—প্রতীকী চিত্র।নি
প্রায় আড়াই মাস পরে বেতন হয়েছিল। কিন্তু, বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই হুগলি নদী জলপথ পরিবহণের কর্মীদের প্রায় তিন মাসের ওভারটাইমের টাকা না দেওয়ার আঁচ পড়ল পরিষেবায়। হাওড়া লঞ্চঘাট থেকে ছাড়া সমস্ত ফেরি পরিষেবা বন্ধ করে দিলেন হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির কর্মীরা। মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় নাজেহাল হন অসংখ্য যাত্রী। পরে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে দুপুর ২টোর পরে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়।
জলপথ পরিবহণে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ‘হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি’। গত পাঁচ বছর ধরে চলা অর্থনৈতিক সঙ্কটের জেরে অনিয়মিত বেতন-সহ নড়বড়ে অবস্থা সংস্থার। এ সব নিয়ে কর্মীদের ক্ষোভ দানা বেঁধেছিল। তারই ফলস্বরূপ এ দিনের প্রতিবাদ। এ দিন বেলায় হাওড়া ফেরিঘাটে গিয়ে যাত্রীরা দেখেন, টিকিট কাউন্টার বন্ধ। কর্মীরাও নেই। একই অবস্থা বাবুঘাট, ফেয়ারলি প্লেস, আর্মেনিয়ান, চাঁদপাল, বাগবাজার, শোভাবাজার, আহিরীটোলা ঘাটে। অফিসের ব্যস্ত সময়ে লঞ্চ না পেয়ে হাওড়া থেকে কলকাতা কিংবা কলকাতা থেকে হাওড়ায় আসা যাত্রীরা চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হন। অবশেষে কর্তৃপক্ষের থেকে আশ্বাস পেয়ে দুপুর ২টোর পরে ফের পরিষেবা শুরু হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সূত্রের খবর, এই সমবায় সমিতিতে কাজ করেন ৩২০ জন কর্মী। হুগলি নদী জলপথ সমবায় সমিতির ওই কর্মীদের অভিযোগ, ২০১৫ সালে দুর্নীতি ধরা পড়ায় এর কর্মসমিতি ভেঙে দেয় রাজ্য সরকার। রাজ্য সমবায় দফতর পাঁচ বছর ধরে সমিতির কোনও নির্বাচন করেনি। ২০১৮ সাল থেকে প্রশাসকমণ্ডলী দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। কর্মীদের অভিযোগ, গত পাঁচ-সাত বছর ধরে লঞ্চগুলির রক্ষণাবেক্ষণ হয়নি। কাঠের লঞ্চের ভাড়া বকেয়া ১৮ লক্ষ টাকা। তেলের দাম বকেয়া রয়েছে ২৫-২৭ লক্ষ টাকা। কর্মীদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটি বকেয়া ৫০ লক্ষ টাকারও বেশি। ক্রেডিট কোঅপারেটিভে রয়েছে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা।
আরও অভিযোগ, দীর্ঘদিন ওই সমিতিতে কোনও অডিট হয়নি। এমনকি চলতি বছরের জানুয়ারিতে পরিবহণ দফতর লঞ্চগুলির রক্ষণাবেক্ষণে যে ২৩ লক্ষ টাকা দিয়েছিল, তারও যথাযথ হিসাব নেই বলে অভিযোগ।
এই সবের মধ্যে এ মাসে হওয়া বেতনের সঙ্গে ওভারটাইমের টাকা না পাওয়ায় ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে কর্মীদের। তাঁরা প্রতীকী ধর্মঘট হিসেবে এ দিন তিন ঘণ্টা পরিষেবা বন্ধ করে দেন। সঞ্জয় পাত্র নামে হাওড়া ফেরিঘাটের এক লস্কর বলেন, ‘‘আমাদের বেতন মাত্র ৭-৮ হাজার টাকা। সেটাও অনিয়মিত। তার উপরে বিনা নোটিসে কর্তৃপক্ষ ওভারটাইমের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে প্রতীকী ধর্মঘট করে লঞ্চ পরিষেবা বন্ধ করা হয়।’’
সমবায়ের কর্তারা অবশ্য কর্মচারীদের অভিযোগ ও দাবি মানতে নারাজ। এ দিন সমবায়ের এক কর্তা বলেন, ‘‘দিন দিন ডিজ়েলের দাম বাড়লেও যাত্রীদের টিকিটের ভাড়া ছ’টাকাই রয়েছে। তার মধ্যেও যাসামান্য আয় হচ্ছে, তাতে কর্মীদের বেতন নিয়মিত দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।এ মাসে ওভারটাইমের টাকা দিতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। তবেআগামী শনিবারই ওই টাকা দিয়ে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy