E-Paper

হোটেল-রেস্তরাঁয় খাবারের গুণমান বজায় রাখতে প্রশিক্ষণ হাওড়ায়

এ বার থেকে হোটেল, রিসর্টগুলিকে ফুড সেফটির প্রশিক্ষণ দেবে স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যেই কর্মশালার মাধ্যমে এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:০৪

—প্রতীকী চিত্র।

হাওড়া শহরের আনাচেকানাচে গড়ে উঠছে ছোট-বড় নানা খাবারেরদোকান, হোটেল ও রেস্তরাঁ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই রেস্তরাঁগুলি হাওড়া পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স যেমন করায়নি, তেমনই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের থেকে ফুড সেফটির প্রশিক্ষণও নেয়নি। এই সমস্যা মেটাতে পুরসভা যেমন এলাকায় শিবির করে ট্রেড লাইসেন্স দেবে, তেমনই এই সব রেস্তরাঁকে ফুড সেফটির প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পাশাপাশি, খাবারে ভেজাল রুখতে শুরু হয়েছে ‘ইট রাইট ক্যাম্পাস’।

কোভিড পরবর্তী সময়ে দেখা গিয়েছে, শহরের অলিগলিতে দ্রুত গজিয়ে উঠেছে অজস্র খাবারের দোকান, গুমটি, ছোট রেস্তরাঁ। কিন্তু এই সব খাবারের দোকানে কতটা গুণমান বজায় রেখে খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে, খাবার তৈরিতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা— সে সম্পর্কে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্সস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই)-এর নির্দিষ্ট মানদণ্ড থাকলেও স্বাস্থ্য দফতরের নজরদারি সে ভাবে ছিল না। এ বার থেকে হোটেল, রিসর্টগুলিকে ফুড সেফটির প্রশিক্ষণ দেবে স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যেই কর্মশালার মাধ্যমে এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কিশলয় দত্ত বলেন, ‘‘নজরদারি সব সময়েই ছিল। কিন্তু এ বারপরিকল্পিত ভাবে রেস্তরাঁগুলির রান্নাঘরে এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। প্রশিক্ষণের শেষে সেই হোটেল বা রিসর্ট কর্তৃপক্ষ আশপাশের ছোট ছোট রেস্তরাঁগুলিকেও যাতে প্রশিক্ষণ দিতে পারে, সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’’

এর আগে এফএসএসএআই মূলত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র, হাসপাতালের ক্যান্টিনগুলিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রান্না করা ও স্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশনের ব্যাপারে প্রচারের উদ্দেশ্যে ‘ইট রাইট ক্যাম্পাস’ কর্মসূচি চালু করেছিল। এই ধরনের জায়গায় যে সমস্ত সংস্থা রান্না করা খাবার পরিবেশনের দায়িত্বে রয়েছে, তাদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল এই কর্মসূচিতে। তবে শুধুমাত্র স্কুল-কলেজ-হাসপাতালেই নয়, এখন থেকে হোটেল-রেস্তরাঁগুলিতেও একই ভাবে ‘ইট রাইট ক্যাম্পাস’ কর্মসূচি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যেই হাওড়ার বিভিন্ন হোটেল ও রেস্তরাঁর শেফ, কর্মীদের নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম পর্বে সেখানে ১০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে এমন আরও কর্মশালা করতে চায় স্বাস্থ্য দফতার।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, এই সব রেস্তরাঁগুলিতে ভোজ্য তেল, গুঁড়ো মশলার ক্ষেত্রে ভেজাল ব্যবহৃত হচ্ছে কিনা, তা যেমন দেখা হবে, তেমনই সেই বিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে রেস্তরাঁ কর্মীদের। কিশলয় জানান, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশনের লক্ষ্যমাত্রার পাশাপাশি এই গোটা কর্মসূচির মাধ্যমে ছোট রেস্তরাঁগুলিকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনতে চাইছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বিশেষ অভিযান চালিয়ে ছোট-বড় রেস্তরাঁ, ক্যাফে, ক্লাউড কিচেন মিলিয়ে জেলার প্রায় তিন হাজার খাবার ব্যবসায়ীকে গত এক বছরে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা হয়েছে। পাশাপাশি, হাওড়ার ১৬ ও ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশেও তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন হোটেল-রেস্তরাঁ। এই ধরনের অভিজাত হোটেলগুলিতেও ‘ইট রাইট ক্যাম্পাস’ শুরু করছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Food Food Quality

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy