Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

সংক্রমণের বিপদ ঠেকাতে এখনও পিছিয়ে বেসরকারি বাস 

জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের তরফে দিন কয়েক আগেই ধর্মতলায় বাসচালক এবং কন্ডাক্টরদের মধ্যে মাস্ক বিলি করা হয়েছে।

বেসরকারি বাসে ছড়ানো হচ্ছে জীবাণুনাশক। নিজস্ব চিত্র

বেসরকারি বাসে ছড়ানো হচ্ছে জীবাণুনাশক। নিজস্ব চিত্র

ফিরোজ ইসলাম
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২০ ০৪:১৪
Share: Save:

করোনা সংক্রমণ নিয়ে সচেতনতায় বিশেষ পদক্ষেপ করতে বেসরকারি বাস পিছিয়ে রয়েছে সরকারি বাসের থেকে। শহরে রাজ্য পরিবহণ নিগমের ডিপোর বাসগুলিতে জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজ শুরু হলেও বেসরকারি বাস-মিনিবাস, অ্যাপ-ক্যাব বা ট্যাক্সি সংক্রমণ ঠেকানোর প্রস্তুতি এখনও সে ভাবে নিচ্ছে না বলেই খবর।

জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের তরফে দিন কয়েক আগেই ধর্মতলায় বাসচালক এবং কন্ডাক্টরদের মধ্যে মাস্ক বিলি করা হয়েছে। যদিও সেই মাস্ক ব্যবহারের অভ্যাস বেসরকারি বাসের কর্মীদের মধ্যে চোখে পড়েনি। কারণ, মাস্ক পরে যাত্রীদের থেকে ভাড়া আদায় করা বা যাত্রী হাঁকা কতটা সম্ভব, তা নিয়ে সংশয় আছে তাঁদের। এ প্রসঙ্গে চালক ও কন্ডাক্টরদের দাবি, সাধারণ সর্দি-জ্বর হলে তাঁদের ছুটি নিতেই হয়। অসুস্থ অবস্থায় দিনে ১৫-১৬ ঘণ্টা কাজের ধকল নেওয়া অসম্ভব। এমনকি কেউ অসুস্থ হলে এবং তাঁর বদলে কর্মী একান্তই না পাওয়া গেলে বাস বন্ধ রাখতে হয় বলেও দাবি তাঁদের।

বাসমালিক সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, সরকারি স্তরে তৎপরতা দেখে দ্রুত কর্মীদের সচেতন করতে পদক্ষেপ করার ব্যাপারে তারা

আলোচনা শুরু করেছে। ‘অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় জানান, সরকারি সিদ্ধান্তের সঙ্গে তাল রেখে গুরুত্বপূর্ণ বাস স্ট্যান্ডের স্টার্টারদের সক্রিয় করবেন তাঁরা। বাস ছাড়ার আগে ড্রাইভার এবং

কন্ডাক্টারদের প্রয়োজনীয় সতর্কতা নিতে বলা হবে। হাত পরিষ্কার রাখতে সাবান বা জীবাণুনাশক তরল ব্যবহারের পরামর্শও দেবেন। পোস্টারের মাধ্যমে যাত্রীদের সতর্ক করা যায় কি না, তা-ও ভাবা হচ্ছে। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মিনিবাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধি প্রদীপনারায়ণ বসু জানাচ্ছেন, মূলত সচেতনতা বৃদ্ধির উপরেই জোর দিচ্ছেন তাঁরা। বেসরকারি বাস প্রতিদিন ভোরে কর্মীরাই ধোয়া-মোছা করেন। সরকারি বাসের মতো জীবাণুনাশক স্প্রে করা সম্ভব না হলেও তরল জীবাণুনাশক ব্যবহারের কথা ভাবছেন তাঁরা।

অ্যাপ-ক্যাব, ট্যাক্সি এবং অটোচালক সংগঠনগুলির অবশ্য ভরসা চালকদের ব্যক্তিগত সচেতনতা। এক জায়গায় অনেক যাত্রী গাদাগাদি করে অ্যাপ-ক্যাব বা ট্যাক্সিতে বসেন না, এটা ঠিক। পাশাপাশি যাঁরা ক্যাব বা ট্যাক্সি ভাড়া করছেন, তাঁদের স্বাস্থ্য সম্পর্কেও কিন্তু আগাম আঁচ পাওয়া সম্ভব নয়। তাই চালকদেরই সতর্ক থাকার কথা বলছেন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়। এআইটিইউসি পরিচালিত শহরের হলুদ ট্যাক্সি চালকদের সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘চালকদের মাস্ক পরতে বলছি। এ ছাড়া ঠান্ডা লাগা বা জ্বর হলে তাঁরা যাতে উপেক্ষা না করেন, তা-ও দেখতে বলেছি।’’ চাপাচাপি করে যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতায় ছোটে অটো। সেই অটোচালক সংগঠনের নেতৃত্ব জানাচ্ছে, এ নিয়ে কোনও কর্মসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

‘পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’-এর সাধারণ সম্পাদক সুদীপ দত্ত বলছেন, ‘‘সরকার স্কুল ছুটি দিয়েছে ঠিকই। তবে কিছু স্কুল কিন্তু খোলা আছে। আমরা

ইতিমধ্যেই করোনা সংক্রমণ নিয়ে চালক এবং অভিভাবকদের সচেতন করতে শুরু করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Buses Disinfection
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE