুলগুলির বেশ কয়েকটি ভাল চললেও অনেক স্কুলই ধুঁকছে। নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না। তাই অদূর ভবিষ্যতে এই সমস্ত স্কুল সম্বন্ধে সরকারি কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা আসেনি বলে সংশ্লিস্ট দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Teacher Crisis Howrah Secondary Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE