Advertisement
E-Paper

আলুর দামেও ছ্যাঁকা, হুগলিতে ট্রিপল সেঞ্চুরি কাঁচালঙ্কার, ঢেঁড়শ ৭০

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২০ ০৩:৩২
লকডাউনের পরের দিন বাজারে ভিড়। রবিবার গোঘাট কামারপুকুরের ডাকবাংলোতে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

লকডাউনের পরের দিন বাজারে ভিড়। রবিবার গোঘাট কামারপুকুরের ডাকবাংলোতে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

টানা লকডাউনেও যা হয়নি, এখন তা-ই হচ্ছে।

রাজ্য সরকার আলুর দাম বেঁধে দিয়েছে। কেজিপ্রতি ২৫ টাকা (জ্যোতি)। কিন্তু কোথায় সরকারি নির্দেশ! আলুর দাম গেরস্থকে কাঁদিয়ে ছাড়ছে।

রবিবার হুগলির বিভিন্ন বাজারে চন্দ্রমুখী আলুর দাম পৌঁছেছে কেজিপ্রতি ৩৫ টাকায়। জ্যোতি ৩০ টাকায়। হাওড়াতেও প্রায় একই ছবি। বাঙালির হেঁশেলে আলুর গুরুত্ব অপরিসীম। অথচ, দিন দিন আলু যে ভাবে মহার্ঘ হয়ে উঠছে তাতে দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়েছে আমবাঙালির। হুগলিতে অন্যান্য আনাজের দরও ঊর্ধ্বমুখী। শুক্রবারই যে কাঁচালঙ্কা ছিল ১০০ টাকা কেজি, এ দিন বিকিয়েছে ৩০০-৪০০ টাকায়। দাম শুনে অনেক ক্রেতাই হাত গুটিয়ে নিয়েছেন। ঢেঁড়়শ বিকিয়েছে ৭০ টাকায়। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে টোম্যাটো।

হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের থেকে আলু যাতে বেশি দামে বিক্রি না হয়, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। আলু-সহ আনাজের দাম নিয়ে আজ, সোমবার নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি এবং কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। ফড়ে বা অসাধু ব্যবসায়ীরা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণ করছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে।

জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘দাম যাতে ঠিক থাকে তা নিশ্চিত করতে বাজারে অভিযান চালানো হবে। প্রয়োজনে পুলিশের সাহায্য নেওয়া হবে।’’

ব্যান্ডেলের আলু ব্যবসায়ী সুব্রত দাস বলেন, ‘‘হিমঘর থেকে চড়া দামে আলু বিক্রি হচ্ছে। বেশি দামে কিনে সরকার নির্ধারিত মূল্যে বেচব কী করে?’’ এ দিন অবশ্য চুঁচুড়ায় রাজ্য সরকারের ‘সুফল বাংলা’ প্রকল্পে ২৫ টাকা কেজিতেই জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে। ক্রেতাদের লাইন পড়ে সেখানে। এক জন সর্বাধিক ৩ কেজি আলু কিনতে পেরেছেন।

আনাজের দামও বাড়ছে কেন?

ভদ্রেশ্বরের বিঘাটির সঞ্জয় কোলে বৈদ্যবাটী রেলগেটের কাছে আনাজ বিক্রি করেন। তিনি আনাজ কেনেন বৈদ্যবাটীর হাট থেকে। তাঁর কথায়, ‘কোনও আনাজেই হাত দেওয়া যাচ্ছে না।’’ শেওড়াফুলির এক পাইকারি আনাজ বিক্রেতা বলেন, ‘‘লকডাউনে অন্য রাজ্য থেকে আনাজ আসতে পারেনি। জোগান কমায় দাম অগ্নিমূল্য। লকডাউন হলেও আনাজের গাড়ি ছাড় দেওয়া উচিত। না হলে এমনই হবে।’’ একই বক্তব্য কামারপুকুর ডাকবাংলো এলাকার আনাজ বিক্রেতা সঞ্জয় বৈরাগীর।

তবে, ছোট ব্যবসায়ী বা সাধারণ মানুষের অনেকের অভিযোগ, পরিস্থিতিকে ঢাল করে যে যেমন খুশি দর হেঁকেছেন। দাম নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবিও উঠছে।

হাওড়ার বাগনানের আলুর এক পাইকারি ব্যবসায়ীরও দাবি, বড় ব্যবসায়ীরাই বেশি দাম হাঁকছেন। তিনি জানান, রবিবার ১ প্যাকেট (৫০ কেজি) জ্যোতি আলু বিক্রি করেছেন ১৩২০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে দাম ছিল ১২৩০ টাকা।

জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমেশ পাল বলেন, ‘‘গত নভেম্বরে বুলবুল ঝড়ের পরে চাষিরা খুব বেশি আলু বসাননি। হাওড়ায় এ বার ২৫% কম জমিতে আলু চাষ হয়েছে। মনে হচ্ছে সেই কারণেই জোগানে টান পড়েছে। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সুযোগ নিচ্ছেন।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘সরকার নির্ধারিত মূল্যের থেকে বেশি দামে আলু বিক্রি হচ্ছে কিনা, তা দেখতে টাস্কফোর্স বাজারে হানা দেবে।’’

আলুর দাম বাড়লেও হাওড়ায় অন্যান্য আনাজের দাম খুব একটা বাড়েনি। গত এক সপ্তাহ ধরে দাম কমবেশি একই আছে বলে আনাজ বিক্রেতারা জানিয়েছেন।

Vegetables Potato
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy