তদন্তে নেমে অনেক সময়ে কিছু নথি, হাতের লেখা পরীক্ষা জরুরি হয়ে পড়ে। তার মধ্যে রয়েছে সুইসাইড নোটও। অনেক ক্ষেত্রেই সেই সুইসাইড নোটের সই দেখে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে যাচাই করে দেখা হয় যে, মৃত ব্যক্তিকে জোর করে সই করানো হয়েছে কি না। তার উপরে নির্ভর করে তদন্তের গতিমুখ। এক পুলিশ কর্তার কথায়, কোনও মামলার ক্ষেত্রে মাত্র দু’পাতা নথি পরীক্ষা করতে হয়। আবার কখনও হাজার পাতার নথি জমা পড়ে।
এখন রাজ্যের সমস্ত থানায় যত মামলা হয় তার যাবতীয় নথি পরীক্ষার জন্য একটি মাত্রই শাখা রয়েছে ভবানী ভবনে। রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ সিআইডি-র অধীনে ওই নথি পরীক্ষা শাখার নাম কোয়েশ্চেন ডকুমেন্টস এগজামিনেশন ব্রাঞ্চ (কিউডিইবি)। এই মূহূর্তে কাজের চাপে নাভিশ্বাস উঠেছে ওই শাখায়। নথি পরীক্ষার কাজে যত দেরি হচ্ছে, ততই বিভিন্ন মামলার তদন্তেও দেরি হচ্ছে। তাই, এই শাখার বিকেন্দ্রীকরণ করতে চাইছে সিআইডি।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, শিলিগুড়ি, মালদহ, দুর্গাপুরে তিনটি নতুন পরীক্ষাগার খোলার জন্য রাজ্যের কাছে সবিস্তার প্রস্তাব পাঠাচ্ছে সিআইডি। এতে প্রত্যন্ত এলাকার থানার পুলিশের সুবিধা হবে বলে মনে করছেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা। ঠিক যেমন, এর আগে কলকাতা থেকে বিকেন্দ্রীকরণ করে বেশ কিছু জেলায় বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এত দিন শুধু রাজ্যের যাবতীয় মামলাই নয়, কলকাতা পুলিশের তদন্ত করা বিভিন্ন মামলার নথিও পরীক্ষা হতো এই শাখায়। পরীক্ষার জন্য ভিন্ রাজ্যের বিভিন্ন আর্থিক দুর্নীতির মামলার নথিও আসে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বর্তমানে মাসে ১০০-১২০টির মতো মামলার নথি আসে ভবানী ভবনে। এর জন্য বিশেষ পরীক্ষাগার বা ল্যাবরেটরি রয়েছে।
তবে এই মূহূর্তে এই সব নথি পরীক্ষার জন্য রয়েছেন মাত্র সাত জন অফিসার। যার মধ্যে এক জন ডিএসপি পদমর্যাদার। বাকিদের মধ্যে রয়েছেন পাঁচ জন ইনস্পেক্টর বা সিনিয়র এগজামিনার এবং এক জন সাব ইনস্পেক্টর বা জুনিয়র এগজামিনার। জুনিয়র এগজামিনারের একটি পদ খালিও পড়ে রয়েছে বলে সিআইডি সূত্রে খবর।
গোয়েন্দাদের একাংশের মতে, যে কোনও নথি পরীক্ষা করতে তিন থেকে চার দিন সময় লাগে। সই পরীক্ষায় লাগে কম করে এক দিন। ফলে বিশেষজ্ঞ কর্মী না থাকায় ওই বিভাগে কাজের চাপ বাড়ছে বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। সিআইডির কর্তারা জানান, কাজের চাপ কমাতেই ওই বিকেন্দ্রীকরণের প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে। সেই প্রস্তাব কার্যকর হলে নতুন করে হাতের লেখা বা নথি পরীক্ষায় বিশেষজ্ঞ অফিসার বা কর্মী নেওয়া হবে বলেও ওই শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy