Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Death

Death: ঘরে প্রৌঢ়ার ফুলে ওঠা দেহ, উধাও পরিচারক

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা  ১০-১৫ বছর ধরে সেখানে ছিলেন। তাঁর ছেলে ও মেয়ে পরিবার নিয়ে কাছাকাছিই থাকেন।

দীপা মুখোপাধ্যায়

দীপা মুখোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২১ ০৬:১১
Share: Save:

গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক প্রৌঢ়া। ফুলে উঠেছে দেহ। দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে ঘর থেকে। বুধবার দুপুরে খবর পেয়ে ভেজানো দরজা ঠেলে ফ্ল্যাটে ঢুকতেই এমন দৃশ্য ধ‍রা পড়ে পুলিশের নজরে। লেক টাউন থানা এলাকার বাঙুরের বি-ব্লকের একটি বহুতলের একতলার ফ্ল্যাট থেকে দ্রুত ওই প্রৌঢ়াকে উদ্ধার করে পুলিশ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। মৃতার নাম দীপা মুখোপাধ্যায় (৬২)। এই ঘটনায় একাধিক ইঙ্গিত থেকে তদন্তকারীরা মনে করছেন, খুন করা হয়েছে প্রৌঢ়াকে। দু’দিন আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা ১০-১৫ বছর ধরে সেখানে ছিলেন। তাঁর ছেলে ও মেয়ে পরিবার নিয়ে কাছাকাছিই থাকেন। প্রৌঢ়ার ফ্ল্যাটে এক ব্যক্তি জল সরবরাহ করতেন। তিনি মঙ্গলবারেও জল দিতে গিয়ে সাড়া পাননি। ফের বুধবার সকালে আসেন। কিন্তু সদর দরজায় টোকা মারলেও সাড়াশব্দ মেলেনি বলে জানান ওই ব্যক্তি। তিনি খেয়াল করেন, দু’দিনের ফুলের প্যাকেট দরজায় ঝুলছে। তখন তিনিই সে কথা প্রতিবেশীদের জানান।

প্রতিবেশীরা প্রৌঢ়ার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ছেলে জানান, তাঁর বাড়িতে মা যাননি। সুতরাং নিজের বাড়িতেই তাঁর থাকার কথা। ছেলে বলেন, “মায়ের মোবাইলে ফোন করি। কিন্তু সেটি বন্ধ ছিল।” তখনই লেক টাউন থানায় খবর দেওয়া হয়।

পুলিশ গিয়ে দেখে, দরজা এমন ভাবে ভেজানো, যাতে মনে হয়, ভিতর থেকে বন্ধ। ঘরের ভিতরে প্রৌঢ়ার দেহ যে ভাবে পড়ে ছিল, তা দেখেই সন্দেহ হয় পুলিশের। দেখা যায়, ফ্ল্যাটের দু’টি আলমারি ভাঙা। সেখান থেকে গয়না উধাও বলেও প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে পুলিশ। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, সোমবারেও দীপাদেবীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন তাঁর ছেলে। কিছু দিন আগে তিনি ছেলেকে জানিয়েছিলেন, তাঁর দেখভাল এবং রান্নার কাজের জন্য এক জনকে রেখেছেন। কিন্তু তাঁর পরিবার সেই পরিচারকের ছবি, নাম-সহ কোনও তথ্য থানায় জমা করেনি। সেই পরিচারকের খোঁজ মেলেনি এখনও।

এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, প্রৌঢ়া একাই থাকতেন। তবে তিনি কারও সঙ্গে বেশি মেলামেশা করতেন না। দীপাদেবীর ছেলে জানান, ওই পরিচারক কয়েক দিন আগে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে তিনি দেখেননি। এ দিন ঘরে ঢুকে তিনি যেটুকু দেখেছেন, তাতে যে সব গয়না আলমারিতে ছিল, তার প্রায় সবই উধাও বলে জানিয়েছেন পুলিশকে।

ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। দেহের অবস্থান এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রৌঢ়াকে খুন করা হয়েছে বলে মনে হলেও ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত ওই পরিচারকের সন্ধান চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

woman Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE