চার বছর আগে সরকারি চাকরির পরীক্ষায় আবেদনের সময়ে তিনি ছিলেন অয়ন সান্যাল। এত দিন বাদে, ইন্টারভিউয়ের ডাক আসার সময়ে তিনি এখন অনুরূপা সান্যাল। গত শনিবার তিনি জানতে পারেন, স্বাস্থ্য দফতরের ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে হবে ১৬ জুলাই। শুনে উৎকণ্ঠিত হন ৩১ বছরের রূপান্তরকামী কন্যা। এর আগে ২০১৯ সালেও অয়ন পরিচয়ে এই পরীক্ষায় বসেছিলেন তিনি। তখন তাঁর নারীসুলভ পোশাক দেখে স্বাস্থ্য ভবনে ইন্টারভিউয়ের টেবিলে কিছুটা বিরূপ ব্যবহারই তিনি পেয়েছিলেন বলে আজকের অনুরূপার (সে দিনের অয়ন) খেদ।
নানা নাটকীয় মোচড়ের পরে বুধবার ইন্টারভিউ দিতে পেরেছেন রানাঘাটের অনুরূপা। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, অস্থিরতার-পর্বে ট্রান্সজেন্ডার সুরক্ষা বোর্ড থেকে সাড়া পাননি তিনি। শেষে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ স্তরের হস্তক্ষেপে তাঁর সমস্যা মেটে।
২০২৩ সালে অয়ন খাতায়কলমে অনুরূপা হয়েছিলেন। দেশের ট্রান্সজেন্ডার সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, ট্রান্সজেন্ডার শংসাপত্র হাতে রূপান্তরকামী নারী পরিচয়েও পরিচিত হন। কিন্তু চাকরির ইন্টারভিউয়ের চিঠি এসেছিল অয়ন সান্যাল নামেই। অনুরূপার কথায়, “আমি জ়ুলজিতে স্নাতক, ল্যাব সহযোগীর কাজে ডিপ্লোমাধারী। ২০১৭ থেকে বেসরকারি হাসপাতালে এই কাজ করছি। তবু চাকরির ক্ষেত্রে ট্রান্সজেন্ডার তকমার জন্য বার বার নানা সমস্যা হয়েছে। তাই ফের আমি অয়ন না অনুরূপা, প্রশ্ন উঠবে ভেবে চিন্তায় ছিলাম।”
রবিবার সরকারি ট্রান্সজেন্ডার বোর্ডকে বিষয়টি ইমেলে জানিয়ে এ দিন পর্যন্ত সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ করেছেন অনুরূপা। ট্রান্স, কুইয়ারদের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট একাধিক সংগঠনেও চিঠি দেন তিনি। এক সমাজকর্মী বন্ধুর পরামর্শে মুখ্যসচিব, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর, সরকারি গ্রিভ্যান্স সেলেও তাঁর বার্তা যায়। মুখ্যসচিবের ওয়টস্যাপ নম্বর জোগাড় করে বার্তাপাঠিয়েছিলেন ওই চাকরিপ্রার্থী। তার পরে হঠাৎই মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ নিজে ফোন করেন। তিনি জানান, অনুরূপার ইমেল দেখেই ফোন করছেন। তাঁকে আশ্বাস দেন, কোনও সমস্যা হবে না।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)