Advertisement
E-Paper

‘নিখোঁজ’ কোভিড রোগী, দিশাহারা বাড়ির লোক

কী ভাবে রোগীকে খুঁজে পাবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না পরিজনেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২১ ০৬:২০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

করোনা আক্রান্ত বাবাকে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন ছেলে। অভিযোগ, ভর্তির পর থেকে আর খোঁজ মিলছে না রোগীর। বলা হয়েছে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের কথা। কিন্তু রোগী সেখানেও নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। উত্তর নেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছেও। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কোথায়, কী ভাবে রোগীকে খুঁজে পাবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না পরিজনেরা।

গত সোমবার বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন গড়িয়া স্টেশন এলাকার বাসিন্দা বছর আশির গোপালচন্দ্র কুণ্ডু। পরিবারের তরফে একটি বেসরকারি ল্যাব থেকে করোনা পরীক্ষা করা হয়। সেখান থেকে তিন দিন পরে রিপোর্ট দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এ দিকে রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। প্রাথমিক ভাবে বাড়িতেই অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায়, নার্সিংহোমে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। রাতভর একাধিক নার্সিংহোমে ঘুরেও ভর্তি করানো যায়নি বলে জানান রোগীর ছেলে সুব্রত। অভিযোগ, করোনা রিপোর্ট না থাকায় ভর্তি নিতে চায়নি নার্সিংহোমগুলি। মঙ্গলবার সকালে গোপালবাবুর পরিবার স্বাস্থ্য দফতরের হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করে। অনেক চেষ্টার পরে স্বাস্থ্য দফতর থেকে তাঁদের বাঘা যতীন হাসপাতালে যেতে বলা হয়। সেই মতো তাঁরা রোগীকে নিয়ে ওই হাসপাতালে গেলেও দীর্ঘক্ষণ চিকিৎসা না করে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ।

পরে সেখান থেকে তাঁদের বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট হয় গোপালবাবুর। দেখা যায়, তিনি করোনা পজ়িটিভ। এর পরে ওই হাসপাতালে সদ্য চালু হওয়া কোভিড ওয়ার্ডে তাঁকে ভর্তি করে ফিরে আসে পরিবার। গোপালবাবুর পরিবারের দাবি, রাতেই বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, তাঁকে যাদবপুরের কেএস রায় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। পরিজনদের সেখানে যেতে বলা হয়। গোপালবাবুর ছেলে রাতেই কেএস রায় হাসপাতালে গিয়ে তাঁকে ভর্তি করে দিয়েও আসেন। রাত দুটো নাগাদ কেএস রায় হাসপাতাল থেকে তাঁদের জানানো হয়, গোপালবাবুকে হাওড়ার বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। বুধবার সকালে সেখানে যান রোগীর আত্মীয়েরা।

পরিবারের দাবি, বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতাল জানায়, রোগী এইচডিইউ-তে ৪ নম্বর শয্যায় ভর্তি আছেন। কিন্তু দেখা করতে দেওয়া হয়নি। বিকেলে ফোন করে খোঁজ নিতে বলা হয়। সেই মতো পরিবারের তরফে বার বার ফোন করলেও কেউ ফোন ধরেননি বলে অভিযোগ। পরদিন সকালে ফের ফোন করা হলে হাসপাতাল জানায়, ওই নামে কোনও রোগীই ভর্তি নেই! পরিজনেরা ফের কেএস রায় হাসপাতালে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে জানানো হয় রোগীকে বালিটিকুরিতেই স্থানান্তর করা হয়েছে।

গোপালবাবুর মেয়ে গোপা দত্ত কুণ্ডু বলেন, “অসুস্থ বাবাকে ভর্তি করতে গিয়ে বিস্তর ভোগান্তি পোহাতে হল। এখন মানুষটার খোঁজই পাচ্ছি না। হাসপাতাল থেকে কিছু জানাতে পারছে না! আমি ও আমার পরিবার করোনা আক্রান্ত। ফলে বেরিয়ে খোঁজ নিতে পারছি না। ভাই একাই সামলাচ্ছে। কিন্তু বাবা অসুস্থ হওয়ায় তাকেও বেরোনো নিয়ে প্রতিবেশীদের কথা শুনতে হচ্ছে।”

হাওড়ার কোভিড হাসপাতাল, বালিটিকুরি ইএসআইয়ে ওই রোগী ভর্তি আছেন কি না তা জানতে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে দফায় দফায় ফোন করলেও উত্তর মেলেনি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিসে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা প্রথমে কিছু জানাতে পারেননি। রাত্রি আটটায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখেছি, বু‌ধবার কে এস রায় হাসপাতাল থেকে গোপাল ধাড়া নামে এক রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু গোপালচন্দ্র কুণ্ডু নামে কাউকে ওই হাসপাতাল থেকে ভর্তি করা হয়েছে কি না তা জানা যায়নি। আরও খোঁজ নিচ্ছি।’’

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy