আচমকা পরিষেবা বন্ধে সমস্যায় বহু যাত্রী। — নিজস্ব চিত্র।
রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য বন্ধ রয়েছে হাওড়া থেকে কলকাতামুখী লঞ্চ পরিষেবা। আগে থেকে না জানিয়ে আচমকা বন্ধের নোটিস ঝোলানোয় কাজের দিনে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন হাজার হাজার নিত্যযাত্রী। সকলেই হাওড়া স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে দৌড়ে লঞ্চঘাটে এসে জানতে পারছেন বন্ধ রয়েছে পরিষেবা। এর ফলে বাসে ভিড় উপচে পড়ছে। হুগলি নদী জলপথ পরিবহনের আশ্বাস, রক্ষণাবেক্ষণের কাজ সেরেই পরিষেবা স্বাভাবিক করা হবে। যদিও কবে থেকে তা হবে, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে।
চন্দননগরের জয়িতা কর। প্রতি দিন ট্রেনে হাওড়ায় এসে লঞ্চ ধরে বাবুঘাটে নেমে অফিসে যান মধ্য কুড়ির তরুণী জয়িতা। মঙ্গলবার লঞ্চঘাটে আসতেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তাঁর। দেখেন, বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে, ১৯ থেকে ২৪ তারিখ বন্ধ থাকবে লঞ্চ পরিষেবা। জয়িতা বলেন, ‘‘গত কালও (সোমবার) এখান দিয়ে যাতায়াত করেছি। কোনও নোটিস ছিল না। আজ সকালে নোটিস ঝুলিয়ে দিয়েছে। আজ আর সময়ে অফিস পৌঁছতে পারব না। এ ভাবে যাত্রীদের হয়রানি করার কোনও অধিকার ওদের নেই। রক্ষণাবেক্ষণের কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু সবক’টি লঞ্চ একসঙ্গে বন্ধ করে রক্ষণাবেক্ষণ না করলেই চলত না?’’ শ্রীরামপুরের দোয়েল মুখোপাধ্যায়ের অফিস শ্যামবাজারের আশপাশে। প্রতি দিন হাওড়ায় নেমে লঞ্চে বাগবাজার, সেখান থেকে সোজা অফিস। কিন্তু মঙ্গলবার তিনিও পড়েছেন বিপাকে। লঞ্চ পরিষেবা প্রদানকারীদের প্রতি একরাশ বিরক্তি উগরে দিয়ে তরুণী বলেন, ‘‘হাতে দু’টি ব্যাগ। পিঠে ভারি ল্যাপটপের ব্যাকপ্যাক। আগে থেকে না জানিয়ে লঞ্চ বন্ধ করে দিল! আমরা অফিস যাব কী ভাবে? এক বারও ভাবল না মানুষের হেনস্থার কথাটা? এঁদের আক্কেল দেখে আশ্চর্য হয়ে যাই। তার উপর কবে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, তা নিয়েও কনফিউজ়ড (সন্দিহান) ওঁরা।’’ একই কথা, প্রৌঢ় বিমান বসু, ইদ্রিশ শেখের কণ্ঠে। তাঁরাও বিরক্ত পরিষেবা না পাওয়ায়।
রক্ষণাবেক্ষণের কারণে পরিষেবা বন্ধের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে হুগলি নদী জলপথ পরিবহন সমবায় সমিতি। সূত্রের খবর, অধিকাংশ ভেসেলের রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ার কারণে ২৬টি ভেসেলের মধ্যে ১৩টি ভেসেল দিয়ে কাজ চলছিল। যার মধ্যে আরও ৬টি ভেসেলের সমীক্ষা শেষ হয় ১৯ ডিসেম্বর। সে ক্ষেত্রে হাতে মাত্র ৭টি ভেসেল। তাই আপাতত পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। লঞ্চ ফিটনেস সার্টিফিকেট পাওয়ার পরেই আবার পরিষেবা চালু হবে। হুগলি নদী জলপথ পরিবহন সমবায় সমিতি নিযুক্ত স্পেশাল অফিসার জয় ধর বলেন, ‘‘আমরা যত দ্রুত সম্ভব পরিষেবা চালু করে দেব। আপাতত রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’ যদিও একসঙ্গে কেন সবক’টি লঞ্চ বন্ধ করে পরিষেবা সম্পূর্ণ থামিয়ে দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে হচ্ছে, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy