Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Jagdeep Dhankhar

‘এত নির্লজ্জ ভাবে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হল দেহ!’ ফের তোপ রাজ্যপালের

মৃতদেহগুলি কোভিড আক্রান্তদের কি না, সেটা কোনও বিষয় নয়। সমস্যা হল, সেগুলিকে টেনে ঘষটে নিয়ে যাওয়া, মন্তব্য রাজ্যপালের।

শ্মশান কাণ্ডে ফের রাজ্যকে আক্রমণ ধনখড়ের।

শ্মশান কাণ্ডে ফের রাজ্যকে আক্রমণ ধনখড়ের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২০ ১৪:০৭
Share: Save:

আঁকশি দিয়ে মৃতদেহ টেনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে চূড়ান্ত পর্বে নিয়ে যাবেন বলেই আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। গড়িয়া শ্মশান কাণ্ড নিয়ে একবার ফের সুর চড়ালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সকালে টুইটারে ফের সরব হন তিনি। গোটা ঘটনাটিকে অসংবেদনশীল এবং অমানবিক বলে উল্লেখ করেন। এ নিয়ে পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন বলে জানান ধনখড়।

এ দিন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘মর্মাহত! ভিডিয়োতে মৃতদেহ টেনে নিয়ে যাওয়ার হৃদয়বিদারক নির্মম দৃশ্য দেখে জনমনসে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে, তাতে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন বোধ করছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাজে আমি স্তম্ভিত। কলকাতা পুরসভার চেয়ারম্যান (প্রশাসক) এবং পুরসভা কমিশনারের কাছে আজ এ নিয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছি।’’

ধাপায় কোভিডে মৃতদের শেষকৃত্য নিয়েও মাঝে একটি বিতর্ক ছড়িয়েছিল। তবে সে বিতর্ক ভিত্তিহীন বলে কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যপাল এ দিন সে প্রসঙ্গও টেনে আনেন। জনমানসে এই সব ঘটনার প্রভাব কেমন হতে পারে, তা বিবেচনা করে গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আর্জি রাজ্যপাল জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে। মানুষের সংবেদনশীলতা ও এই ঘটনা কী প্রভাব ফেলতে পারে, তা মাথায় রেখে মানবিকতার সঙ্গেই গোটা ঘটনাটি বিবেচনা করে দেখতে আর্জি জানাচ্ছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তাকে পুলিশ দিয়ে দমন করা দুঃখজনক হবে বলেও রাজ্যপাল লিখেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের সংস্কৃতিতে মৃতদেহকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়। ধাপার ক্ষত মেটার আগেই এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক।’’

রাজ্যপালের টুইট।

আরও পড়ুন: গড়িয়া শ্মশানে ‘নিষ্ঠুরতা’য় রাজ্য জুড়ে তোলপাড়​

গড়িয়ার বোড়াল শ্মশান-চত্বরে গতকাল যে পচাগলা দেহগুলি সৎকারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়, সেগুলি কোভিড আক্রান্ত রোগীদের দেহ কি না, সে নিয়ে তরজা অব্যাহত। তবে রাজ্যপালের বক্তব্য, ‘‘মৃতদেহগুলি কোভিড আক্রান্তদের কিনা, সেটা কোনও বিষয়ই নয়। এটা তদন্তসাপেক্ষ ব্যাপার। সমস্যা হল, কতটা নির্মমভাবে মৃতদেহগুলি টেনে ঘষটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পশুদের চেয়েও খারাপ আচরণ করা হয়েছে মৃতদেহগুলির সঙ্গে। যাঁরা বিষয়টি থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছেন, একবার নিজেদের অন্তরাত্মা এবং বিবেকে উঁকি দিয়ে দেখুন। ভেবে দেখুন, মৃতদেহগুলি যদি আপনাদের পরিচিত কারও হত!’’

রাজ্যপালের টুইট।

ঘটনার সূত্রপাত বুধবার দুপুরে। ওই দিন দুপুর ১টা নাগাদ গড়িয়ার বোড়াল শ্মশান চত্বরে পুরসভার একটি গাড়িতে করে ১৩টি পচা-গলা দেহ সৎকারের জন্য আনা হয়। মৃতদেহগুলি থেকে চারিদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় টনক নড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের। শ্মশানের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এ ভাবে মৃতদেহ সৎকার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। তাঁদের বাধার মুখে পড়ে শেষমেশ দেহগুলি আঁকশি দিয়ে টেনে তুলে নিয়ে ফিরে যায় পুরসভার গাড়ি।

আরও পড়ুন: আতঙ্কে করোনা রোগীকে বন্দি রাখা হল ২০ ঘণ্টা

আঁকশি দিয়ে মৃতদেহ টেনে গাড়িতে তোলার সেই দৃশ্যই ক্যামেরাবন্দি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন স্থানীয়দের মধ্যে কেউ। বুধবার রাত থেকে তা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ে। অজ্ঞাতপরিচয় দেহগুলি কোভিড রোগীদের দেহ বলেও চাউর হয় সর্বত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE