Advertisement
E-Paper

‘বেঁচে তো গেলাম, পেট চালাব কী করে!’

বৈঠকখানা বাজার, কলেজ স্ট্রিট, আমহার্স্ট স্ট্রিটের বহু ছাপা কারখানাও জলের তলায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২০ ০৪:৪৯
শহর কলকাতায় আমপানের তাণ্ডব। —নিজস্ব চিত্র

শহর কলকাতায় আমপানের তাণ্ডব। —নিজস্ব চিত্র

শহরের ছোট-বড় বহু কারখানার বিপদ বাড়াল আমপান। কোথাও কারখানায় আগুন ধরে যাওয়ার খবর প্রতিবেশীরা জানলেন অনেক পরে। কোথাও বন্ধ কারখানার আগুন নেভাতে গিয়ে পুড়ে গেলেন কেউ। জলমগ্ন কারখানার ভিতরে আবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নিজে থেকেই মোটর চালু হয়ে যেতে পারে শুনে রাস্তায় রাত কাটাতে হল অনেককে। পুলিশ সূত্রের খবর, এমন বেশ কিছু খবর এসেছে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত। মৃত্যুও হয়েছে কয়েকটি ক্ষেত্রে। কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে বহু জায়গাতেই পৌঁছনো যায়নি। মৃতদের পরিচয়ও জানা যায়নি।

প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া এক কারখানার মালিক, যাদবপুর শ্রী কলোনির বাসিন্দা সৌমেন হাজরা কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘‘চাল উড়ে গিয়েছে, গাছ পড়ে সব যন্ত্র শেষ। আর হয়তো ঘুরে দাঁড়াতে পারব না।” একই আশঙ্কা বাগবাজারের গেঞ্জির কারখানার মালিক নিমাই গুপ্তের। বুধবার তাঁর কারখানায় আগুন ধরে গেলে বেরিয়ে আসেন দুই কর্মী। কিন্তু আগুন নেভাতে গিয়ে পুড়ে যান দুই প্রতিবেশী। তাঁদের প্রথমে আর জি কর এবং পরে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের অবস্থা সঙ্কটজনক। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকার বিপ্লবী পুলিন দাস স্ট্রিটের কাছে একটি কারখানাতেও বুধবার আগুন ধরে যায়। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন গেলেও স্থানীয়েরা তত ক্ষণে আগুন অনেকটাই নিভিয়ে ফেলেন। তবে পুড়ে যায় কাপড়ের সব থান।

উত্তর কলকাতার বদ্রীদাস টেম্পল স্ট্রিটে দু’টি ঘর কারখানা হিসেবে ইন্দ্রজিৎ বসাককে ভাড়ায় দিয়েছিলেন মাধব সরকার নামে এক ব্যক্তি। বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ তিনি বুঝতে পারেন, বন্ধ কারখানায় মোটর চলছে! রাতেই সকলে রাস্তায় নেমে আসেন। বৃহস্পতিবার ভোরে ইন্দ্রজিৎকে ফোনে পাওয়া যায়। ঝুঁকির রাস্তা পেরিয়ে তিনি গিয়ে দেখেন, মোটর চলছে। যন্ত্র চালু রাখার তেল মিশেছে জলের সঙ্গে। ইন্দ্রজিৎ বলেন, “বিদ্যুতের মূল সুইচ বন্ধ করতে ভুলে গিয়েছিলাম। তা থেকেই হয়তো এই কাণ্ড। কী করব জানি না।”

বৈঠকখানা বাজার, কলেজ স্ট্রিট, আমহার্স্ট স্ট্রিটের বহু ছাপা কারখানাও জলের তলায়। যন্ত্রাংশ-সহ নষ্ট হয়েছে লকডাউনের আগে ছাপিয়ে রাখা ক্যালেন্ডার, কার্ড, বই। সারাদিনেও জল বার করতে পারেননি এক কর্মী রঘু মণ্ডল। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘যাঁদের বরাত ছিল, তাঁরা সেগুলি নিয়ে গেলে এ মাসের বেতন দিতে পারতাম। কেউ কারখানায় থাকলে জিনিসগুলো বেঁচে যেত। ঝড়ে তো বেঁচে তো গেলাম, পেট চালাব কী করে!”

Cyclone Amphan Kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy