সঙ্গে আছি: কেশিয়াড়ির সভায় মুখ্যমন্ত্রী। ছবি:দেবরাজ ঘোষ
উন্নয়ন হোক বা পরিষেবা— কিছু পেতে হলে তাঁর সঙ্গে থাকতে হবে। সোমবার কেশিয়াড়ির মঞ্চ থেকে এমনই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট ঘোষণা, ‘‘২ টাকা কিলো চাল পেতে রাজ্য সরকারকে লাগে, হাসপাতালে বিনা পয়সায় চিকিৎসা পেতে রাজ্যকে লাগে, শিক্ষাশ্রী পেতে রাজ্যকে লাগে, রাস্তাঘাট তৈরি করতে রাজ্যকে লাগে। সবটাই রাজ্য করে। তাই স্কলারশিপ পেতে, কন্যাশ্রী-রূপশ্রী পেতে, সবুজসাথীর সাইকেল পেতে রাজ্যের কাছেই আসতে হবে, আমার কাছে আসতে হবে।’’
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল। কেশিয়াড়ি বিধানসভা এলাকাও তফসিলি সংরক্ষিত। সেখানে দাপট দেখিয়েছে বিজেপি। তাই কেশিয়াড়ির তেলিপুকুর মাঠের প্রশাসনিক জনসভা থেকে মমতার এই বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, কেশিয়াড়ির সভামঞ্চ থেকে বস্তুত গোটা রাজ্যবাসীকেই, বিশেষ করে আদিবাসীদের এই বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন বারবারই আদিবাসী প্রসঙ্গে ফেরেন মমতা। মনে করিয়ে দিয়েছেন, পিছিয়ে পড়া এই সম্প্রদায়ের উন্নয়নের তাঁর সরকার কতটা সক্রিয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘স্কুলে স্কুলে সাঁওতালিতে পঠনপাঠন চালু করেছে কে? আমাদের সরকার, তৃণমূলের সরকার। প্যারাটিচার দিয়ে স্কুলে সাঁওতালি পড়াচ্ছে কে? সাঁওতালি ডিকশনারি তৈরি করেছে কে? মা-মাটি-মানুষের সরকার।’’ বিজেপিকেও বিঁধতে ছাড়েননি। মমতার মন্তব্য, ‘‘ঝাড়খণ্ডে ওরা আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেয়। রাজ্যে আমরা আদিবাসীদের জমি যাতে কেউ কেড়ে নিতে না পারে তার জন্য আইন করেছি।’’
আরও পড়ুন: বিরোধী তালুকে জেলা পরিষদকে কাজের নিদান
গত সেপ্টেম্বরে কেশিয়াড়ি ঘুরে যান কেন্দ্রের প্রতিমন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল। মুখ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিত, বাইরের নেতাদের এনে কেশিয়াড়িতে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। মমতা বলেন, ‘‘এখানে এসে যারা আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করে তাদের বেশিরভাগই ঝাড়খণ্ডের লোক। কখনও কখনও দিল্লির কোনও নেতা আসে। বসন্তের কোকিলের মতো। গালাগালি দিয়ে আবার চলে যায়। আগুন লাগিয়ে দিয়ে যায়।’’
ঝাড়গ্রামের সাংসদ উমা সরেনকে এ দিনের সভায় বক্তৃতা করার সুযোগ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। উমা সাঁওতালিতে বক্তৃতা করেন। কেশিয়াড়ির আদিবাসী জনগোষ্ঠীর একটা অংশ খ্রিস্টান। এখানে গির্জা, মিশনারি স্কুল, হোমও রয়েছে। মমতা এ দিন বার্তা দিয়েছেন তাঁদেরও। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমরা জহরথান করে দিই, দরকার হলে মাদার টেরিজার নামে মাদার মিউজিয়ামও তৈরি করি। আমার খ্রিস্টান ভাইবোনেরাও সংখ্যায় অনেক আছেন। তাঁরাও ভাল কাজ করেন। যাঁরা হোম, স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালান, তাদের সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy