Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Newtown

জয়পালদের স্বজনদেরও নাড়ির খোঁজ

আত্মীয়েরা। পুলিশ জানায়, পরিবারের লোকজনের হাতে নিহতদের দেহ তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

শহরে যশপ্রীত খারারের বাড়ির লোকেরা।

শহরে যশপ্রীত খারারের বাড়ির লোকেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২১ ০৬:২৩
Share: Save:

নিউ টাউনের ‘সুখবৃষ্টি’ আবাসনে গুলির লড়াইয়ে নিহত দুই পঞ্জাবি গ্যাংস্টারের ঠিকুজিকুলুজি নিয়ে তোলপাড় তো চলছেই। সেই সঙ্গে তাদের দেহ নিতে যে-সব আত্মীয়স্বজন কলকাতায় এসেছেন, তাঁদের সম্পর্কেও সবিস্তার খোঁজখবর নিচ্ছে রাজ্য পুলিশ। তাঁদের পরিচয়পত্র এবং অন্যান্য নথি যাচাইয়ের জন্য পঞ্জাব পুলিশের কাছে পাঠানো হচ্ছে। মূলত সেই জন্যই শুক্রবার দিনভর চেষ্টা করেও দু’জনের দেহ পাননি তাদের আত্মীয়েরা। পুলিশ জানায়, পরিবারের লোকজনের হাতে নিহতদের দেহ তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

বৃহস্পতিবার রাতে পাঞ্জাব থেকে নিহত দুষ্কৃতী জয়পাল সিংহ ভুল্লারের বাবা এবং তাঁর সঙ্গীরা টেকনো সিটি থানায় হাজির হন। শুক্রবার সকালে থানায় পৌঁছে যান নিহত অন্য দুষ্কৃতী যশপ্রীত খারারের পরিবারের লোকেরাও। তাঁরা থানার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। জয়পালের বাবার সঙ্গে আসা নরেন্দ্র পাল সিংহ জানান, সকাল থেকে তাঁরা অপেক্ষা করছেন। কিন্তু কখন দেহ মিলবে, সেটা স্পষ্ট করে জানাচ্ছে না পুলিশ। পর্যাপ্ত সহযোগিতা মিলছে না। পুলিশি সূত্রের খবর, এ দিন আরজি কর হাসপাতালে জয়পালের দেহ শনাক্ত করেন তার স্বজনেরা। এ দিন যশপ্রীতের দেহেরও শনাক্তকরণ হয়েছে। তার এক মাসি ও বোনকে থানায় কান্নাকাটি করতে দেখা যায়।

সিমরত পল নামে জয়পালের এক আত্মীয় জানান, ছ’ফুট দু’ইঞ্চি উচ্চতার জয়পাল মেধাবী ছাত্র ছিল। কনভেন্ট স্কুলে পড়াশোনার পরে কলা বিভাগে প্রথম শ্রেণি পেয়ে স্নাতক হয়। হ্যামার থ্রোয়িংয়ে রাজ্য স্তরে সুনাম অর্জন করেছিল সে। ১০-১২ বছর আগে কী ভাবে যে সে অপরাধজগতে ভিড়ে গিয়েছিল, সেটা সিমরতদের জানা নেই। ৮-৯ বছর ধরে পরিবারের সঙ্গে জয়পালের যোগাযোগ ছিল না। বিধাননগর পুলিশের এক কর্তা জানান, আত্মীয়দের হাতে দেহ তুলে দেওয়ার জন্য ‘পেপার ওয়ার্কস’ বা কাগজকলমের কাজ চলছে, সময় লাগবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এ দিন বিধাননগরের গোয়েন্দারা দুই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। দুই গ্যাংস্টারের গতিবিধি সম্পর্কে তাদের আত্মীয়দের কাছে কতটা কী তথ্য আছে, আদৌ আছে কি না, তা জানার চেষ্টা করা হয়।

জয়পালেরা নিউ টাউনের আবাসনে যে-ফ্ল্যাটে থাকত, সেটি সুমিত কুমারের নামে ভাড়া নেওয়া হয়েছিল বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। কিন্তু কী ভাবে সুমিতের নামে পরিচয়পত্র তৈরি হল, কী ভাবেই বা তার নথি যাচাই করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওই ফ্ল্যাটের মালিক আকবর আলি এবং তাঁর এক আত্মীয়কেও এ দিন টেকনো সিটি থানায় কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে পুলিশি সূত্রের খবর।

এ দিন ফরেন্সিকের একটি দল ফের নিউ টাউনের ওই আবাসনে যায়। ওই ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে আবার কিছু নমুনা সংগ্রহ করে তারা। পুলিশি সূত্রের খবর, স্রেফ পঞ্জাব পুলিশের নজর এড়াতে দুই দুষ্কৃতী কলকাতায় আশ্রয় নিয়েছিল, নাকি তাদের অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল, সেই বিষয়েও খোঁজখবর চলছে। দুই গ্যাংস্টার যে-ক'দিন ওই আবাসনে ছিল, তখন কেউ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই ফ্ল্যাটে ৭২টা ডিজিটাল প্লাস্টিক কার্ড, সিম বক্স পেয়েছে এসটিএফ। দুই দুষ্কৃতীর ল্যাপটপে পাওয়া সূত্র থেকে অনুমান করা হচ্ছে, তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে খোঁজখবর করছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Newtown Shootout
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE