চার বিমানযাত্রীর কাছ থেকে পাঁচ লক্ষ একাশি হাজার মার্কিন ডলার বাজেয়াপ্ত করল কলকাতা বিমানবন্দরের শুল্ক দফতর। কলকাতা থেকে এই মার্কিন ডলার নিয়ে আইজলে যাচ্ছিলেন তাঁরা। ওই চার জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রত্যেকেই আইজলের বাসিন্দা বলে বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, রবিবার সকালে জেট এয়ারওয়েজের উড়ানে আইজল যাওয়ার পথে প্রথমে বাধা পান স্যামুয়েল ও ভানলাল জাওনি নামে এক তরুণ ও তরুণী। তাঁদের ব্যাগ এক্স-রে করে দেখা যায়, ভিতরে প্রচুর নোট রয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দরের শুল্ক দফতরের ডেপুটি কমিশনার উমেশ কুমার এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের কাছে আগে থেকে খবর ছিল। তার ভিত্তিতেই আমরা নজরদারি চালাচ্ছিলাম।’’
ব্যাগ খুলে দেখা যায়, সেখানে থরে থরে বিদেশি মুদ্রা রয়েছে। ওই দু’জনকে ধরে জেরা করতেই জানা যায়, তাঁদের সঙ্গে আরও এক তরুণী রয়েছেন। তিনি ব্যাগ এক্স-রে করিয়ে ততক্ষণে নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে টার্মিনালের ভিতরে চলে গিয়েছেন। অপেক্ষা করছেন বিমান ধরার জন্য। লালপেকমা ওয়াসি নামে ওই তরুণীকে খুঁজে বার করে আনা হয়। বিমানের পেট থেকে বার করে আনা হয় তাঁর ব্যাগও। সেই ব্যাগ থেকেও পাওয়া যায় মার্কিন ডলার।
এ বার তিন জনকে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করে জানা যায় চতুর্থ এক যুবকের কথা। ততক্ষণে সেই যুবক জেটের বিমানে উড়ে চলে গিয়েছেন আইজল। তড়িঘড়ি আইজল বিমানবন্দরে খবর পাঠিয়ে আটক করা হয় সেই যুবক লালনুন সিয়ামাকে। তাঁকে ব্যাগ সমেত ফেরত পাঠানো হয় কলকাতায়। ওই চার জনের কাছ থেকে বিশাল অঙ্কের যে মার্কিন ডলার পাওয়া যায়, ভারতীয় মুদ্রায় তার মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা।
উমেশ কুমার জানান, কলকাতার কোনও এক ব্যক্তির কাছ থেকে ডলার পেয়েছিলেন তাঁরা। মায়ানমারের সীমান্তে চম্পাই নামে মিজোরামের একটি গ্রাম রয়েছে। লালনুন ও লালপেকমা ওই গ্রামের বাসিন্দা। উমেশ কুমারের কথায়, ‘‘ওই গ্রামের বেশির ভাগ লোকেরই পেশা চোরাচালান। এখান থেকে নিয়ে যাওয়া ডলার দিয়ে মায়ানমারের লোকেদের কাছ থেকে এরা সোনা বা মাদক কেনে। কলকাতা থেকে ডলার নিয়ে যাওয়ার সময়ে এর আগেও ওই গ্রামের অনেকে ধরা পড়েছেন।’’ জানা গিয়েছে, এ বার ওই বিশাল অঙ্কের ডলার দিয়ে লালনুনদের মাদক কেনার কথা ছিল। সেই মাদক ছড়িয়ে দেওয়ার কথা ছিল ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে।