Advertisement
১১ অক্টোবর ২০২৪
ভাসিয়ে দিল দ্বারকেশ্বর নদ, জল বাড়ার সতর্কতা সেচ দফতরের
Howrah Submerged

৮ ওয়ার্ড, ১৫ পঞ্চায়েত জলবন্দি

সেচ দফতর সূত্রের খবর, বাঁকুড়া ক্যাচমেন্ট বেসিন থেকে আসা ৫০ হাজার কিউসেক জলে দ্বারকেশ্বর ফুলে উঠেছে।

পিচ রাস্তা টপকে জল বইছে। সোমবার খানাকুলের বন্দিপুরে।

পিচ রাস্তা টপকে জল বইছে। সোমবার খানাকুলের বন্দিপুরে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০১
Share: Save:

বৃষ্টি বন্ধ হয়েছে। হুগলির শহরাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় জমা জল নামতে শুরু করলেও পরিস্থিতির অবনতি হল আরামবাগে। রবিবার গভীর রাত থেকে এক দ্বারকেশ্বর নদের জলেই প্লাবিত হল আরামবাগ শহরের ৮টি ওয়ার্ড এবং ১৫টি পঞ্চায়েত এলাকা। সব মিলিয়ে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ জলবন্দি হয়েছেন। বাঁধ উপচে জল ঢুকেছে নানা জায়গায়। বিকেলে খানাকুল ১ ব্লকের কিশোরপুর ১ ও ২ পঞ্চায়েত এলাকায় দু’জায়গায় বাঁধ ভাঙে। দুর্গতদের উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় সরানোর কাজ চলছে বলে জানান মহকুমাশাসক সুভাষিণী ই।

সেচ দফতর সূত্রের খবর, বাঁকুড়া ক্যাচমেন্ট বেসিন থেকে আসা ৫০ হাজার কিউসেক জলে দ্বারকেশ্বর ফুলে উঠেছে। নদের চরম বিপদসীমা (১৭.৮৩ মিটার) ছাড়িয়ে দেড় ফুট উপর দিয়ে জল বয়ে যাওয়াতেই এই পরিস্থিতি। জল আরও বাড়বে বলে সেচ দফতর সতর্ক করেছে। তবে, ডিভিসি-র ছাড়া ৮৫ হাজার কিউসেক জলে দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরীর জলস্তর বাড়লেও তা বিপদসীমা ছোঁয়নি বলে জানানো হয়েছে।

রবিবার রাত থেকেই শহরে দ্বারকেশ্বর নদের পূর্ব পারের ৬টি এবং পশ্চিম পারের দু’টি ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়। সোমবার বেলা ১১টার পর সেই জল আরও বাড়ে। বন্ধ হয় ৭ নম্বর রাজ্য সড়কে আরামবাগ থেকে কামারপুকুর হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর বাস পরিষেবা। শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে নেতাজি মহাবিদ্যালয় জলমগ্ন হয়।

দুপুর ২টো নাগাদ প্রথমে খানাকুল ১ ব্লকের কিশোরপুর ২ পঞ্চায়েতের তালিতে বাঁধ ভাঙে। ঘণ্টা দেড়েক পর কিশোরপুর ১ পঞ্চায়েতের বন্দিপুর দিঘেরপাড় এলাকাতেও বাঁধের প্রায় ১৫০ মিটার ভেঙে জল ঢুকতে থাকে। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কিশোরপুর ২ ও সংলগ্ন কিশোরপুর ১ পঞ্চায়েতের মোট ১১টি গ্রামের প্রায় ২২ হাজার মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েন। শুক্রবার রাত থেকে শুধু বৃষ্টির জল এবং বাঁকুড়ার দিক থেকে আসা জলে আমোদর ও তারাজুলি খাল উপচে গোঘাটের দু’টি ব্লকের হাবুডুবু অবস্থা ছিল। কামারপুকুর কলেজ চত্বরও জলমগ্ন হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্লক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ ব্লক, খানাকুলের দু’টি এবং গোঘাটের দু’টি ব্লক মিলিয়ে প্রায় ৯০টি গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ জলবন্দি। ব্লক প্রশাসন এবং পঞ্চায়েতগুলি জানিয়েছে, জলবন্দি মানুষের জন্য শুকনো খাবার এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্গতদের নিরাপদ জায়গায় সরানোর সব রকম পরিকাঠামো প্রস্তুত। আপাতত কিছু মানুষ নিজ-নিজ পাকা বাড়ির দোতলা, ছাদে বা গ্রামের উঁচু স্কুলগুলিতে আশ্রয় নিচ্ছেন।

এ দিন সকালেই জেলাশাসক মুক্তা আর্য আরামবাগে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে এসে প্রশাসনিক বৈঠকে প্রয়োজনীয় ত্রাণ, উদ্ধার কাজ-সহ সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে বৈঠক করে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। দুপুরে তিনি এবং মন্ত্রী বেচারাম মান্না আরামবাগ পুর এলাকার কালীপুরে ১২ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পরিস্থিতি দেখেন। তিরোল পঞ্চায়েতের পারআদ্রায় একটি ত্রাণ শিবিরেও যান তাঁরা।

আরামবাগের সালেপুর ১ পঞ্চায়েতে শুকনো খাবার ও জলের দাবিতে এ দিন কিছুক্ষণ অবরোধ হয়। যদিও ব্লক প্রশাসন থেকে প্রায় সঙ্গে সঙ্গে খাবার পৌঁছে যায়। শহরের ত্রাণ শিবিরগুলিতে শিশুদের জন্য দুধের দাবি ছিল। তা-ও পাঠানো হয় মহকুমা প্রশাসন থেকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Heavy Rainfall
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE