ভাল বিচারের জন্য ভাল তদন্ত প্রয়োজন। অনেক তদন্তে তদন্তকারী অফিসারদের ভূমিকা সঠিক থাকছে না। এমনকি ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও তারতম্য লক্ষ করা যাচ্ছে। আদালতের বিচারের কাজ থেকে এমনই অভিজ্ঞতার কথা জানালেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। রবিবার ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল সায়েন্স (এনইউজেএস)-এর এক অনুষ্ঠানে যোগ তিনি। সেখানে ‘অপরাধবিদ্যা এবং ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা’ নামে একটি নতুন কোর্সের উদ্বোধন বিচারপতি। ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে অপরাধের ধরন পরিবর্তন হচ্ছে। পুলিশ, আইনজীবী এবং বিচারবিভাগকে সজাগ থাকতে হবে। অনেক অপরাধের তদন্ত সঠিক পথে হলে ভাল বিচার পাওয়া যায়। ভাল তদন্ত ও বিচারের জন্য সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ।" বিচারপতি ঘোষের পাশাপশি ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি সুগত মজুমদার, বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি (সাইবার অপরাধ) সঞ্জয় সিংহ।
আরও পড়ুন:
পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় দু’রকম ময়নাতদন্তের রিপোর্ট উঠে আসে। জেলার হাসপাতালে সঙ্গে কলকাতার হাসপাতালের রিপোর্টে পার্থক্য দেখা যায়। গত ১৯ অগস্ট ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি ঘোষের পর্যবেক্ষণ ছিল, ময়নাতদন্তের প্রথম রিপোর্ট বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এখন খুনের ধারায় মামলা দায়ের করতে হবে। রবিবার নাম না করে বিচারপতির ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘প্রায়ই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে অভিযোগ আসে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের রিপোর্টে ও মতামতে পার্থক্য থাকছে। দু’টি ময়নাতদন্তের দুই রকম রিপোর্ট অবাক করে দেয়।’’ সাইবার অপরাধের তদন্তে তদন্তকারী অফিসারদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন বিচারপতি। তাঁর কথায়, ‘‘সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে কী কী বাজেয়াপ্ত করতে হবে আর কী নয়, তা নিয়ে তদন্তকারী অফিসারেরাও ঘাবড়ে যাচ্ছেন।’’ বিচারপতি মনে করেন, এই ধরনের কোর্সে ওই সব তদন্তের কাজে সুবিধা হবে।
দুই বছরের জন্য স্নাতকোত্তরস্তরে ‘অপরাধবিদ্যা এবং ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা’ কোর্সটি করাবে এনইউজেএস। অনলাইন পদ্ধতিতে এই কোর্স করা যাবে। আইনের পড়ুয়া ছাড়া যে কেউ এই কোর্স করতে পারবেন।