Advertisement
E-Paper

ব্যবসার নতুন নতুন দিগন্ত খুলে দেবে জগন্নাথ মন্দির! দিঘাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় অর্থনীতিতে জোয়ারের আশায় অনেকেই

আগামী বুধবার অক্ষয়তৃতীয়ায় দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন। এর হাত ধরে দিঘা-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে বলেই মনে করছেন হোটেল ব্যবসায়ী থেকে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা।

জগন্নাথ মন্দিরের জন্য দিঘায় আরও পর্যটকের ঢল নামবে বলে আশাবাদী হোটেল ব্যবসায়ীরা।

জগন্নাথ মন্দিরের জন্য দিঘায় আরও পর্যটকের ঢল নামবে বলে আশাবাদী হোটেল ব্যবসায়ীরা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:২৬
Share
Save

দু’-তিন দিনের ছুটিতে বেড়ানোর জন্য রাজ্যবাসীর অন্যতম পছন্দ দিঘা। শীত হোক বা বর্ষা, গ্রীষ্ম হোক বা বসন্ত, সপ্তাহান্তের ছুটিতে সৈকতশহরে পর্যটকের ভিড় থাকে নজরকাড়া। রাজ্যে পালাবদলের পর দিঘার চেহারাতেও অনেক বদল এসেছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এলাকার আর্থিক সমৃদ্ধিও। এ বার দিঘার মুকুটে যোগ হচ্ছে জগন্নাথ মন্দির, যার হাত ধরে দিঘা-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে বলেই মনে করছেন হোটেল ব্যবসায়ী থেকে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা।

আগামী বুধবার অক্ষয়তৃতীয়ায় দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিক ভাবে মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটনের পরেই তা সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সোমবারই দিঘা পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘‘দিঘায় সমুদ্র রয়েছে। সমুদ্রে লোকজন বেড়াতে আসেন। এখানে একটা তীর্থস্থান হলে লোকজনকে আরও আকৃষ্ট করবে। আধ্যাত্মিকতা আর সম্প্রীতির মেলবন্ধন হয়ে উঠবে এই জগন্নাথধাম। দিঘার জন্য এটা ভালই হবে।’’

এমনটা মনে করছেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, একটা সময় যাতায়াতের সমস্যা, পরিকাঠামোগত অনুন্নয়নের কারণে দিঘায় পর্যটকদের বিশেষ আনাগোনা ছিল না। সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে ডুবে যেত দিঘার সমুদ্রসৈকত। ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘায় যেতে চাইতেন না অধিকাংশ পর্যটক। এখন সময় বদলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে আমূল বদলেছে দিঘার চেহারা। ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘার বিস্তীর্ণ সৈকত এখন বাঁধানো, আলো ঝলমলে। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অস্থায়ী স্টলগুলি এখন সাজানো-গোছানো। পাকা রাস্তা থেকে শুরু করে পর্যটকদের জন্য সুরক্ষাব্যবস্থা, উন্নত মানের হোটেল সব কিছুই রয়েছে দিঘায়। রেলপথে উত্তরবঙ্গ-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত জুড়ে যাওয়ায় দিঘার জনপ্রিয়তাও বেড়েছে। পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কারণেই দিঘায় পর্যটকের ভিড় আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। জগন্নাথ মন্দিরের কারণে ওই জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন হোটেল ব্যবসায়ীদের একাংশ।

দিঘার হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “গত কয়েক বছরে দিঘায় পর্যটকদের ভিড় অনেক গুণ বেড়েছে। মাঝে অতিমারির কারণে দিঘার হোটেল ব্যবসা বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল। কিন্তু খুব কম সময়ের মধ্যেই সেই খারাপ সময় কাটিয়ে উঠেছি আমরা। পর্যটকেরা আবার দিঘামুখী হয়েছেন। এ বার জগন্নাথধামও যে দিঘার পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে, তাতে সন্দেহ নেই। এই মন্দিরের টানে দিঘায় পর্যটকদের ভিড় আরও বেশি হবে।’’

দিঘার স্টেশনারি ব্যবসায়ী দীপক বারিক বলেন, ‘‘আমাদের ব্যবসাও আগের চেয়ে অনেকটা বাড়বে। তবে এখন স্টলগুলিকে সমুদ্রের পার থেকে সরিয়ে বাজারের ভিতর নিয়ে আসা হয়েছে বলে বিক্রিবাটা খানিক ধাক্কা খাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসন ভাবনাচিন্তা করলে ছোট ব্যবসায়ীদের কিছুটা উপকার হয়।’’

রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরিরও মত, ‘‘দিঘা পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে এখন অনেক বেশি আকর্ষণীয়। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে সৈকতনগরী এখন অনেক বেশি ঝাঁ-চকচকে। কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ দিঘার সমুদ্রে আসেন। জগন্নাথদেবের মন্দিরের জন্য পর্যটকদের সেই ঢল আরও বাড়বে। এ বার জগন্নাথদেবের ভক্তেরাও বার বার দিঘায় আসবেন। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই দিঘার আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে আগামী দিনে।’’

বিজেপির স্টেট এগ্‌‌জ়িকিউটিভ কমিটির সদস্য, কাঁথির নেতা অনুপকুমার চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, ‘‘পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। গোটা বিশ্বের মানুষ পুরীতে যান পুণ্যলাভের আশায়। দিঘায় জগন্নাথ মন্দির ও সংস্কৃতিকেন্দ্র গড়ে তুলে একে আধ্যাত্মিক আঙ্গিক দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এটা আমরা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারি না। দিঘা পর্যটনকেন্দ্র। তাই কোনও ভাবেই আধ্যাত্মিকতার জায়গা হয়ে উঠবে না।’’

Digha Jagannath Temple Jagannath Temple inauguration

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}