কর্মবিরতির চতুর্থ দিন। — নিজস্ব চিত্র।
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে হুগলির চাঁপদানি পুরসভার অস্থায়ী সাফাইকর্মীদের কর্মবিরতি মঙ্গলবার চতুর্থ দিনে পড়ল। পুর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় সমাধান না মেলায়, এ দিন তাঁরা স্থানীয় বিধায়ক তথা তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের কার্যালয়ে যান। সেখানে বিধায়ককে না পেয়ে শতাধিক সাফাইকর্মী প্ল্যাকার্ড ও তৃণমূলের পতাকা হাতে মিছিল করে তাঁর বাড়িতে যান। সেখানেও বিধায়কের দেখা না মেলায় তাঁরা ফিরে যান।
সোমবার পুরভবনের গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা। পরে, পুর-কর্তৃপক্ষ তাঁদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। পুরসভা সূত্রে খবর, তাঁদের দাবিপূরণের বিষয়টি নিয়ে পুরপ্রধানের তরফে তিন মাস সময় চাওয়া হলে, তা মানতে রাজি হননি আন্দোলনকারীরা। বেতন বৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে, এই অবস্থানে তাঁরা অনড়।
পুরকর্তারা জানান, স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে ৪০৬ জন সাফাইকর্মী আছেন। তার মধ্যে অস্থায়ী ৩২৯ জন। স্থায়ী মাত্র ৭৭ জন। পুর-কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, অস্থায়ীদের কেউ কেউ নামমাত্র কাজ করেই চলে যান। কেউ শুধুমাত্র হাজিরা দিয়েই মাসিক বেতন তোলেন। পুরপ্রধান সুরেশ মিশ্র বলেন, “সাফাইকর্মীদের দৈনিক ন্যূনতম ৬ ঘন্টা কাজ করতে হবে। বিনা কাজে বেতন তোলার প্রবণতা বন্ধ করতে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই পদ্ধতি চালু হতে আড়াই-তিন মাস সময় লাগবে। ওঁরা এ টুকু সময় দিতেও নারাজ। ওঁদের সব শর্ত মানা যাবে না।”
বিধায়কের বক্তব্য, ‘‘পুরপ্রধানের কথায় অস্থায়ী সাফাইকর্মীরা সন্তুষ্ট নন। সেই কারণেই ওঁরা আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তখন বাইরে থাকায় কথা হয়নি। নিশ্চয়ই তাঁদের কথা শুনব। সমস্যার দ্রুত সমাধানেরও চেষ্টা করব।’’
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, পুর-কর্তৃপক্ষের কথায় তাঁদের কয়েক জনকে ফাঁড়িতে ডেকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর ভয় দেখাচ্ছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে সুনীল হরি, দুর্গা বাঁশফড় ও দিলীপ বাঁশফড়কে ইতিমধ্যেই শো-কজ়ের নোটিস ধরিয়েছে পুরসভা। আন্দোলনকারীদের দাবি, একাধিক বার আশ্বাস দিলেও বেতন বাড়ানো হয়নি। কাজে ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। বাইরে থেকে ঠিকাশ্রমিক এনে বেশি বেতনে কাজ করানো হচ্ছে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে তাঁরা সামান্য বেতনে কাজ করছেন। পুরসভা বাড়তি কোনও সুযোগ-সুবিধা দেয় না। দুর্মূল্যের বাজারে সংসার চালাতে তাঁরা হিমশিম খাচ্ছেন। সুনীল বলেন, “আমরা ন্যায্য পারিশ্রমিক দাবি করেছি। অধিকারের লড়াই ভয় দেখিয়ে দমানো যাবে না।”
পুলিশের দাবি, যাঁরা স্বেচ্ছায় কাজ করতে চাইছেন, আন্দোলনকারীরা তাঁদের বাধা দিচ্ছিল। পুর-কর্তৃপক্ষ বিষয়টি থানায় জানালে আন্দোলনকারীদের কয়েক জনকে ডেকে কাজে বাধা দিতে নিষেধকরা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy