সরকারি বিজ্ঞাপনে ‘ভারত’ নামের ব্যবহার নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলল সিপিএম। নবপ্রজন্মের জিএসটি কার্যকর হওয়া উপলক্ষে নরেন্দ্র মোদীর সরকার যে বিজ্ঞাপন করছে, তাতে অনেক ক্ষেত্রে ইংরেজিতেও ‘গভর্মেন্ট অফ ভারত’ উল্লেখ করা হয়েছে। ‘ইন্ডিয়া’ নয়। সিপিএমের প্রশ্ন, সংবিধানে কোনও পরিবর্তন ছাড়াই কী ভাবে কেন্দ্রীয় সরকার ‘ইন্ডিয়া’ নাম বাদ দিচ্ছে? কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, গত ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই সরকারি নানা নথি ও বিজ্ঞাপনে ‘ভারত’ ব্যবহার করা হচ্ছে। তার জন্য কোনও আইন সংশোধনের দরকার নেই।
জিএসটি-র বিজ্ঞাপনের প্রেক্ষিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘গভর্মেন্ট অফ ইন্ডিয়া নামটা গভর্মেন্ট অফ ভারত হয়ে গেল নাকি? কবে বদলাল? এটা সংবিধান সম্মত নয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কারও ইচ্ছায় অথবা অঙ্গুলি হেলনে এই বদল কি হতে পারে? এতে চুড়ান্ত ভাবেই নয়া ফ্যাসিবাদী প্রবণতার স্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।’’ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতে সোমবার একটি মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে সুজনের আরও মন্তব্য, ‘‘যেমন কারও খুশি বা পছন্দ অনুযায়ী বাবার নাম বদলায় না, দেশের নামও সে ভাবে বদলানো সম্ভব নয়। বাবার নাম আদালতের রায় ছাড়া পালটানো যায় না, তা হলে দেশের নাম কী ভাবে ইচ্ছে মতো পাল্টে দেওয়া যায়?’’ সিপিএম মনে করিয়ে দিচ্ছে, দু’দিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের অন্য বিজ্ঞাপনে ‘গভর্মেন্ট অফ ইন্ডিয়া’ই ব্যবহার করা হয়েছে।
বিজেপি সূত্রের পাল্টা বক্তব্য, সংবিধানেই ‘ইন্ডিয়া’ এবং ‘ভারত’ শব্দ দু’টি উল্লিখিত আছে। তার জন্য নতুন করে আইন বদলানোর প্রয়োজন নেই। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার চিহ্ন মুছে দেশীয় নাম ব্যবহার করার যে নীতির কথা প্রধানমন্ত্রী বলছেন, সেই পথেই ‘ভারতে’র ব্যবহারও বাড়ছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যও বলেছেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত। এই নিয়ে কিছু বলব না। তবে ভারত শব্দটি মাটির কাছাকাছি। আর কত দিন ঔপনিবেশিক প্রভাব থাকবে? এ বার থেকে তো আসতে আসতে ভারতীয়ত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে।’’ প্রসঙ্গত, দু’বছর আগে এই নিয়ে যখন বিতর্ক বেধেছিল, সেই সময়ে বিরোধী শিবিরের নেতাদের দাবি ছিল, বিরোধীরা তাদের মঞ্চের নাম ‘ইন্ডিয়া’ রাখার পর থেকে মোদী আরও বেশি করে ‘ইন্ডিয়া’ নামটিই বদলে দিতে চাইছেন!
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)