Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
সেতুর জমি রাজ্যকে

ট্রেলারে রাশ কিছুটা ঢিলে, নরম বন্দরও

বরফ কিছুটা গলল দু’তরফেই। বন্দরে অচলাবস্থা কাটাতে দিনের বেলা ট্রেলার-লরি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ কিছুটা শিথিল করল কলকাতা পুলিশ। দুপুরে চার ঘন্টার জন্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে মঙ্গলবারই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৫৪
Share: Save:

বরফ কিছুটা গলল দু’তরফেই। বন্দরে অচলাবস্থা কাটাতে দিনের বেলা ট্রেলার-লরি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ কিছুটা শিথিল করল কলকাতা পুলিশ। দুপুরে চার ঘন্টার জন্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে মঙ্গলবারই। পাশাপাশি চা ও শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কন্টেনার বন্দরে ঢোকা-বেরনোর ক্ষেত্রে কোনও নিষেধাজ্ঞা রাখা হচ্ছে না। নবান্নের এ হেন ইতিবাচক মনোভাব দেখে বন্দর কর্তৃপক্ষও রাজ্যের কয়েকটি আটকে থাকা প্রকল্পে ছাড়পত্র দিতে রাজি হয়েছেন। বস্তুত এ দিনই নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের হাতে মহেশতলা উড়ালপুলের জন্য জমি দেওয়ার সম্মতিপত্র তুলে দিয়েছেন কেপিটি’র চেয়ারম্যান এম টি কৃষ্ণবাবু।

পরে এক সাংবাদিক বৈঠকে বন্দর-চেয়ারম্যান বলেন, ‘’২৪ সেপ্টেম্বর থেকে যান নিয়ন্ত্রণের দরুণ লরি-ট্রেলার চলাচল বন্ধ হওয়ায় বন্দরে পণ্য খালাস ২৬% কমে গিয়েছে। এতে পূর্বাঞ্চলে বেশ কিছু পণ্য সরবরাহে সমস্যা হচ্ছিল। দু’পক্ষে কথা হওয়ায় সমস্যা অনেকটাই মিটে যাওয়ার আশা।’’ তাঁর প্রতিশ্রুতি— সরকারের প্রকল্পগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বন্দরের যা যা করণীয়, তা সময় বেঁধে করা হবে।

কেপিটি চেয়ারম্যান অবশ্য এ-ও জানিয়েছেন, বন্দর এলাকার রাস্তা সারাইয়ের জন্য তিন মাস সময় চাওয়া হলেও মাত্র চার দিনের মধ্যে সেই কাজ শেষ করতে সরকারের তরফে ২০ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। ‘‘এটা কেন, তা বোধগম্য হচ্ছে না।’’— মন্তব্য কৃষ্ণবাবুর। নগরোন্নয়নমন্ত্রীর পাল্টা দাবি: বন্দর কর্তৃপক্ষকে পাঁচ বছর ধরে রাস্তা সারাতে বলা হচ্ছে। ওঁরা কিছু করেননি। খারাপ রাস্তার জন্য পথ দুর্ঘটনায় এক বছরে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাধ্য হয়েই দিনের বেলায় লরি-ট্রেলার চলাচল বন্ধ করতে বলেছে পুলিশ। ফিরহাদের অভিযোগ, ‘‘রাজ্যের যে কোনও উন্নয়ন প্রস্তাবের বিরোধী পদক্ষেপ করে বন্দর। মহেশতলা উড়ালপুলের জন্য বন্দরের থেকে বাজারদরে জমি কিনতে হবে রাজ্যকে। তাই নিয়ে গড়িমসি হচ্ছিল। কলকাতা-আই প্রকল্পেও বন্দর জমি দিতে টালবাহানা করছে।’’ মন্ত্রীর সাফ কথা, ‘‘বন্দর কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করলে রাজ্য সরকারও সহযোগিতা করবে।’’

এ দিন সেই সহযোগিতারই আশ্বাস দিয়েছেন বন্দরের চেয়ারম্যান। মহেশতলা উড়ালপুলের জন্য জমি দেওয়ার সম্মতিপত্রে যার ইঙ্গিত। কেপিটি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, গঙ্গার ধারে মিলেনিয়াম পার্কের কাছে কলকাতা-আই বসানোর জমি রাজ্যকে দিতে বন্দরের পরবর্তী অছি পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। সেই সঙ্গে বহুচর্চিত রাস্তা সারাই, অতিরিক্ত পার্কিং লট তৈরির কাজও সময় ধরে সেরে ফেলার আশ্বাস দিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। আর তার পরেই বন্দরগামী লরি চলাচলে নিষেধা়জ্ঞা শিথিল করেছে কলকাতা পুলিশ। বন্দরের ভিতরে সাড়ে আট হাজার কন্টেনার রাখার জায়গা রয়েছে। ইতিমধ্যে সাড়ে ছ’হাজারের জায়গা ভর্তি হয়ে গিয়েছে। দিন চার-পাঁচেক এমন চললে কলকাতার জাহাজ অন্য বন্দরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। তা মাথায় রেখেই বন্দর থেকে কন্টেনার ফ্রেট স্টেশনে যাওয়ার জন্য সকাল ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত লরি চলাচলে অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। কাস্টমস এলাকায় লরি রাখার অনুমতিও মিলেছে।

এমতাবস্থায় নবান্নের এক কর্তা বলছেন, ‘‘বন্দরের সমস্যা সম্পর্কে সরকার ওয়াকিবহাল। পুজোর পরেই সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’ বন্দর-চেয়ারম্যানের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সাগরমালা প্রকল্পে কলকাতা বন্দরের জন্য জাহাজ মন্ত্রকের কাছে ৫০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। তা দিয়ে ৯টি রাস্তা সারানো হবে। পার্কিং লট হবে। তখন বন্দরের নিজস্ব এলাকাতেই সাড়ে পাঁচশো ট্রেলার রাখা সম্ভব হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE