E-Paper

নজরুলের গান শুনে লাঠি নামালেন লেঠেল

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২৪ ০৮:৪২
তারকেশ্বরে সত্যাগ্রহে নজরুল।

তারকেশ্বরে সত্যাগ্রহে নজরুল।

১২৫তম জন্মদিবস পেরিয়ে গেল কাজী নজরুল ইসলামের। স্বাধীনতা আন্দোলনের পর্বে তাঁর গান-কবিতার কথার তিরে বিদ্ধ হয়েছিল ইংরেজ। হুগলি জেলার সঙ্গে নজরুলের ছিল নিবিড় সম্পর্ক। আজ থেকে একশো বছর আগে তারকেশ্বর সত্যাগ্রহের সময় তাঁর গাওয়া একটি গান কী ভাবে বিজয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল, হুগলির ওই জনপদ তার সাক্ষী। লাঠির থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল নজরুলের লেখা গান।

নজরুল তখন বিবাহিত জীবনে আশ্রয় নিয়েছেন চুঁচুড়ায়। তারকেশ্বরে মোহন্ত বিরোধী আন্দোলন চলেছে। মোহন্তের অত্যাচারে মানুষের অবস্থা দুর্বিষহ। ইংরেজ মোহন্তের পক্ষে। ১৩৩১ বঙ্গাব্দের ২৭ জৈষ্ঠ্য। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের নেতৃত্বে মোহন্ত বিরোধী আন্দোলনে সভা হচ্ছে তারকেশ্বরে। সভার সভাপতি স্বামী সচ্চিদানন্দ। পরিচালনায় স্বামী বিশ্বানন্দ। আন্দোলনে যোগ দিলেন সুভাষচন্দ্র।

নজরুল লিখে ফেললেন ‘মোহন্তের মোহ-অন্তের গান’। হরিপালের ধরানাথ ভট্টাচার্যের ডাকে গানটি সুর দিয়ে হাজির হলেন তারকেশ্বরের সেই প্রতিবাদ সভায়। তাঁর গানেই সভা শুরু হল। নজরুল গাইলেন, ‘জাগো বঙ্গবাসী...’। সে গানে যেন ঝড় উঠল! দলে দলে মানুষ ছুটে এলেন। ততক্ষণে সভা ভেঙে দিতে হাজির মোহান্তের লেঠেল সত্য বাঁড়ুজ্জে। সঙ্গে শতাধিক লেঠেল। মঞ্চে তখন দেশবন্ধু, সুভাষচন্দ্রেরা। সবাই ভাবছেন, গানের মাঝেই লেঠেলরা বুঝি হামলা করবে! ঝাঁকরা চুলে ঘাড় দুলিয়ে দুলিয়ে গাইছেন নজরুল। অবাক কাণ্ড! গান শেষ হতেই লেঠেল সত্য বাঁড়ুজ্জে এগিয়ে এসে বললেন, ‘‘কাজী আর একবার গাইবে গানটা!’’

আবার গাইলেন নজরুল। তার পরে লেঠেলদের নেতা দেশবন্ধুর পায়ে লাঠি নামিয়ে বললেন, ‘‘আজ থেকে আপনাদের সাথেই আমরা।’’ আরও তীব্র হল আন্দোলন। বাধ্য হয়ে ইংরেজ সরকার প্রথম শ্রেণির এক ম্যাজিস্ট্রেটকে মন্দিরের তদারকির দায়িত্ব দিল। অপসারিত হলেন মোহন্ত। জয় এল সত্যাগ্রহীদের।

তথ্য: পার্থ চট্টোপাধ্যায়, আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চাকারী

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kazi Nazrul Islam

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy