E-Paper

কোর্টের বাইরে ভিড়ে ‘চোর’ স্লোগান, দেখানো হল জুতোও

চিকিৎসক তরুণীর খুন এবং ধর্ষণ মামলায় শনিবার টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল এবং সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে সিবিআই। রবিবার সকালে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২১
তরুণী চিকিৎসককে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায় ধৃত অভিজিৎ মণ্ডল ও সন্দীপ ঘোষকে শিয়ালদহ আদালতে আনা হলে জুতো দেখিয়ে বিক্ষোভ দেখান ক্ষুব্ধ মানুষ।

তরুণী চিকিৎসককে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায় ধৃত অভিজিৎ মণ্ডল ও সন্দীপ ঘোষকে শিয়ালদহ আদালতে আনা হলে জুতো দেখিয়ে বিক্ষোভ দেখান ক্ষুব্ধ মানুষ। নিজস্ব চিত্র

আর জি কর হাসপাতালের চিকিৎসক তরুণীকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় ধৃত টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল এবং অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে দেখতে সকাল থেকে ভিড় জমছিল শিয়ালদহ আদালত চত্বরে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাড়তে থাকা সেই ভিড় এবং আদালত চত্বরে যে কোনও ধরনের বিক্ষোভ আটকাতে বিশাল পুলিশি ব্যবস্থা করা হয়েছিল। দ্বিস্তরীয় গার্ডরেল দিয়ে আদালত চত্বরের প্রায় ৫০ মিটার ঘিরেও দেওয়া হয়। তার পরেও বিক্ষোভ তো আটকানো গেলই না, যাওয়া-আসার সময়ে দু’বারই জুতো দেখানো হল সন্দীপ এবং অভিজিৎকে। জনতার ভিড় থেকে উঠল স্লোগান, ‘‘বাংলার কলঙ্ক’’।

চিকিৎসক তরুণীর খুন এবং ধর্ষণ মামলায় শনিবার টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল এবং সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে সিবিআই। রবিবার সকালে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হয়। এ দিন বেলা ১১টার কিছু আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষার
জন্য সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বার করা হয় অভিজিৎকে। বেরোনোর পথে সিজিও কমপ্লেক্সের বাইরে আচমকাই জনা দশেক বিজেপি কর্মী সমর্থক হাজির হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের কয়েক জনের হাতে ছিল জুতো ও পোস্টার। আচমকা ওই বিক্ষোভ দেখে সিজিও কমপ্লেক্সের মধ্যেই থমকে যান তদন্তকারীরা। বিক্ষোভকারীদের আটকান সিজিও কমপ্লেক্সের বাইরে মোতায়েন বিধাননগর পুলিশকর্মীরা। বিক্ষোভের মাঝেই অভিযুক্তকে নিয়ে বেরিয়ে যান সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। এর পর স্বাস্থ্য পরীক্ষার শেষে নিয়ে আসা হয় শিয়ালদহ আদালতে।

যদিও ধৃত দু’জনকে শিয়ালদহ আদালতে নিয়ে আসার আগে থেকে গোটা চত্বর নিরাপত্তায় মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। বিক্ষোভ ঠেকাতে গার্ডরেল দিয়ে আটকে দেওয়া হয় এলাকা। দ্বিস্তরীয় গার্ডরেলের ভিতরে এবং বাইরে ছিল পুলিশের পাহারা। গার্ডরেল উপেক্ষা করে কাউকে যাওয়া তো দূর, কেউ কাছে ঘেঁষলেই পুলিশি ধমকের মুখে পড়তে হয়েছে এ দিন। এমনকি বৃষ্টি উপেক্ষা করে গার্ডরেলের বাইরে কেউ জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদেরকেও সরিয়ে দিতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখাশোনা করতে একাধিক সহকারী নগরপাল পদমর্যাদার আধিকারিক থেকে শুরু করে উপ নগরপাল পদমর্যাদার কর্তাদের বার বার আদালত চত্বরে ঘুরতে দেখা গিয়েছে এ দিন।

স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর বেলা ১২টা ১৫ মিনিট নাগাদ প্রথমে আদালতে নিয়ে আসা হয় অভিজিৎকে। তার মিনিট ১৫ পরে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে সোজা
আদালতে আসে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের গাড়ি। পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে দু’জন আদালতে প্রবেশ করেন। দুপুর দুটো নাগাদ শুরু হয় শুনানি। সওয়াল জবাব শেষে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ আলাদা আলাদা দু’টি গাড়িতে বার করা হয় দু’জনকে। যনিরাপত্তার ঘেরাটোপে দু’জনকে বার করার সময় সেই ভিড় থেকেই ‘চোর চোর’ স্লোগানের পাশাপাশি জনতার ক্ষোভ আছড়ে পড়ে। জুতোও দেখানো হয় বিক্ষুব্ধ জনতার ভিড় থেকে। এর পর নিরাপত্তার ঘেরাটোপেই দ্রুত গাড়ি বেরিয়ে যায় সিজিও
কমপ্লেক্সের উদ্দেশ্যে। তবে নিরাপত্তার এই বহর দেখে উপস্থিত সাধারণ মহিলাদের অনেককেই পুলিশকে কটাক্ষ করে বলতে শোনা গেল, ‘‘দুই অভিযুক্তের জন্য এত নিরাপত্তা! অথচ হাসপাতালে যেখানে মহিলা চিকিৎসকের নিরাপত্তার প্রয়োজন ছিল, সেখানে কেউ
ছিল না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

R G Kar Medical College and Hospital

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy