Advertisement
E-Paper

দিঘায় জগন্নাথের মন্দিরে মাত্র সাড়ে ৩ দিনে ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী! দাবি ইসকনের রাধারমণের, পুজো হচ্ছে বাংলার মডেলেই

প্রত্যহ সকাল ৬টার সময়ে খুলে যাচ্ছে মন্দিরের মূল ফটক। দুপুর ১টা পর্যন্ত পুণ্যার্থীরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন। তার পরে দু’ঘণ্টা বন্ধ থাকছে মন্দির। ফের খুলছে বেলা ৩টের সময়। খোলা থাকছে রাত ৯টা পর্যন্ত।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৫ ১৮:০২
More than 1 million people visited the Jagannath temple in Digha in three and a half days, claimed Kolkata ISKCON vice president Radharaman Das

অক্ষয়তৃতীয়ার সন্ধ্যায় দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরে পুণ্যার্থীদের ভিড়। —ফাইল চিত্র।

কথায় বলে, দিনের শুরুটা দেখলে বোঝা যায় বাকি দিনটা কেমন যাবে! গত বুধবার অক্ষয়তৃতীয়ায় দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটনের পরে উপচে পড়েছিল ভিড়। শনিবার বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ ইসকন কলকাতার ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা মুখপাত্র দিঘার মন্দির থেকেই দাবি করলেন, এই সাড়ে তিন দিনে ১০ লক্ষের বেশি পুণ্যার্থী গিয়েছেন মন্দিরে।

শনিবার আনন্দবাজার ডট কমের তরফে রাধারমণের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘অক্ষয়তৃতীয়ার দিন মন্দিরে এসেছিলেন দু’লক্ষের বেশি মানুষ। বৃহস্পতিবার পুণ্যার্থীর সংখ্যা ছিল পাঁচ লক্ষের বেশি।’’ অর্থাৎ প্রথম দু’দিনেই পুণ্যার্থীর সংখ্যা সাত লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। রাধারমণ আরও বলেন, ‘‘শুক্রবারের হিসাব এখনও হাতে পাইনি। শনিবার রাত পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকবে। ফলে মোট সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে।’’ এমনিতেই সপ্তাহের শেষে দিঘায় পর্যটকের ভিড় অন্য সময়ের তুলনায় বেশি থাকে। ফলে শনি-রবিবার ভিড় আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

প্রত্যহ সকাল ৬টার সময়ে খুলে যাচ্ছে মন্দিরের মূল ফটক। দুপুর ১টা পর্যন্ত পুণ্যার্থীরা মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন। তার পর দু’ঘণ্টা বন্ধ থাকছে মন্দির। ফের খুলছে বেলা ৩টের সময়। খোলা থাকছে রাত ৯টা পর্যন্ত। পুরীর মন্দিরের আদলে দিঘার মন্দির তৈরি হলেও পুজো দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলার বিভিন্ন মন্দিরের মডেলই অনুসৃত হচ্ছে। রাধারমণ জানিয়েছেন, পুণ্যার্থীরা ডালা নিয়ে মন্দিরে পৌঁছোচ্ছেন। পূজারি পুজো করে সেই ডালা পুণ্যার্থীদের হাতে দিয়ে দিচ্ছেন। প্রতি দিন মধ্যাহ্নে জগন্নাথের উদ্দেশে ৫৬ ভোগ অর্পণ করা হচ্ছে। সেই ভোগ বিতরণ করা হচ্ছে পুণ্যার্থীদের মধ্যেও। তবে প্রণামীর জন্য নির্দিষ্ট বাক্স রয়েছে। কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হচ্ছে, কেউ প্রণামী দিতে চাইলে নির্দিষ্ট বাক্সেই যেন তা দেন।

মন্দিরে আগত পুণ্যার্থীদের ভিড় সামলাচ্ছেন রাজ্য পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। এক এক সময়ে তাঁদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে খবর। রয়েছেন ইসকনের স্বেচ্ছাসেবকেরাও। গত বুধবার সকাল ১১টা ১০ মিনিট থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে নিমকাঠের তৈরি জগন্নাথের মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা সম্পন্ন হয়েছিল। ওই ২০ মিনিটের মধ্যে রুদ্ধ দরজার ভিতরে পুরীর মন্দিরের রাজেশ দয়িতাপতির নেতৃত্বে পুরোহিতেরা প্রাণপ্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। দেবতার সর্বাঙ্গে কুশ স্পর্শ করানো হয়। এর পর বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ওই মন্দিরে পাথরের জগন্নাথ বিগ্রহে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেন ইসকনের সেবায়েতরা। বিকাল ৩টে ১২ মিনিটে মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন এবং প্রথম আরতি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মন্দির উদ্বোধনের পরের দিনই পুরীর পুরোহিতের দল ফিরে গিয়েছে। এখন সব সামলাচ্ছে ইসকনই। মুখ্যমন্ত্রী মমতাও ঘোষণা করেছিলেন যে, উদ্বোধনের পরেই মন্দিরের দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া হবে ইসকনের হাতে। আর মন্দিরের দেখভাল করবে একটি ট্রাস্ট।

দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন কর্মসূচি নিয়ে ইতিমধ্যেই ‘খোঁজখবর’ শুরু করেছে ওড়িশার বিজেপি সরকার। শনিবার ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রধান প্রশাসক অরবিন্দ কুমার পাধীকে চিঠি লিখে এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পুরীর জগন্নাথ বিগ্রহ নির্মাণে ব্যবহৃত নিমকাঠের ‘উদ্বৃত্ত’ দিয়ে দিঘার জগন্নাথ বিগ্রহ নির্মাণ করা হয়েছে বলেও জল্পনা ছড়িয়েছে। সেই জল্পনার মধ্যেই অবশ্য লক্ষ লক্ষ মানুষ যাচ্ছেন দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে।

Digha Jagannath Temple
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy