Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Menstruation

পড়ুয়াদের লেখা নাটকে সচেতনতার পাঠ

ঋতুকালীন সময়ে আজও এ দেশের মহিলাদের বড় অংশ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন না।

বিআইটিএমে চলছে নাটক। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

বিআইটিএমে চলছে নাটক। বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:১৫
Share: Save:

সচেতনতার প্রসারে হাতিয়ার নাটক। পড়ুয়া নাট্যকারদের কলমে ধরা তেমনই দশটি নাটক সারা দেশ থেকে বাছাই করে বৃহস্পতিবার মঞ্চস্থ হল এ শহরে।

ঋতুকালীন সময়ে আজও এ দেশের মহিলাদের বড় অংশ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন না। যে কারণে বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার শিকার হন তাঁরা। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সচেতনতার প্রসারে নাটক লিখে ফেলেছে গোখেল মেমোরিয়াল হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মেঘমন্তী ভট্টাচার্য। এমনকি সেই নাটকের নির্দেশনা এবং অভিনয়ের কাজটিও করেছে সে। বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজ়িয়ামের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত জাতীয় বিজ্ঞান নাট্যোৎসবে প্রদর্শিত হল সেই নাটক।

গোখেল মেমোরিয়ালের পাশাপাশি সারা দেশের আরও ন’টি স্কুল এই নাট্যোৎসবে যোগ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সূত্রের খবর, প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অসংখ্য স্কুল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল। কয়েক দফা বাছাইয়ের পরে চূড়ান্ত পর্যায়ে দেশের চারটি জ়োন থেকে দশটি স্কুলের নাটককে সেরা নির্বাচন করা হয়েছে। সেই সব নাটকই এ দিন বিআইটিএম-এর অডিটোরিয়ামে মঞ্চস্থ হল। বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজ়িয়ামের টেকনিক্যাল অফিসার গৌতম শীল বলেন, ‘‘নাটকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান, পরিবেশ এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করাই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য। স্কুল পড়ুয়ারা নিজেরাই নাটক লিখেছে এবং

অভিনয় করেছে।’’

সারা দেশের স্কুলগুলির মধ্যে তার লেখা নাটক সেরা দশে স্থান পাওয়ায় স্বভাবতই খুশি মেঘমন্তী। তার কথায়, ‘‘একটি লেখায় পড়েছিলাম, আমাদের দেশের ৮০ শতাংশের উপরে মহিলা ঋতুকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন না। কারণ, তাঁদের মধ্যে সেই সচেতনতাই নেই। সেই কারণে সচেতনতার বার্তা দিতে ওই বিষয়টি নিয়ে নাটক লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’’ পড়ুয়াদের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত ওই স্কুলের শিক্ষিকা ববিতা রায় জানান, মেঘমন্তী ও অন্য পড়ুয়ারা প্রত্যেকেই নাটকে ভাল কাজ করেছে। তাই সারা দেশের স্কুলগুলির মধ্যে তারা প্রথম দশে আসতে পেরেছে।

স্বচ্ছতার সচেতনতা নিয়ে পাঠ দিল আরও একটি নাটক। ‘যমরাজ কি আদালত’ নামে সেই নাটক এ দিন মঞ্চস্থ করে দিল্লি থেকে আসা লিটল ফ্লাওয়ার পাবলিক স্কুলের পড়ুয়ারা। নাটকের অভিনেত্রী নবম শ্রেণির শর্মিষ্ঠা চৌধুরী বলে, ‘‘যমরাজ পৃথিবীতে নেমে এসে দেখবেন, কোন কোন জায়গা অপরিষ্কার। সেই অপরিচ্ছন্নতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের যমরাজ শাস্তি দেবেন। এটাই বিষয়বস্তু।’’

একটি গ্রামের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ থেকে মানুষের কী কী রোগ হতে পারে, তা নাটকের মাধ্যমে দেখাল হরিয়ানার জ়ি লিটেরা ভ্যালি স্কুলের পড়ুয়ারা। এও দেখান হল যে, সেখানে চিকিৎসাও পর্যাপ্ত নয়। কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ কী ভাবে পিছিয়ে পড়ছেন তা দেখানো হয়েছে ওই নাটকে। এক পড়ুয়া আমিশা বলে, ‘‘দেশের বহু গ্রামে এখনও ঠিক মতো চিকিৎসার পরিকাঠামো নেই। সুতরাং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ বদল হওয়া জরুরি।’’

নাটক দেখতে এ দিন অডিটোরিয়ামে দর্শকের ভিড়ও ছিল যথেষ্ট। পরপর প্রদর্শিত নাটকের কয়েকটির কাহিনি এবং অভিনয় দুইই নজর কেড়েছিল দর্শকদের। দর্শক আসন থেকে শোনা যাচ্ছিল, সে সবেরই টুকরো টুকরো প্রশংসা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Theatre Play Menstruation Menstrual health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE