পরিচিত: পছন্দ করে বই কিনছেন ক্রেতারা। কলেজ স্ট্রিটে। —নিজস্ব চিত্র
অতিমারিতে দীর্ঘ এগারো মাস বন্ধ থাকার পরে এ রাজ্যে আংশিক স্কুল খুলেছে ঠিক এক মাস। সরকার কোভিড-বিধি মেনে স্কুলগুলিকে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু করার অনুমতি দিয়েছে। আর স্কুল খুলতেই যেন চেনা ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে কলেজ স্ট্রিট বইপাড়া। প্রতিদিনই বইয়ের খোঁজে আসছেন স্কুল-কলেজ এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা। জেলা থেকেও ভিড় করছেন বই বিক্রেতারা। যদিও বইপাড়ার ব্যবসায়ীদের
একটি অংশের দাবি, ভিড় বাড়ছে ঠিকই, তবে বিক্রি সেই অর্থে বাড়েনি।কোভিড পূর্বাবস্থায় যে ভাবে বইপাড়ায় কেনাবেচা চলত, তার ধারে কাছে এখন বিক্রি হচ্ছে না।
কোভিডের কারণে লকডাউন পর্বে সব দোকানের মতোই বন্ধ ছিল বইপাড়া। আনলক পর্ব শুরু হয়জুনেন। তখন থেকে দোকান খুললেও বন্ধ ছিল লোকাল ট্রেন পরিষেবা। পুরো বন্ধ ছিল স্কুল এবং কলেজ। ফলে বইপাড়ায় পড়ুয়াদের দেখা মেলেনি বলেই জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। এ ছাড়াও ট্রেন বন্ধ থাকায় বইপাড়ার বহু দোকানদার ও কর্মী আসতে পারছিলেন না। ফলে আনলক পর্বেও বন্ধ ছিল বেশ কিছু দোকান। কারণ, তাঁদের অনেকেই আসেন শহরতলি থেকে।
নভেম্বরের গোড়া থেকে শহরতলির ট্রেন পরিষেবা শুরু হয়। এর পরেই জেলার বিক্রেতা ও দোকানের কর্মীদের আনাগোনা বেড়েছে বইপাড়ায়। তবে বিক্রি আদৌ বেড়েছে কি না এই প্রশ্নে মতানৈক্য দেখা গেল বইপাড়ার বিক্রেতাদের মধ্যেই। বইপাড়ায় প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত অসিত দাস বলেন, “স্কুল খোলার পর থেকেই কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ায় পাঠ্যবই বিক্রি বেড়েছে। বলা চলে আগের মতোই বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু গল্প উপন্যাস বা কবিতা বইয়ের ক্ষেত্রে এখনও আগের অবস্থা ফিরে আসেনি। তবে আনলক পর্বে যে ভাবে বিক্রি তলানিতে ঠেকেছিল সেই অবস্থা এখন আর নেই। ক্রমশ স্বাভাবিক পছন্দ কলেজ স্ট্রিট।”
বিক্রেতাদের অন্য অংশের দাবি, ধুঁকছে বইপাড়া। ব্যবসায়ী তারক দত্ত বলেন, “বই পড়ার যুগ শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই আগের মতো বই বিক্রি হয় না। তা ছাড়া আজকাল অনলাইনেও বই কেনা যায়। স্বাভাবিক ভাবেই এই ভিড়ের মধ্যে এসে বই কেনার প্রবণতা কমেছে।”
একই সুর শোনা গেল বিক্রেতা স্বপনকুমার সাহার কথায়। তিনি বলেন, “স্কুল খোলার পরে ক্রেতার একটু ভিড় বেড়েছে। তবে আগের মতো স্বাভাবিক পরিস্থিতি হয়নি। প্রতিযোগিতামূলক বইয়ের বিক্রি বাড়েনি।”
পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু শেখর দে বলেন, “আনলক পর্বের শুরুতে জুন মাসে বই মোটে বিক্রি হচ্ছিল না। তবে এখন সেই সঙ্কট অনেকটাই কেটেছে। আর এখন তো স্কুল খুলে যাওয়ায় ভিড় বাড়ছে বইপাড়ায়। তবে ভোট ঘোষণা হতেই আবার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy