একতলায় পরিবার নিয়ে থাকেন ভাই। দোতলায় থাকতেন দুই বোন। সোমবার সকালে সেই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে বড় বোনের পচাগলা দেহ। জানা গিয়েছে, দিন দুয়েক আগে দিদির মৃত্যু হলেও কাউকে কিছু জানাননি বোন। ঘটনাটি ঘটেছে কসবা থানার পরেশ মজুমদার রোডে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বৃদ্ধার নাম পূরবী নস্কর (৭৭)। মৃতার পরিবার সূত্রের খবর, পূরবীর মানসিক সমস্যা ছিল। মানসিক সমস্যা রয়েছে তাঁর বোন রীতা নস্করেরও।
পরিবার এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, পূরবী এবং তাঁর বোন, ৬৭ বছরের রীতা একসঙ্গে থাকতেন। কিন্তু পূরবী মারা গেলেও রীতা কয়েক দিন পূরবীর দেহের সঙ্গেই থাকছিলেন। এ দিন পূরবীর দেহ উদ্ধার হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁর মৃত্যুর খবর জানতে পারেননি প্রতিবেশীরাও।
এ দিন পূরবীর মৃত্যুর খবর জানাজানি হল কী ভাবে? পূরবীর ভাই, ৭২ বছরের শ্যামলকুমার নস্কর থাকেন বাড়ির একতলায়। তাঁর স্ত্রী রত্না নস্কর এবং ছেলে সায়ন নস্কর রয়েছেন। সায়নের মৃগী রোগ রয়েছে। শ্যামল বলেন, ‘‘আমার দিদি পূরবী এবং বোন রীতার মানসিক সমস্যা রয়েছে। ওরা দু’জনে দোতলায় আলাদা থাকত। নিজেরাই রান্নাবান্না করে খেত। তবে রীতা বেশ কয়েক দিন ধরে আমার কাছে খাবার চাইছিল। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ ফের খাবার চাইলে আমি জানতে চাই, দিদি কোথায়? তখন রীতা জানায়, দিদি মারা গিয়েছে।’’ এর পরেই বিষয়টি জানাজানি হয়। শ্যামল খবর দেন পুলিশে।
পুলিশ জানিয়েছে, মেঝেতে পড়ে ছিল পূরবীর দেহ। দেহটি উদ্ধার করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, গত শনি বা রবিবার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে পূরবীর। তবে ময়না তদন্তের পরেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। যদিও এ দিন রীতা বলেন, ‘‘দিদি শুক্রবার মারা গিয়েছে।’’ রীতা ওই বাড়িতেই রয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, পূরবীর দেহে পচন ধরেছিল। কিন্তু একতলায় থাকা শ্যামলের পরিবার বা প্রতিবেশীরা কেন কিছু বুঝতে পারেননি, সেই প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পূরবী এবং রীতা পাড়ার কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না।
এ দিন পূরবীর দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি লিপিকা মান্না। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ অনেক কষ্ট করে দেহটি দোতলা থেকে নামিয়েছে। রীতা প্রথমে কিছুতেই দরজাখুলছিলেন না।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)