ফাইল চিত্র।
এত দিন রাজ্য পরিবহণ নিগম শহরে একচেটিয়া ভাবে এসি বাস চালাচ্ছিল। এ বার পথে নামল বেসরকারি মালিকানাধীন এসি বাস। সোমবার নিউ টাউনের সাপুরজি বাসস্ট্যান্ড থেকে সিএনজি চালিত ওই বাতানুকূল বাস পরিষেবার সূচনা করেন পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সাপুরজি বাসস্ট্যান্ড থেকে পাঁচ নম্বর সেক্টর, করুণাময়ী, সল্টলেক ঘুরে উল্টোডাঙার ১৫ নম্বর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে এই রুট। এর জন্য উল্টোডাঙার সরকারি বাসস্ট্যান্ড ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বাসমালিকদের।
বছর দুয়েক আগে বেসরকারি উদ্যোগে এসি বাস চালাতে তৎপর হয়েছিল বাসমালিকদের একটি সংগঠন ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’। সেই সময়েই সরকারি তরফে এ নিয়ে অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু মাঝে অতিমারি পরিস্থিতি এবং ডিজ়েলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে এই রুট চালু করা যায়নি। পরে ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধির জেরে উদ্ভূত সঙ্কট সামাল দিতে সিদ্ধান্ত হয়, সিএনজি চালিত বাস নামানো হবে। সাপুরজি-উল্টোডাঙা রুটে ২০টি বাস চালানোর অনুমতি দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে পাঁচটি বাস এসে পৌঁছনোয় তাদের দিয়েই আপাতত পরিষেবা শুরু হয়েছে। সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস সূত্রের খবর, সরকারি বাতানুকূল বাসে ভাড়ার হারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাঁদের বাসের ন্যূনতম ভাড়া ধার্য হয়েছে ২০ টাকা, সর্বাধিক ভাড়া ৩৫ টাকা। প্রতিটি বাতানুকূল বাস ৩১ আসনবিশিষ্ট।
উল্লেখ্য, প্রাক্-অতিমারি পরিস্থিতিতে কলকাতায় সরকারি বাসের আয়ের ৬০ শতাংশ টাকা আসত এসি বাস চালিয়ে। সেক্টর ফাইভের তথ্যপ্রযুক্তি তালুক ছাড়াও হাওড়া, বিমানবন্দর, বেলুড়, দক্ষিণেশ্বর-সহ একাধিক রুটে যাত্রীদের মধ্যে ভালই সাড়া ফেলেছিল সেই বাস। বস্তুত, এসি এবং ভলভো বাসের ভাড়া থেকে প্রাপ্ত আয়ের মাধ্যমেই তখন ভাঁড়ার ভরেছিল রাজ্য পরিবহণ নিগমের। এসি বাসে কিলোমিটার পিছু ৭০-৮০ টাকা আয় হওয়ায় তুলনামূলক ভাবে অলাভজনক রুটেও নন-এসি সরকারি বাস চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছিল।
দীর্ঘ অতিমারি পরিস্থিতিতে এসি বাস পরিষেবা কিছুটা ধাক্কা খেলেও এখন আবার তাতে যাত্রী বাড়ছে। এ দিন বেসরকারি উদ্যোগে সিএনজি চালিত বাতানুকূল বাস রুট চালু হওয়ার পরে পরিবহণ নিগমের অন্দরে অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে সরকারি বাসের একচেটিয়া পরিষেবার অধিকারে ধাক্কা লাগল। এ দিন ওই বাস পরিষেবার উদ্বোধন করে ফিরহাদ বলেন, ‘‘মেয়র এবং পরিবহণ মন্ত্রী হিসেবে কলকাতার বায়ুদূষণ এবং পরিবহণ, দু’টি বিষয় নিয়েই আমাকে ভাবতে হয়। বাসমালিকদের বার বার বলেছিলাম বিকল্প পন্থা বার করার জন্য। সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস এগিয়ে এসে সরকারকে সাহায্য করেছে।’’
মন্ত্রী জানান, চলতি মাসেই ২০০টি ইলেক্ট্রিক বাস এসে পৌঁছবে। সরকারি ট্রাম ডিপোগুলিতে গড়ে তোলা হবে সিএনজি-র চার্জিং স্টেশন। ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটো সাহা বলেন, ‘‘ভাড়া না বাড়িয়ে সরকারের ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে আমরা বিকল্প পথে পরিষেবা শুরু করলাম। সরকারের সাহায্য ছাড়া এই উদ্যোগ সম্ভব হত না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy