জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল চার বছরের এক শিশুর। সূত্রের খবর, বেশ কয়েক দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত ওই শিশুর রক্ত পরীক্ষায় এনএস-১ পজ়িটিভ ধরা পড়ে। যদিও বিষয়টি নিয়ে কলকাতা পুরসভা এবং সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল মুখে কুলুপ এঁটেছে। জানা যাচ্ছে, ওই শিশুটির বাড়ি খোদ ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষের এলাকায়। যে ওয়ার্ডে তার বাড়ি, সেখানকার পুরপ্রতিনিধি অতীনই।
রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো কলকাতাতেও ডেঙ্গির প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। জানা যাচ্ছে, পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বড়তলা অঞ্চলের বাসিন্দা ওই শিশুটির নাম অদ্রীশা পোদ্দার। পরিবার সূত্রের খবর, গত ২০ অক্টোবর জ্বরে আক্রান্ত হয় সে। সেই জ্বর কমলেও কিছু দিন পরে বাড়াবাড়ি হলে অদ্রীশাকে বেলেঘাটার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিবারের দাবি, গত মঙ্গলবার দুপুরে অদ্রীশার প্লেটলেট ছিল ১ লক্ষ ৮০ হাজার। কিন্তু, সে দিন সন্ধ্যা থেকে তার অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। তড়িঘড়ি তাকে ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার দুপুরে সেখানে মারা যায় মেয়েটি। যদিও এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু জানাতে রাজি হননি। তবে, ওই শিশুর এনএস-১ পজ়িটিভ এসেছিল এবং তার পরে মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর।
কয়েক দিন ধরে শহরে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হচ্ছে। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির জেরে জমা জলের কারণে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলেই পুরসভা সূত্রের খবর। পুর স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, এত দিন দক্ষিণ কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছিল। এ বার উত্তর কলকাতার কাশীপুর, হাতিবাগান, বড়তলা এলাকাতেও সংক্রমিতের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। বাড়ির আশপাশে জল জমতে না দেওয়া, জঞ্জাল সাফ করা, মশারি টাঙিয়ে ঘুমোনোর বিষয়ে মানুষকে সচেতন থাকার কথাও বলছেন পুর স্বাস্থ্যকর্তারা। কিন্তু ওই শিশুর মৃত্যুতে প্রশ্ন উঠেছে, পুরসভা নিজেদের পরিষেবা নিয়ে কতটা দায়িত্ব পালন করছে? খোদ ডেপুটি মেয়রের ওয়ার্ডে মৃত্যুর ঘটনায় এই প্রশ্নও উঠছে, ডেঙ্গি নিয়ে কতটা সচেতন তাঁর ওয়ার্ড? তা হলে কি সেখানে জল জমে থাকছে, জঞ্জাল ঠিক মতো সাফ হচ্ছে না?
এ বিষয়ে জানতে অতীনকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি। দুর্গাপুজোর পরে মণ্ডপ নির্মাণে বাঁশ পোঁতার গর্ত বুজিয়ে ফেলার কথা বলেছিল পুরসভা। কিন্তু অধিকাংশ জায়গাতেই তা হয়নি বলেই অভিযোগ। যার ফলে সেখানে বৃষ্টির জল জমে ডেঙ্গির মশার বংশবৃদ্ধি ঘটছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)