পুজো এগিয়ে আসতেই ইস্ট-ওয়েস্ট এবং উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোপথে যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে শুরু করেছে দুর্ভোগও। সকালে এবং সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে অস্বাভাবিক ভিড়ের কারণে অনেক সময়েই মেট্রোর দরজা বন্ধ করতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ফলে ট্রেন থমকে যাওয়ায় পরের ট্রেনগুলির সময়ে স্টেশনে পৌঁছতেও বিলম্ব হচ্ছে। তাতে ব্যাহত হচ্ছে গোটা মেট্রো পরিষেবাই। এর সঙ্গে মেট্রোর সিগন্যাল বা রেক সংক্রান্ত বিভ্রাটের জেরে ভোগান্তি চরমে পৌঁছচ্ছে বলে অভিযোগ। সাধারণত পরিষেবায় খুব বড় বিপত্তি না হলে মেট্রো কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের সমস্যার কথা জানান না বলেও অভিযোগ উঠছে। ফলে ভিড় বা ছোটখাটো বিপত্তির জেরে পরিষেবা বিঘ্নিত হলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদেরই।
শুক্রবার সকালে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর দমদমমুখী পথে যতীন দাস পার্ক স্টেশনে একটি ট্রেনের দরজা বন্ধ করায় সমস্যা দেখা দেয়। অত্যধিক ভিড়ের কারণে ট্রেনটি ওই স্টেশনে প্রায় সাত মিনিট দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে পিছনে থাকা একাধিক ট্রেনের বিলম্ব হয়। পর্যাপ্ত সংখ্যক আরপিএফ কর্মীর অভাবে মেট্রোর উত্তর-দক্ষিণ শাখায় বিভিন্ন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে রেলরক্ষী বাহিনীর কর্মী কার্যত নেই বললেই চলে। তাতে সমস্যা আরও বাড়ছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই বিভ্রাটের ঘটনাকে সাময়িক বলে দাবি করেছেন। এই প্রসঙ্গে এক মেট্রোকর্তা বলেন, ‘‘পরিষেবা উন্নত করতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে। কোথাও বিভ্রাট হলেও তা সাময়িক।’’ কলকাতা মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘ভিড়ের কারণে প্রায়ই দরজা বন্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা
দেখা দিচ্ছে। তার ফলে ট্রেন চলাচলে দেরি হচ্ছে।’’ তবে অফিসের ব্যস্ত সময়ে টালিগঞ্জ সংলগ্ন মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশন থেকে দমদমের দিকে দু’-একটি ট্রেন বেশি চালালে সমস্যা কিছুটা কমতে পারে বলে মত যাত্রীদের অধিকাংশের।
সম্প্রতি ইস্ট-ওয়েস্টের হাওড়া-এসপ্লানেড শাখায় রেক রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত কাজের জন্য দৈনিক মোট ট্রেনের সংখ্যা কমেছে। দৈনিক প্রায় ২০টি ট্রেন ওই শাখায় কম চলছে। ফলে ব্যস্ত সময়ে যাত্রীদের ভিড় উপচে পড়ছে। উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোতেও লাইন সংক্রান্ত রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য প্রায়ই মেট্রোপথের বিভিন্ন অংশে গতির বিধিনিষেধ থাকে। সেখানে কম গতিতে ট্রেন চালাতে গিয়ে একটি মেট্রোর পুরো পথ অতিক্রম করতে অনেক বেশি সময় লাগছে বলে অভিযোগ। তাতে ট্রেনের সময়সূচি বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
দমদম-দক্ষিণেশ্বর শাখায় আবার দক্ষিণেশ্বর স্টেশন থেকে ট্রেন ঘোরানোর সমস্যা রয়েছে। ওই শাখায় পয়েন্ট এবং সিগন্যালের বিভ্রাটও প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। নানা সমস্যা নিয়ে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত সম্প্রসারিত পথে ট্রেন চালাতে গিয়ে সারা দিনে মোট ট্রেনের সংখ্যা ৩০০ থেকে কমিয়ে ২৮৮টি করতে হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)