Advertisement
০৬ মে ২০২৪
COVID-19

করোনা ভ্যাকসিন এখনও অপ্রতুল দুই জেলাতেই

ভ্যাকসিন না পেয়ে বিক্ষোভ পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে। শনিবার। ছবি: তাপস ঘোষ

ভ্যাকসিন না পেয়ে বিক্ষোভ পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে। শনিবার। ছবি: তাপস ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া, চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২১ ০৭:৩৯
Share: Save:

ভ্যাকসিনের অভাবে হাওড়া জেলায় অনেক টিকাকরণ কর্মসূচি বাতিল হয়ে যাচ্ছে। ফলে, প্রথম তো বটেই, নির্দিষ্ট সময়ের পরেও বহু মানুষ করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ়ও পাচ্ছেন না। ভ্যাকসিনের জোগান স্বাভাবিক হয়নি পড়শি জেলা হুগলিতেও। এ নিয়ে শনিবার বিশৃঙ্খলা হল পান্ডুয়া হাসপাতালে।

হাওড়ায় দৈনিক ২৫ হাজার টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা প্রথম দিকে পূরণ হলেও পরে সেই ধারাবাহিকতা রাখা যায়নি। প্রায় পনেরো দিন ভ্যাকসিনের জোগান ছিল চাহিদার অর্ধেক। সম্প্রতি তা চাহিদার কুড়ি শতাংশে এসে ঠেকেছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। ফলে, বাতিল হচ্ছে একের পর এক টিকাকরণের কর্মসূচি। বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে শুক্র ও শনিবার টিকাকরণ বাতিল করতে হয়। এই দু’দিন টিকা দেওয়ার জন্য যাঁদের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল, তাঁদের মোবাইলে ‘মেসেজ’ পাঠিয়ে সে কথা জানিয়েও দেওয়া হয়। ভ্যাকসিনের অভাবে বেশিরভাগ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও টিকাকরণ বাতিল করা হয়েছে।

আপাতত জেলার বড় হাসপাতাল এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণ হচ্ছে। উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ছেন বয়স্করা। এই সব উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তরফে পাড়ায় পাড়ায় শিবির করে টিকাকরণ হয়েছিল। বাগনান-১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অধীন সাবসিট উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তরফে প্রত্যন্ত গ্রামে ২২টি শিবির করে টিকাকরণ হয়। কিন্তু এখানে এখন টিকাকরণ বন্ধ। দ্বিতীয় ডোজ়ের জন্য যাঁরা আসছেন, তাঁদের বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। সেখানেও সকলে টিকা পাচ্ছেন না। এই ছবি গোটা জেলারই।

আমতার বিদায়ী কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রের ক্ষোভ, ‘‘টিকাকরণ নিয়ে নৈরাজ্য চলছে। প্রবীণ মানুষদের হয়রানি চোখে দেখা যাচ্ছে না। যত কম ভ্যাকসিনই আসুক না কেন, গ্রামেই প্রবীণদের টিকাকরণের ব্যবস্থা করতে হবে।’’ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘ভ্যাকসিনের জোগান দিনের পর দিন কমছে। যখন যেমন পাচ্ছি, সে ভাবেই টিকাকরণ চলছে। এর বাইরে আমরা কী করতে পারি!’’

হুগলির শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের পিয়ারাপুর পঞ্চায়েতের তিনটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলতি মাসের ১২ তারিখের পরে ভ্যাকসিন মেলেনি। ভ্যাকসিনের জন্য গ্রামবাসীরা হন্যে। পঞ্চায়েত প্রধান সীমা সর্দার জানান, যাঁরা টিকার খোঁজ করছেন, তাঁদের শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতাল এবং কানাইপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে। তবে, আগামী সোমবার চাঁপসারা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেড়শো জনকে ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হবে। অপর দু’টি কেন্দ্রেও পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। যেমন জোগান মিলবে, সেই অনুযায়ী টিকা দেওয়া হবে।

পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে প্রথম দিকে দৈনিক প্রায় ছ’শো জনকে টিকা দেওয়া হয়। ভ্যাকসিনের জোগানে ঘাটতি থাকায় দিন কয়েক ধরে পাঁচশো জন টিকা পাচ্ছিলেন। শনিবার জানানো হয়, সাড়ে তিনশো জনকে (১০০ জনকে প্রথম ডোজ়, ২৫০ জনকে দ্বিতীয় ডোজ়) টিকা দেওয়া হবে। এর পরেই টিকার জন্য অপেক্ষমাণ গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, ভোর থেকে তাঁরা লাইন দিয়েছেন। ভ্যাকসিন না থাকায় তাঁদের ফিরে যেতে হবে। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের বচসা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুখ খোলেনি।

পরিস্থিতি এমন হলেও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘ভ্যাকসিনের তেমন সমস্যা নেই। কিছু ক্ষেত্রে পরিমাণ কম থাকায় পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 COVID Vaccine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE