Advertisement
E-Paper

দক্ষিণ দমদম যা পেরেছে, তা-ও পারল না বিধাননগর

এক বছরের মধ্যে পুরসভা থেকে ‘কর্পোরেশন’ হয়েছে বিধাননগর। কিন্তু এ পর্যন্ত সেখানে অন্তত এক জন পতঙ্গবিদকেও আনা যায়নি। এক ডেঙ্গির মরসুম থেকে চলে এসেছে আরও একটি ডেঙ্গির মরসুম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৯
মশার লার্ভা

মশার লার্ভা

এক বছরের মধ্যে পুরসভা থেকে ‘কর্পোরেশন’ হয়েছে বিধাননগর। কিন্তু এ পর্যন্ত সেখানে অন্তত এক জন পতঙ্গবিদকেও আনা যায়নি। এক ডেঙ্গির মরসুম থেকে চলে এসেছে আরও একটি ডেঙ্গির মরসুম। প্রতিশ্রুতি থাকলেও এখনও তৈরি করা যায়নি ভেক্টর কন্ট্রোল ইউনিটও।

অথচ ঠিক তার পাশেই অন্য ছবি দেখাচ্ছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা। সেখানেও পতঙ্গবিদ নেই। কিন্তু রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সহায়তা নিয়ে তারা ডেঙ্গির সঙ্গে লড়ার পরিকাঠামো তৈরি করে ফেলেছে।

বিধাননগর পুর নিগমের চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘কয়েক বছর আগে কলকাতা পুরসভার থেকে বিধাননগরের পুরকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। তাঁরাই এখন অন্যান্যদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।’’ একই কথাই বলেছেন পুরনিগমের মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়। তবে পতঙ্গবিদ নিয়ে সমস্যার কথা স্বীকার করেছে পুরনিগম। প্রণয়বাবুর কথায়, ‘‘পতঙ্গবিদের সংখ্যা কম। আমরা খোঁজ করছি। তাই কিছুটা সময় লাগছে।’’ এপ্রিল থেকে জুলাই মাসে বিধাননগর পুরনিগমের নিজস্ব সমীক্ষাতেই দেখা যাচ্ছে প্রায় দু’-আড়াই হাজার মানুষ জ্বরে আক্রান্ত। তার মধ্যে ৩১ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। জুনের মধ্যে এক জনের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে।

দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) গোপা পাণ্ডে জানান, মার্চ থেকেই ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছেন তাঁরা। সমগ্র পুর এলাকা থেকে ২০ হাজারটি এমন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে যার মধ্যে মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘স্টেট আর্বান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি থেকে টাকা দিচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর আর রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞরা এসে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের ডেঙ্গির মশার লার্ভা চিনিয়ে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।’’

মাস খানেক আগে ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি দেখা দিয়েছিল। দুটি ওয়ার্ড মিলিয়ে প্রায় ২৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষই। তাদের ব্যাখ্যা, মানুষ সতর্ক না হওয়ায় ওই সব জায়গায় ডেঙ্গি দেখা দিয়েছিল। জঞ্জাল বিভাগের চেয়ারম্যান পারিষদ দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা গিয়ে দেখেছি পুজোর ঘটে জল জমানো। এক ডাক্তারের বাড়ির ছাদে দেখেছি টব রাখার পাত্রে জল জমে রয়েছে। মশার লার্ভা রয়েছে।’’

দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, অনেক ক্ষেত্রে সচেতনতার জন্য নাগরিকদের বাড়িতে গেলে সেখানে প্রবেশ করতে সমস্যা হচ্ছে পুরকর্মীদের। সে ক্ষেত্রে কী করছেন?

চেয়ারম্যান পারিষদ গোপা পাণ্ডে বলেন, ‘‘কোনও জায়গায় ঢুকতে সমস্যা হলে কর্মীরা স্থানীয় কাউন্সিলরকে ফোন করছেন। কাউন্সিলর গিয়ে পুরকর্মীদের সংশ্লিষ্ট জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন।’’

সোমবার দক্ষিণ দমদমের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাড়া মোড়ের বাসিন্দা পম্পা ভট্টাচার্যের (৩২) মৃত্যু হয়েছে। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে তিনি বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পম্পার রক্তের প্লেটলেট ৪০ হাজারের নীচে নেমে গিয়েছিল বলেই জানিয়েছেন তাঁর দাদা দীপেন চক্রবর্তী। এ দিন দুপুরে পম্পার মৃতদেহ তাঁর পাড়ায় নিয়ে আসা হলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর প্রতিবেশীরা। রবিবারই বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গিয়েছিল পূর্বিতা হাজরা নামে আর এন গুহ রোডের বাসিন্দা এক ছাত্রী।

সোমবার দুপুরে সল্টলেকের বিডি ব্লকে মৃত বিবস্বান গুহঠাকুরতার বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন প্রণয়বাবু। তখন তিনি জানান, ওই শিশুটির ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়নি বলে তাঁর পরিবারের তরফেই জানানো হয়েছে। সব রিপোর্ট আসার পরে রাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়ে দেন, বিবস্বানের ডেঙ্গিই হয়েছিল।

নাগেরবাজারের কাছে একটি পলিক্লিনিকের অধিকর্তা উৎপল গোস্বামী জানান, গত জুলাইয়ে এনএস-১ পরীক্ষার জন্য তাঁদের কাছে ১০২ জন এসেছিলেন। যাঁদের মধ্যে ৪০ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।

Dengue Bidhan Nagar Municipal corporation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy