এ বছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহেই শুরু হয়ে যাবে শারদোৎসব। বাঙালির সেরা পার্বণকে সামনে রেখে পুজো কমিটিগুলিও প্রস্তুতি সারছে। সেই আবহে বৃহস্পতিবার বিকেলে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কলকাতার ছোট-বড় সব পুজো কমিটিকে নিয়ে বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠক শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেই কলকাতার এক বড় পুজো কমিটি তাদের থিমের নাম প্রকাশ করেছে। পুজো কমিটির তরফে দাবি করা হয়েছে, তাদের পুজোর থিমের নামকরণ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ বছর উত্তর কলকাতার টালা প্রত্যয়ের পুজোর শতবর্ষ। সেই উপলক্ষে এক বছর আগে থেকেই শিল্পী ভবতোষ সুতারকে নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছিল তারা। সে কথা ফলাও করে হোর্ডিং দিয়ে কলকাতাবাসীকে জানিয়েওছিল তারা। কিন্তু থিমের নাম প্রকাশের আগে একটি অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছিলেন টালা প্রত্যয়ের পুজো কমিটির কর্মকর্তারা। তাদের ‘#সবুজরবেবাংলা’ হোর্ডিং শহর জুড়ে ছেয়ে গিয়েছিল। বাংলার রাজনীতিতে যেহেতু শাসকদল তৃণমূলের পরিচিতি সবুজ রং দিয়েই, আর হোর্ডিংটি যেহেতু তাদের ২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশের আগে কলকাতা জুড়ে লাগানো হয়েছিল, তাই মনে করা হয়, হোর্ডিংটি নিজেদের সমাবেশের প্রচারের জন্যই লাগিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু বৃহস্পতিবার টালা প্রত্যয় তাদের থিমের নাম প্রকাশ্যে আনতেই যাবতীয় জল্পনার অবসান হল।
আরও পড়ুন:
টালা প্রত্যয়ের প্রকাশ করা একটি ডিজিটাল কার্ড মারফত জানানো হয়েছে, তাদের থিমের নামকরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নাম দিয়েছেন, ‘বীজ অঙ্গন’। টালা প্রত্যয় পুজো কমিটির তরফে শুভাশিস সোম বলেন, ‘‘সব পুজো কমিটিই নিজেদের মতো প্রচারের কৌশল সাজায়। আমরাও আমাদের মতো করে একের পর এক পরিকল্পনা করেই এগিয়েছি। পরিকল্পনামতোই থিমের নাম উন্মোচন করেছি। আর মুখ্যমন্ত্রী যে আমাদের পুজোর থিমের নামকরণ করেছেন, তা প্রকাশের আগে প্রস্তুতি নিতে চাইছিলাম’’। যে শিল্পীর মুখ্যমন্ত্রীর নামাঙ্কিত থিমে প্রাণদানের দায়িত্বে, সেই ভবতোষ বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর থিমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই নামকরণ করেছেন। এর আগেও তিনি আমার পুজোয় প্রতিমার চোখ এঁকেছেন। প্রায় ২৫ বছর ধরে দুর্গাপুজোর কাজের সঙ্গে আমি যুক্ত। আর টালা প্রত্যয়ের শতবর্ষের পুজোর থিমের নাম যখন মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন, তখন আমাকেও আমার সেরাটা দিয়ে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমার লড়াই আমার সঙ্গেই।’’
তবে দুর্গাপুজোর থিমের সঙ্গে মমতার নাম যুক্ত হওয়া এই প্রথম নয়। প্রতি বছর নিয়ম করে মহালয়ার দিন মেয়র ফিরহাদ হাকিমের পুজোর প্রতিমার চক্ষুদান করে তিনি। তা ছাড়া ২০১০ সালে ভবানীপুর বকুলবাগান দুর্গোৎসবের থিম শিল্পের নির্দেশনাও দিয়েছিলেন মমতা।