Advertisement
E-Paper

বিধি উড়িয়েই দোকানে রান্না, আগুনে আতঙ্ক

ফুটপাথে সার দিয়ে খাবারের দোকান। ফুটপাথের উপরেই চেয়ার রেখে চলছে খাওয়াদাওয়া। চিলতে দোকানঘরের ভিতরে গ্যাস সিলিন্ডার। চলছে রান্নাবান্না। এই দৃশ্য দক্ষিণ কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে লর্ডস মোড়ের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:১৯
রাস্তায় বার করে দেওয়া হয়েছে জ্বলন্ত সিলিন্ডার। নিজস্ব চিত্র

রাস্তায় বার করে দেওয়া হয়েছে জ্বলন্ত সিলিন্ডার। নিজস্ব চিত্র

ফুটপাথে সার দিয়ে খাবারের দোকান। ফুটপাথের উপরেই চেয়ার রেখে চলছে খাওয়াদাওয়া। চিলতে দোকানঘরের ভিতরে গ্যাস সিলিন্ডার। চলছে রান্নাবান্না। এই দৃশ্য দক্ষিণ কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে লর্ডস মোড়ের। শনিবার সকালে এখানেই একটি খাবারের দোকানে রান্নার গ্যাস লিক করে আগুন লাগে। জখন হন এক জন। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন প্রায় আধ ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানায়, জখম ব্যক্তির নাম শেখ ফিরোজ। তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের জেরে এ দিন লর্ডস মোড়ে কিছু ক্ষণ যানজট হয়।

দমকল এবং পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ ওই খাবারের দোকানে একটি গ্যাস সিলিন্ডার হঠাৎ দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। বড় অঘটন ঘটে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় ওই দোকানের এক কর্মী সিলিন্ডারটি রাস্তায় বার করে দেন। সিলিন্ডার বার করতে গিয়ে তিনি নিজেই কিছুটা জখম হন। আশপাশের দোকান ও এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। দমকল এসে সিলিন্ডারটি নেভায়। ওই দোকানের এক কর্মচারীর দাবি, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই দোকানে থাকা অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পরে দমকল এসে আগুন পুরোপুরি নেভায়।

স্বাভাবিক ভাবেই এখন প্রশ্ন উঠেছে, রাস্তার ধারে গজিয়ে ওঠা ওই সব ছোট ছোট রেস্তোরাঁর কি আদৌ ট্রেড লাইসেন্স বা দমকলের ছাড়পত্র রয়েছে? না থাকলে তারা দিনের পর দিন এ ভাবে ব্যবসা করছে কী করে? রাস্তার ধারে সিলিন্ডার রেখেই বা দিনের পর দিন রান্নাবান্না চলছে কী ভাবে?

কলকাতা পুরসভার লাইসেন্স দফতরের এক আধিকারিক জানান, যে কোনও খাবারের দোকান বা রেস্তোরাঁয় রান্না করতে হলে দোকানের মধ্যে নির্দিষ্ট জায়গা থাকা দরকার। তার জন্য দমকলের অনুমতিও আবশ্যক। তা না থাকলে পুরসভা ট্রেড লাইসেন্স দিতে পারে না। পুরসভা সূত্রের খবর, লর্ডস মোড়ে রাস্তার ধারে যে ক’টি খাবারের দোকান রয়েছে, তাদের অনেকেরই ট্রেড লাইসেন্স নেই। তা হলে পুরসভা এই দোকানগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?

পুরসভা সূত্রের খবর, লর্ডস মোড় এবং তার সংলগ্ন এলাকায় কমবেশি ১১৫টি খাবারের দোকান রয়েছে। সেগুলির মধ্যে মাত্র অর্ধেকের কিছু বেশি দোকানের ট্রেড লাইসেন্স আছে। তাদের রান্না করার জন্য দোকানের ভিতরে নিয়ম মাফিক ব্যবস্থাও রয়েছে। দমকলের এক আধিকারিক জানান, অনেক সময়ে দমকল শর্তসাপেক্ষে কিছু দিনের জন্য অনুমতি দেয়। তবে ফায়ার লাইসেন্স পাওয়া যায় সমস্ত শর্ত পূরণের পরে।

লর্ডস মোড়ের বিভিন্ন দোকানে অগ্নি-নিরাপত্তার হাল ঠিক কেমন, দমকল স্পষ্ট করে তা জানাতে পারেনি। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) রতন দে জানান, ওই সব দোকানে যাতে অগ্নি-নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধি ঠিক ভাবে মানা হয়, সে বিষয়টি পুরসভা গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।’’

এই অঞ্চলটি পুরসভার ১০ নম্বর বরোর অন্তর্ভুক্ত। বরো চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আমি নিজে উদ্যোগী হয়ে এর আগে এই অঞ্চলে অনেক বেআইনি দোকান বন্ধ করেছি। এখানে অনেকেরই ট্রেড লাইসেন্স নেই। আগামী মার্চের মধ্যে তাঁদের দমকলের ছাড়পত্র নিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নিতে বলা হয়েছে।’’ তপনবাবুর দাবি, দোকানে রান্নার জন্য যে সমস্ত পরিকাঠামোগত শর্ত পূরণ করা প্রয়োজন, ট্রেড লাইসেন্সবিহীন দোকানের মালিকেরা সেগুলি মানছেন কি না, তা দেখতে বরো থেকে পরিদর্শনও করা হয়েছে। ফের পরিদর্শন হবে। দমকলকেও জানানো হবে। তাতেও কাজ না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Fire Cooking Shop Fear
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy