ভস্মীভূত: আগুন নেভার পরে এমনই অবস্থা সেই ফ্ল্যাটের। সোমবার, হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে পাঁচতলা বাড়ির উপরের ফ্ল্যাটের জানলা দিয়ে গলগল করে বেরোচ্ছে কালো ধোঁয়া আর আগুনের শিখা। আগুনের তাপে ঝনঝনিয়ে ভেঙে পড়ছে জানলার কাচ। আতঙ্কে পাশের ফ্ল্যাটের জানলা থেকে ‘আগুন, আগুন’ বলে চিৎকার করছেন এক যুবক।
সোমবার দুপুর ২টো নাগাদ এই চিৎকার শুনে থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন পথচলতি মানুষজন। দাঁড়িয়ে যায় হাওড়ার ব্যাঁটরা থানার পাওয়ার হাউস মোড়ের সমস্ত যানবাহন। দমকল সূত্রের খবর, আগুনে ওই ফ্ল্যাটের সমস্ত আসবাব পুড়ে গিয়েছে। তবে সে সময়ে ফ্ল্যাটের বাসিন্দা স্বামী-স্ত্রী বাড়ি বন্ধ করে অফিসে যাওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ঘনবসতিপূর্ণ ওই এলাকায় কয়েক ফুটের ব্যবধানে রয়েছে আরও কয়েকটি বহুতল। সেগুলিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় রাস্তায় নেমে আসেন সেখানকার আবাসিকেরা। ভিড় জমে যায় পাওয়ার হাউস মোড়ে। ঘটনাস্থল থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ফাঁসিতলা মোড়ের কাছ থেকে পঞ্চাননতলা রোডমুখী গাড়ি বন্ধ করে দেয় পুলিশ। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাওয়ার হাউস মোড়ের কাছে দেশপ্রাণ শাসমল রোডে ওই বহুতলের পাঁচতলার ফ্ল্যাটে থাকেন সুনীল দালাই ও তাঁর স্ত্রী সুপর্ণা দালাই। প্রতিদিনের মতো এ দিনও তাঁরা সকাল ১০টা নাগাদ ফ্ল্যাটে তালা দিয়ে অফিস বেরিয়ে যান। চার ঘণ্টা পরে দুপুর ২টো নাগাদ ওই ফ্ল্যাটের জানলা দিয়ে গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখে আর পোড়া গন্ধ পেয়ে পাশের
ফ্ল্যাটের বাসিন্দা এক যুবক চিৎকার করে আশপাশের লোকজনকে ডাকেন। তাঁরাই খবর দেন দমকলে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যে ভাবে ধোঁয়া আর আগুন বেরোচ্ছিল তাতে মনে হচ্ছিল পাশের ফ্ল্যাটগুলিতেও আগুন ছড়িয়ে পড়বে। ধোঁয়া বার করতে সুনীলবাবুদের ফ্ল্যাটের সমস্ত কাচের জানলা ভেঙে ফেলা হয়।
আগুন লাগার খবর পেয়েই ছুটে এসেছিলেন পাশের একটি বহুতলের বাসিন্দা, সুনীলবাবুর শ্যালক
অমিত ধর। তিনি বলেন, ‘‘আমি ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলাম। ফিরে দেখি, দিদি-জামাইবাবুর ফ্ল্যাট দাউদাউ করে জ্বলছে।’’ আগুন নেভানোর পরেও আতঙ্ক কাটেনি সুনীলবাবুদের পাশের
ফ্ল্যাটের বাসিন্দা মহুয়া পালের। মহুয়া বলেন, ‘‘ঘরের দেওয়াল আগুনের তাপে ফেটে গিয়েছে। আগুন নেভার পরেও সেখানে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। জানি না ওই দেওয়াল ভেঙে পড়বে কি না।’’
কী ভাবে আগুন লাগল, স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি দমকল। তবে দমকলের হাওড়ার স্টেশন অফিসার বিশ্বজিৎ বারিক বলেন, ‘‘গ্যাস সিলিন্ডার লিক করে আগুন লাগেনি। কারণ, সিলিন্ডার ঠিক আছে। মনে হচ্ছে শর্ট সার্কিট থেকে এই দুর্ঘটনা। তবে ফরেন্সিক পরীক্ষার
পরেই আগুন লাগার ঠিক কারণ জানা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy