Advertisement
E-Paper

বেড়াতে গিয়ে অখুশি নেতা, পথে নেমে বিক্ষোভ তৃণমূলের

চন্দননগর পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওই কাউন্সিলর তথা তৃণমূল নেতা বিনয় সাউ অবশ্য হাসি বা আস্ফালনের কিছু দেখছেন না। বিনয় রাগে অগ্নিশর্মা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:২৭
ভ্রমণ সংস্থার অফিসের সামনে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। নিজস্ব চিত্র

ভ্রমণ সংস্থার অফিসের সামনে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। নিজস্ব চিত্র

আবাস যোজনা, শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে বাম-বিজেপি। এ নিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম। এই আবহে হুগলির চন্দননগরের এক দল তৃণমূল কর্মী আন্দোলনে নামলেন ভিন্‌ রাজ্যে বেড়াতে গিয়ে দলীয় কাউন্সিলর ঠিকমতো পরিষেবা না পাওয়ার প্রতিবাদে। মঙ্গলবার তাঁরা চুঁচুড়ার ফুলপুকুরে ভ্রমণ সংস্থার অফিসের সামনে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন। গোলমাল থামাতে আসরে নামে পুলিশ। এই ‘বিক্ষোভ কর্মসূচি’ নিয়ে হাসাহাসি শুরু হয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে। বিরোধীরা এতে ‘শাসকের আস্ফালন’ দেখছেন।

চন্দননগর পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওই কাউন্সিলর তথা তৃণমূল নেতা বিনয় সাউ অবশ্য হাসি বা আস্ফালনের কিছু দেখছেন না। বিনয় রাগে অগ্নিশর্মা। কেরল থেকে ফোনে তিনি বলেন, ‘‘ভ্রমণ সংস্থার দাবি মতো অগ্রিম দিয়েছি। কিন্তু, যাতায়াত, হোটেলে থাকা-খাওয়া কোনও পরিষেবাই ভাল দেওয়া হয়নি। ফোনে জানালেও ব্যবস্থা করেনি। ওখানে তারই প্রতিবাদ হয়েছে। পর্যটকদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করলে এ ভাবেই প্রতিবাদ করা উচিত।’’

চুঁচুড়ার ওই ভ্রমণ সংস্থার ব্যবস্থাপনায় পরিবার এবং প্রতিবেশীদের নিয়ে গত ১৯ এপ্রিল কেরলে যান বিনয়। সেখানে কার্যত সব বন্দোবস্তই তাঁদের না-পসন্দ হওয়ায় গোল বাধে। ভ্রমণ সংস্থার কর্মীদের অভিযোগ, মঙ্গলবার দুপুরে মোটরবাইকে তৃণমূলের বেশ কিছু লোক চড়াও হন। একাধিক বাইকে ‘পুলিশ’ লেখা ছিল। কাউন্সিলর এবং তাঁর দলবলের জন্য উপযুক্ত পরিষেবার ব্যবস্থা কেন করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলে তাঁরা সুর চড়ান। দু’পক্ষের বাগবিতন্ডা হয়। উত্তেজনা ছড়ায়। চুঁচুড়া থানার পুলিশ চলে আসে। পুলিশ আসতেই অবশ্য বিক্ষোভকারীদের অনেকে বাইক ছুটিয়ে চলে যান।

ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধার অলোক পাঠকের বক্তব্য, ‘‘খুব অল্প সময়ে ওঁদের বেড়াতে যাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়। প্রথমেই জানানো হয়েছিল, এত চটজলদি ব্যবস্থায় একটু মানিয়ে নিতে হবে। অসুবিধা হলে সমাধানের জন্য এক জন ম্যানেজারকেও পাঠানো হয়। তা সত্বেও তৃণমূলের লোকজন দলের ঝান্ডা হাতে, পুলিশ লেখা মোটরবাইকে এসে কার্যালয়ে চড়াও হল। এটা দুর্ভাগ্যের।’’

চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সামাল দেয়। থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ হয়নি। হলে, সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’

রাজনৈতিক মহলে অবশ্য বিষয়টি শোরগোল ফেলেছে। চন্দননগরের সিপিএম নেতা হীরালাল সিংহের অভিযোগ, ‘‘সব বিষয়ে দলকে কাজে লাগানো শাসক দলের নেতাদের রুটিন ব্যাপার। তাঁদের পোষা অসামাজিক লোকেরা সুযোগ পেলেই অপছন্দের জায়গায় চড়াও হয়।’’ বিজেপি নেতা সুরেশ সাউয়ের বক্তব্য, ‘‘মওকা পেলেই শাসক দলের গুন্ডাবাহিনী হুজ্জুতি করে। এই ঘটনা তারই সংযোজন মাত্র। দুর্নীতিতে জর্জরিত দলটার রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই। এ ভাবেই ওদের চলছে।’’

গোটা ঘটনায় তৃণমূল নেতৃত্ব অস্বস্তিতে। চন্দননগরের ডেপুটি মেয়র তথা শহর তৃণমূল সভাপতি মুন্না আগরওয়ালের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিক্ষোভের কথা জানা নেই। পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ থাকলে আলোচনা করে মেটানো উচিত। দলীয় পতাকা নিয়ে এমন কিছু করা ঠিক নয়, যাতে দলের বদনাম হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’

TMC Chandannagar Protest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy