Advertisement
E-Paper

কুয়াশা কাটাতে জেরা বন্ধু-বান্ধবীকে

সানি পার্ক অ্যাপার্টমেন্টে কিশোর আবেশ দাশগুপ্তের বন্ধুদের ফেসবুক প্রোফাইলে অন্যদের সঙ্গে এক কিশোর ডিজে-র হদিস মিলেছে। আবেশের মৃত্যুরহস্য ভেদ করতে বুধবার সেই ডিজে-কে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে লালবাজার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৮

সানি পার্ক অ্যাপার্টমেন্টে কিশোর আবেশ দাশগুপ্তের বন্ধুদের ফেসবুক প্রোফাইলে অন্যদের সঙ্গে এক কিশোর ডিজে-র হদিস মিলেছে। আবেশের মৃত্যুরহস্য ভেদ করতে বুধবার সেই ডিজে-কে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে লালবাজার। ঘটনার দিনই রাত ৯টায় বাইপাসের ধারের একটি হোটেলে অন্য পার্টিতে অনুষ্ঠান ছিল ওই ডিজে-র। তার সঙ্গে পুলিশ এ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেছে আবেশের এক বান্ধবীকেও।

ফেসবুকের পোস্ট বলছে, ওই ডিজে-র সঙ্গে আবেশের বন্ধুদের অনেকেরই পরিচয় ছিল। আবেশের বন্ধুদের কারও কারও ফেসবুক ও মোবাইলের মেসেজ ঘেঁটে গোয়েন্দারা জেনেছেন, সানি পার্কে পার্টির পরে শনিবার রাতে বাইপাসের ধারে ওই হোটেলের পার্টিতে যাওয়ার কথা ছিল আবেশ এবং তার অন্য বন্ধুদের। যাওয়ার কথা ছিল আবেশের ওই বান্ধবীরও। সে অবশ্য সানি পার্কে উপস্থিত ছিল না। দ্বিতীয় পার্টিতে যাওয়ার ব্যাপারে বন্ধুদের ফোন করার পরেই আবেশের মৃত্যুসংবাদ পায় সেই মেয়েটি। এ দিন আবেশের ডিজে-বন্ধুর সঙ্গে লালবাজারে তলব করা হয় ওই বান্ধবীকেও।

ওই ডিজে এবং বান্ধবীর ফেসবুক থেকে আরও চার জনের নাম পেয়েছে পুলিশ। সেই চার জনের সঙ্গে সানি পার্কের পার্টিতে হাজির কিশোর-কিশোরীদের অনেকেরই পরিচয় ছিল ফেসবুকে। সে-রাতে কেউই শেষ পর্যন্ত ওই হোটেলের পার্টিতে যায়নি।

আবেশের পরিবার জানিয়েছিল, যে-বন্ধুটি ওই কিশোরকে সানি পার্কের পার্টিতে নিয়ে গিয়েছিল, সে রক্তাক্ত অবস্থায় আবেশকে ফেলে অসুস্থ মাকে দেখতে হাসপাতালে যাবে বলে তড়িঘড়ি বেরিয়ে যায়। তবে একটি সূত্রের খবর, সে ওই হাসপাতালে যায়নি। ভিজিটিং আওয়ার্স শেষ হয়ে যাওয়ায় সে সোজা চলে যায় বাড়িতে। বাবাকে গোটা বিষয়টি জানায়।

শুধু রক্তাক্ত আবেশকে ছেড়ে চলে আসাই নয়। ওই দিন (শনিবার) সন্ধ্যায় ঘটনার ঠিক পরেই সাড়ে ৬টা নাগাদ ফেসবুকে একটি খাওয়াদাওয়ার পোস্ট শেয়ার করেছে ওই বন্ধু। যে-কিশোরীর জন্মদিনের পার্টি উপলক্ষে জমায়েতে ওই ঘটনা ঘটে, সে-ও ফেসবুকে একটি ছবি শেয়ার করেছে সে-দিনই রাত ৮টা ২০ মিনিট নাগাদ। অথচ কিছু আগে তার সামনেই চিকিৎসকেরা আবেশের মৃত্যুসংবাদ ঘোষণা করেছেন। সেই পরিস্থিতিতে ফেসবুক করার মতো মানসিকতা তাদের কী করে হল, প্রশ্ন তুলেছে আবেশের পরিবার।

সানি পার্কের বাসিন্দা ওই কিশোরী মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে অন্য একটি পোস্টে দাবি করেছে, সে আবেশকে আগে চিনতই না। ঘটনার দিনই সে প্রথম দেখে আবেশকে। পোস্টে কিশোরী লিখেছে, ‘আবেশের সঙ্গে আমার মাত্র কয়েক ঘণ্টার পরিচয়।’ অথচ আবেশের মায়ের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জেনেছেন, ওই কিশোরের সঙ্গে কিশোরীর আলাপ মাসখানেক আগে। তা হলে কি‌শোরী কেন এমন কথা লিখল, তা জানতে ফের তাকে জেরা করা হতে পারে।

ওই ফেসবুক পোস্টে কিশোরী আরও দাবি করেছে, আবেশ যখন আহত হয়, তখন সে ঘটনাস্থলে ছিলই না। পরে জানতে পেরে তারা কয়েক জন মিলে আবেশের প্রাথমিক চিকিৎসা করে। আবেশের এক পুরনো বন্ধু সেই সময় তার জামা ছিঁড়ে ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত বন্ধের চেষ্টাও করে। কিশোরীর বাবা-মা যখন আবেশকে হাসপাতালে নিয়ে যান, ওই কিশোরও সঙ্গে ছিল। সে-ই প্রথম খবর দেয় আবেশের বাড়িতে। আবেশের বান্ধবীও তার কাছ থেকেই মৃত্যুর খবর পায়।

প্রিন্সটন ক্লাবের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে গোয়েন্দারা জেনেছেন, গত শনিবার দুপুরে আবেশরা ১০টি মেয়ে এবং ছ’টি ছেলে মিলে খেতে গিয়েছিল। পুলিশের দাবি, ওই ১৬ জনই পরে গিয়েছিল সানি পার্ক অ্যাপার্টমেন্টের পার্টিতে। তাদের সকলকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। তদন্তের প্রয়োজনে তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে গোয়েন্দারা জানান। এর বাইরেও অন্য বন্ধুদের ডাকা হচ্ছে তদন্তের জন্য।

Death Mystry Abesh dasgupta Murder Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy