শান্তনু বকলমে স্ত্রীর নামে বিনিয়োগ করেছিলেন প্রোমোটারি ব্যবসাতেও! — ফাইল ছবি।
বিলাসবহুল বাড়ি, দামি গাড়ি, রেস্তরাঁ, হোমস্টে-র পর নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্থ কি বিনিয়োগ হয়েছিল প্রোমোটারিতেও? হুগলির চন্দননগরে তেমনই অভিযোগ উঠছে। জিটি রোডের ধারে সত্যপিরতলায় ছ’কাঠা জায়গার উপর তৈরি হবে বহুতল। সেই ঠিকাদারি সংস্থাতেই স্ত্রীর নামে বিনিয়োগ করেছিলেন শান্তনু। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন ওই ঠিকাদার সংস্থার বাকি দুই অংশীদার।
নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন শান্তনু। গ্রেফতারির পরেই প্রকাশ্যে আসে শান্তনুর বিপুল সম্পত্তির কথা। নামে, বেনামে একাধিক জমি, বাড়ি রয়েছে তাঁর। শুধু নিজের নামেই নয়, তাঁর স্ত্রীর নামেও রয়েছে একাধিক বিনিয়োগ। চুঁচুড়ার পর এ বার চন্দননগরের এক আবাসন তৈরিতে নিযুক্ত একটি ঠিকাদারি সংস্থার অন্যতম শরিক হিসাবে নাম রয়েছে শান্তনুর স্ত্রীর।
সত্যপিরতলা এলাকায় ‘ঐশানী অ্যাপার্টমেন্ট’ নামে একটি আবাসন তৈরি হবে। তৈরি করবে, ‘ডিআইপি ডেভলপার অ্যান্ড অর্ডার সাপ্লাই কোম্পানি’। এই সংস্থার মোট তিন শরিক, দিবাকর মুখোপাধ্যায়, ইন্দ্রনীল চৌধুরী এবং শান্তনুর স্ত্রী। প্রত্যেক পার্টনারের ৩৩ শতাংশ করে অংশীদারি রয়েছে সংস্থায়। ডিআইপি ডেভলপার অ্যান্ড অর্ডার সাপ্লাই কোম্পানি’র অন্যতম পার্টনার ইন্দ্রনীল বলেন, ‘‘শুরুর দিকে দিবাকর এবং আমি একসঙ্গে অংশীদারির ভিত্তিতে প্রোমোটারি ব্যবসা করতাম। ২০২০-তে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে এসে জানান, তাঁরা আমাদের সঙ্গে পার্টনারশিপে প্রোমোটারি ব্যবসায় যুক্ত হতে চান। সেই মতো আমরা তিন জন পার্টনার মিলে ওই আবাসন তৈরির সিদ্ধান্ত নিই। হাওড়ার মুন্সিরহাটে আরও একটি বহুতল নির্মাণ করেছি আমরা।’’
কিন্তু অন্যতম অংশীদারের প্রতাপশালী স্বামী (শান্তনু) বর্তমানে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়ে জেলে রয়েছেন। ফলে সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন ঠিকাদারি সংস্থার বাকি অংশীদারেরা। ইন্দ্রনীল বলছেন, ‘‘এই ঘটনায় আমরা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছি। প্রোজেক্ট শেষ করা যাবে হয়তো কিন্তু বিক্রি করার সময় সমস্যা হতে পারে। কারণ রেজিস্ট্রির সময় তো তাঁকে থাকতে হবে। দেখি কী হয়। এখনই কিছু বলতে পারছি না।’’
বিদ্যুৎ দফতরের সাধারণ কর্মী ছিলেন শান্তনু। কিন্তু তাঁকে দেখে তা বোঝার জো নেই। উল্টে যুবনেতার জীবনযাত্রা দেখে চোখ কপালে উঠত এলাকার তাবড় তৃণমূল নেতাদের। স্থানীয় সূত্রে দাবি, নিয়োগকাণ্ডে জেলবন্দি শান্তনুর রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। দামি গাড়ি, বিলাসবহুল বাড়ি, রেস্তরাঁ, রিসর্ট, হোমস্টে, জমি জায়গা থেকে ফ্ল্যাট— বিদ্যুৎ দফতরের সাধারণ চাকরি করে এত সম্পত্তি অসম্ভব। ইডির একটি অংশের দাবি, এ সবই হয়েছে চাকরি বিক্রির টাকায়। প্রোমোটারিতে বিনিয়োগেও কি মিশে রয়েছে চাকরির টাকা? প্রশ্ন এখন সেটাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy