Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Watgunge Murder Case

ওয়াটগঞ্জের বাড়িতে ঠাকুরঘরের সামনের হলেই খুন করা হয়েছিল দুর্গাকে? জোরালো তন্ত্রসাধনার তত্ত্ব

পুলিশ সূত্রে খবর, যেখানে দুর্গাকে হত্যা করা হয়েছে, তার এক দিকে জলের কল রয়েছে। ওই কল থেকে জল নিয়েই রক্ত ধোওয়া হয়ে থাকতে পারে। ওই জায়গায় কিছু প্লাস্টিকও মিলেছে।

image of murder

ঠাকুরঘরের সামনে হলেই খুন হয়েছিলেন দুর্গা সরখেল, বলছে পুলিশ। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৩১
Share: Save:

ওয়াটগঞ্জের বাড়িতে ঠাকুরঘরের সামনে হলঘরে হত্যা করা হয়েছিল দুর্গা সরখেলকে! পুলিশি তদন্তে তেমনটাই উঠে এসেছে। জোরালো হচ্ছে তন্ত্রসাধনার দিকটিও। সে কারণেই কি ঠাকুরঘরের সামনে হত্যা? উত্তর খুঁজছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় দুর্গার ভাসুর নীলাঞ্জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্তে একেবারে সহযোগিতা করছেন না নীলাঞ্জন।

পুলিশ সূত্রে খবর, যেখানে দুর্গাকে হত্যা করা হয়েছে, তার এক দিকে জলের কল রয়েছে। ওই কল থেকে জল নিয়েই রক্ত ধোয়া হয়ে থাকতে পারে। ওই জায়গায় কিছু প্লাস্টিক, কার্টন ইত্যাদি ছিল। তার গায়েও রক্ত লেগে থাকতে দেখা গিয়েছে। শুক্রবার ওয়াটগঞ্জের দুর্গার বাড়িতে যান কলকাতার ফরেনসিক দফতরের ডিএনএ বিভাগের কর্মীরা। অভিযোগ, সেই বাড়িতেই দুর্গাকে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো করা হয়েছে। বাড়ি থেকে ৬০০ মিটার দূরে পরিত্যক্ত একটি ব্যারাক থেকে গত মঙ্গলবার দুর্গার দেহাংশ মিলেছিল। সেখানেও গিয়েছিল দলটি।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওয়াটগঞ্জের বাড়ির হলঘরে রক্ত মিলেছে। এ ছাড়াও ফরেন্সিক দল কিছু কাগজের কার্টনে, মেঝেতে, নর্দমায়, বারান্দার বেসিনে রক্ত লেগে থাকতে দেখেছে। রক্ত মোছার একটি কাপড়ও পেয়েছেন তদন্তকারীরা। দুর্গার বাড়িতে শৌচালয়ের দরজাতেও রক্তের দাগ লেগে থাকতে দেখেছেন তাঁরা। রক্ত মাখা দু’টি বস্তাও পেয়েছেন। পুলিশের ধারণা, তাতে ভরেই দুর্গার দেহ সাইকেলে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যে প্লাস্টিকের ব্যাগের মধ্যে তাঁর দেহাংশ মিলেছিল, সে রকম একটি ব্যাগও উদ্ধার করেছে পুলিশ। রক্তমাখা একটি করাতও পেয়েছেন তদন্তকারীরা। মনে করা হচ্ছে, ওই দিয়েই কাটা হয়েছে দেহ। যেখান থেকে দুর্গার দেহ উদ্ধার হয়, সেখানে রক্তমাখা একটি পোশাকও মিলেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ি থেকে সাইকেলে চাপিয়ে দুর্গার দেহ ঘটনাস্থলে এনেছিলেন অভিযুক্ত নীলাঞ্জন। দু’বারে। তাদের আরও দাবি, বস্তায় ভরে আনা হয়েছিল দেহ। ভোর ৫টার মধ্যে সেরে ফেলা হয়েছিল কাজ। পুলিশ সূত্রে খবর, দুর্গা খুনের তদন্তে ইতিমধ্যেই কিছু সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার হয়েছে। দুর্গাদের বাড়ির ঠিকানা ২৩বি, হেমচন্দ্র স্ট্রিট। সেই বাড়ির উল্টো দিকের বাড়ির সামনে সিসি ক্যামেরা বসানো রয়েছে। সেই ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেছেন তদন্তকারীরা। তাতে এক বার দেখা গিয়েছে, হাতে প্লাস্টিক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন নীলাঞ্জন। পরে আবার বাড়িতে ঢুকতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। পুলিশের ধারণা, ওই প্লাস্টিক ব্যাগে করেই সরানো হয়েছে দেহাংশ। দেহের কিছু অংশ তিনি জলে ফেলে দিয়েছিলেন। কোথায় ফেলেছেন, তা খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুর ৩টে নাগাদ ওয়াটগঞ্জ থানা এলাকার সত্য ডাক্তার রোডের পাশে পাঁচিল ঘেরা একটি পরিত্যক্ত জায়গা থেকে প্লাস্টিকের ব্যাগে দুর্গার দেহাংশ পেয়েছিল পুলিশ। ২০০৭ সালে দুর্গার বিয়ে হয় ওয়াটগঞ্জের বাসিন্দা ধোনি সরখেলের সঙ্গে। দম্পতির এক ছেলে রয়েছে। দশম শ্রেণিতে পড়ে সে। বাড়িতে দুর্গার স্বামী এবং ছেলের পাশাপাশি ভাশুর, ননদ, শাশুড়িও থাকেন। দুর্গার পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির তরফে তাদের মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার খবর জানানো হয়নি। সংবাদমাধ্যমে এক মহিলার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধারের খবর দেখে এবং গত দু’দিন ধরে দুর্গার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে পরিবারের লোকেরা মঙ্গলবার থানায় যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Forensic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE